অনুৎপাদক সম্পদ কমাতে উদ্যোগ

নেটে বন্ধকী বাড়ি নিলাম করবে স্টেট ব্যাঙ্ক

যে পরিমাণ অনুৎপাদক সম্পদের বোঝা স্টেট ব্যাঙ্ক বা অন্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির ঘাড়ে চেপে রয়েছে, তার তুলনায় এই অঙ্ক হয়তো তেমন চোখ কপালে তোলা নয়। কিন্তু অনুৎপাদক সম্পদ কমিয়ে নিজেদের ব্যালান্স শিট ‘সাফ’ করতে স্টেট ব্যাঙ্ক কতখানি মরিয়া, তা তাদের এই উদ্যোগ থেকে স্পষ্ট বলে বলে মনে করছেন অনেকে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৫ ০২:৩৬
Share:

ঘাড়ে চেপে থাকা অনুৎপাদক সম্পদের বিপুল বোঝা কমাতে এ সপ্তাহের শেষেই ইন্টারনেটে বহু বন্ধকী বাড়ি নিলাম করবে স্টেট ব্যাঙ্ক।

Advertisement

ওই ই-নিলামে তোলা হবে দেশের দু’ডজন শহরে ছড়িয়ে থাকা প্রায় ৩০০টি সম্পত্তি। তার মধ্যে ফ্ল্যাট, অফিস যেমন রয়েছে, তেমনই আছে গুদামও। যার সম্মিলিত বাজারদর প্রায় ১,২৪০ কোটি টাকা। এর আগে নেটে এক লপ্তে এত টাকার নিলাম করেনি দেশের বৃহত্তম ব্যাঙ্কটি।

যে পরিমাণ অনুৎপাদক সম্পদের বোঝা স্টেট ব্যাঙ্ক বা অন্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির ঘাড়ে চেপে রয়েছে, তার তুলনায় এই অঙ্ক হয়তো তেমন চোখ কপালে তোলা নয়। কিন্তু অনুৎপাদক সম্পদ কমিয়ে নিজেদের ব্যালান্স শিট ‘সাফ’ করতে স্টেট ব্যাঙ্ক কতখানি মরিয়া, তা তাদের এই উদ্যোগ থেকে স্পষ্ট বলে বলে মনে করছেন অনেকে।

Advertisement

ব্যাঙ্কের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রবীণ কুমার মলহোত্র জানান, অনুৎপাদক সম্পদের পরিমাণ কমাতে তাঁরা মরিয়া। তাই ধার বাকি থাকা গ্রাহকদের ফোন করা থেকে শুরু করে বন্ধকী সম্পত্তি বিক্রি— কোনও চেষ্টাই বাকি রাখছেন না। আর তারই অঙ্গ হিসেবে বন্ধকী সম্পত্তি নেটে নিলামে তোলার এই উদ্যোগ।

গত দু’বছর ধরেই পাহাড়প্রমাণ অনুৎপাদক সম্পদের সমস্যা ভোগাচ্ছে স্টেট ব্যাঙ্ক-সহ বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে। বিশেষত তা প্রবল চাপ তৈরি করেছে সরকারি ও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির মুনাফার উপর। তার উপর এ বিষয়ে সম্প্রতি নিয়ম বদলেছে। তা কার্যকর হলে, আগামী দিনে অনুৎপাদক সম্পদ খাতে অনেক বেশি টাকা তুলে রাখতে হবে। তাই তার আগে সেই বোঝা কমাতে স্টেট ব্যাঙ্কের এই উদ্যোগ তাৎপর্যপূর্ণ।

কোনও ঋণ দিয়ে তার সুদ বা আসল কোনওটাই শোধ পাওয়া না-গেলে, একটি নির্দিষ্ট সময় পরে তাকে চিহ্নিত করা হয় অনুৎপাদক সম্পদ হিসেবে। গত কয়েক বছরে দেশে শিল্পের হাল খারাপ হওয়ায় ব্যাঙ্কের ধার শোধ করতে পারেনি বহু সংস্থা। তার উপর অনেকে মনে করেন, দেশে দেউলিয়া ঘোষণার আইনি পথ সরল না-হওয়ায়, ব্যাঙ্কগুলির পক্ষে আরও কঠিন হয় ধারের টাকা উদ্ধার করা। ফলে সব মিলিয়ে, গত আর্থিক বছরের শেষ দিকে প্রায় প্রতিটি ব্যাঙ্কেরই অনুৎপাদক সম্পদ বেড়েছিল। স্টেট ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রেই তা দাঁড়িয়েছিল প্রায় ৬৮ হাজার কোটি টাকা।

তখন কয়েক হাজার কোটি টাকার অনুৎপাদক সম্পদ অ্যাসেট রিকনস্ট্রাকশন কোম্পানির (এআরসি) কাছে বিক্রি করেছিল ব্যাঙ্কটি। উল্লেখ্য, অনুৎপাদক সম্পদ কমাতে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও অন্য কিছু সংস্থা মিলে দেশে ১৪টি এআরসি গঠন করেছে। এই সম্পদ পুনর্গঠন সংস্থার কাছে অনুৎপাদক সম্পদ বিক্রি করে তারা। সাধারণত মোট মূল্যের থেকে কম দামে। গত অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাসিকে স্টেট ব্যাঙ্কই যেমন জানিয়েছিল, এআরসি-র কাছে ৫ হাজার কোটির অনুৎপাদক সম্পদ বিক্রি করবে তারা।

দেশের বৃহত্তম ব্যাঙ্কের প্রথম মহিলা কর্ণধার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরে অরুন্ধতী ভট্টাচার্যও বলেছিলেন, ‘‘আমার প্রথম কাজ অনুৎপাদক সম্পদ কমানো এবং গ্রাহক পরিষেবার উন্নতি।’’ সেই লক্ষ্যের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে এ বার নেটে বন্ধকী সম্পত্তি নিলামের পথেও লম্বা পা ফেলছে স্টেট ব্যাঙ্ক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন