রাজীব বি লাল ও চন্দ্রশেখর ঘোষ।
চালু হতে চলেছে আরও একটি কলকাতা ভিত্তিক বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক। নির্বাচন কমিশন নতুন ব্যাঙ্ক খোলার জন্য লাইসেন্স মঞ্জুর করতে আরবিআইকে সবুজ সঙ্কেত দেওয়ার এক দিনের মধ্যেই মঙ্গলবার লাইসেন্স পেল রাজ্যের ক্ষুদ্র-ঋণ সংস্থা বন্ধন। একইসঙ্গে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক পরিকাঠামো উন্নয়ন সংক্রান্ত ঋণদাতা সংস্থা আইডিএফসিকে ব্যাঙ্ক লাইসেন্স দেওয়ার কথা ঘোষণা করে। এই নীতিগত সম্মতি পাওয়ার পর আগামী ১৮ মাসের মধ্যে তাদের ব্যাঙ্কিং পরিষেবা চালু করতে বলেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। দেশের মধ্যে বন্ধনই প্রথম ক্ষুদ্র-ঋণ সংস্থা, যারা ব্যাঙ্ক চালু করার অনুমতি পেল।
লোকসভা নির্বাচন নতুন ব্যাঙ্ক লাইসেন্স মঞ্জুর করার ব্যাপারে কোনও বাধা হবে না বলে মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে ২৫টি বেসরকারি সংস্থা ব্যাঙ্ক খোলার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে। আপাতত তার মধ্যে দুটি সংস্থা লাইসেন্স পেল।
লাইসেন্স পাওয়ার খবর তাঁর কাছে পৌঁছনোর পরেই বন্ধনের চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর ঘোষ জানান, “গত ১৩ বছর ধরে ২২টি রাজ্যে ক্ষুদ্র-ঋণ বিলি করছি। আমাদের ৫৫ লক্ষ গ্রাহকের প্রায় সকলেই গ্রামের গরিব মানুষ। ব্যাঙ্ক খোলার অনুমতি পাওয়ায় তাঁদের আর্থিক অবস্থা ফেরানোর ব্যাপারে আরও কার্যকরী ভূমিকা বন্ধন পালন করতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।”
বর্তমানে সারা দেশে বন্ধনের মোট ২০১৬টি শাখা চালু আছে। এর অধিকাংশকেই তাঁদের নতুন ব্যাঙ্কের শাখা হিসাবে গড়ে তোলা হবে বলে জানান চন্দ্রশেখরবাবু। গত আর্থিক বছরে অর্থাৎ ২০১৩-১৪ সালে বন্ধন ৯১১৯ কোটি টাকার ঋণ বণ্টন করেছে বলে তাঁর দাবি।
পাশাপাশি, আইডিএফসি চেয়ারম্যান রাজীব বি লাল জানান, “নতুন দায়িত্ব পেয়ে বাড়তি পরিশ্রমের জন্য আমরা প্রস্তুত এবং এখন থেকেই তা শুরু হবে। আমরা বিশ্বব্যাপী পরিষেবার জন্যই আবেদন করেছিলাম। সে ভাবেই এগিয়ে যেতে চাই।”
এ দিকে টানা বেড়ে চলেছে শেয়ার বাজার, মঙ্গলবার যার পিছনে অন্যতম অবদান ছিল ব্যাঙ্কিং শিল্পের। দু’টি সংস্থা এ দিনই ব্যাঙ্ক খোলার অনুমতি পাওয়ায় সাধারণ ভাবে এই ক্ষেত্রের শেয়ার দর বেড়েছে, যার জেরে সেনসেক্স এক ধাক্কায় বেড়ে গেল ১০৫.০৫ পয়েন্ট। এর ফলে ফের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করে এই দিন বাজার বন্ধের সময়ে সেনসেক্স দাঁড়াল ২২,৫৫১.৪৯ অঙ্কে। স্টেট ব্যাঙ্কের শেয়ারের দাম এই দিন বেড়ে গিয়েছে ২.০৬%। আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের ১.৫৩%, এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের ১.০৯%। ব্যাঙ্কিং লাইসেন্সের জন্য আবেদনকারী অন্য সংস্থাগুলির দরও সার্বিক ভাবে বেড়েছে ১২.৫%
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের শেয়ার বাজারগুলিও এই দিন অধিকাংশই চাঙ্গা ছিল। যার প্রভাব ভারতে পড়েছে বলে বাজার সূত্রের খবর। আমেরিকায় শিল্পোৎপাদনের হার বৃদ্ধি পাওয়ার খবর বিশ্বের শেয়ার বাজারগুলিকে উৎসাহিত করেছে। তবে শেয়ার সূচকের উত্থানের মূলে এ দিনও ছিল সেই বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির বিনিয়োগ। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের খবর, গত কালই ওই সব সংস্থা ভারতের বাজারে ৩৮৫.৬৬ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছে।