ব্রিটিশ সরকারের সহায়তায় তিন পুরসভা এলাকায় বাড়ির ছাদে গ্রিড সংযুক্ত সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা গড়ায় উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য। আপাতত এ জন্য নীতি-নির্দেশিকা তৈরির কাজ চলছে। মাস দুয়েকের মধ্যেই তা চূড়ান্ত হওয়ার কথা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নির্দেশিকা কার্যকর হলে কলকাতা, রাজারহাট ও সল্টলেক পুর এলাকায় নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। গোড়ার দিকেই টেকনিশিয়ানের চাহিদা বাড়বে অন্তত চার গুণ।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ইতিমধ্যেই এই ভাবে বাড়ির ছাদে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু রয়েছে। এ ভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে উৎসাহ দিতে আর্থিক সুবিধা দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে। তা চালু হলে দক্ষ কর্মীর চাহিদা অনেকগুণ বাড়বে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট মহলের। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি দিল্লি, অন্ধ্রপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, মধ্যপ্রদেশেও বাড়ির ছাদে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সংক্রান্ত নীতি তৈরির কাজে সাহায্য করছে ব্রিটিশ সরকার। কেন্দ্রের হিসেবে সারা দেশে এখন প্রায় ৫৬ হাজার টেকনিশিয়ান রয়েছেন। কিন্তু আগামী দিনে প্রয়োজন হবে এর প্রায় দশ গুণ। পশ্চিমবঙ্গে এখন এ ধরনের টেকনিশিয়ান রয়েছেন শ’পাঁচেক। বছর খানেকের মধ্যেই প্রয়োজন হবে প্রায় চার হাজার।
এ রাজ্যে ওই নীতি-নির্দেশিকা তৈরির জন্য বিদ্যুৎ দফতর ও কলকাতা পুরসভাকে সাহায্য করার কথা আগেই জানিয়ছিল ব্রিটিশ সরকার। সঙ্গে রয়েছে অপ্রচলিত বিদ্যুৎ শক্তি ক্ষেত্রে স্বীকৃত বিশেষজ্ঞদের সংগঠন অ্যাশডেন ইন্ডিয়া রিনিউয়েবল এনার্জি কালেক্টিভ-ও। ওই সংগঠনটিরই চেয়ারম্যান শক্তিপদ গণচৌধুরি জানান, এ বার এই কর্মসূচির আওতায় রাজার -হাট এবং সল্টলেক পুর এলাকাকেও আনতে চায় রাজ্য বিদ্যুৎ দফতর।
শক্তিপদবাবু জানিয়েছেন, চলতি মাসের শেষেই তাঁরা খসড়া নীতি জমা দেবেন। এবং তাঁর আশা, সেপ্টেম্বরের মধ্যেই বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে যাবে। নীতি-নির্দেশিকা তৈরি হলে এবং আর্থিক সুবিধা মিললে কর্মসংস্থানের সুযোগ অনেকটা বাড়বে বলেই তাঁর দাবি।
সারা দেশে এ ধরনের টেকনিশিয়ানের চাহিদার কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এই প্রশিক্ষণের দায়িত্ব পেয়েছে অর্ক রিনিউয়েবল এনার্জি কলেজ। কলেজের চেয়ারম্যান শান্তিপদবাবু জানিয়েছেন, তাঁরা ছ’টি ব্যাচে ১৫০ জনকে এই প্রশিক্ষণ দেবেন।
শান্তিপদবাবু প্রসঙ্গত বলেন, তাঁর হিসেবে, এখন কলকাতা, রাজারহাট বা সল্টলেকে বাড়ির ছাদে প্রায় এক মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ তৈরির ব্যবস্থা থাকলেও কার্যত সেগুলি মূলত সরকারি আর্থিক সাহায্যে হয়েছে। এ ক্ষেত্রে এত দিন কোনও নীতি ছিল না। এ বার সুষ্ঠু নীতি-নির্দেশিকা তৈরি হলে সার্বিক ভাবেই এই ব্যবস্থা অনেক বেশি আকর্ষণীয় হবে বলে তাঁর দাবি। সে ক্ষেত্রে এ ধরনের ব্যবস্থা তৈরি ও তা দেখভালের জন্য বছরে কয়েক কোটি টাকার ব্যবসাও তৈরি হবে বলে তিনি মনে করছেন। আর সে জন্যই প্রয়োজন পড়বে আরও বেশি দক্ষ কর্মীর।