রাজকোষে আসবে প্রায় ২২,৬০০ কোটি

সূচক পড়লেও ভাল সাড়া কোল ইন্ডিয়ার শেয়ারে

হুড়মুড়িয়ে ৩০ হাজারের দোরগোড়ায় উঠে আসা সেনসেক্সে বড়সড় সংশোধন যে স্রেফ সময়ের অপেক্ষা, কয়েক দিন ধরেই তা বলছিলেন বিশেষজ্ঞরা। শুক্রবার সেই পূর্বাভাস সত্যি করে এক ধাক্কায় প্রায় ৫০০ পয়েন্ট খোয়ালো সেনসেক্স। তবে বাজারের এই পতনের দিনেও ভাল সাড়া মিলল কোল ইন্ডিয়ার শেয়ারে। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির ১০% শেয়ার বিক্রি করে কেন্দ্রের ভাঁড়ারে আসছে প্রায় ২২,৬০০ কোটি টাকা। যা এখনও পর্যন্ত বৃহত্তম বিলগ্নিকরণ। কোল ইন্ডিয়ায় হাতে থাকা ৮৯.৬৫% অংশীদারির ১০% শেয়ার বেচার জন্য এ দিন বাজারে এনেছিল কেন্দ্র। বিক্রি করা হচ্ছে ৬৩.১৬ কোটি শেয়ার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:২৪
Share:

হুড়মুড়িয়ে ৩০ হাজারের দোরগোড়ায় উঠে আসা সেনসেক্সে বড়সড় সংশোধন যে স্রেফ সময়ের অপেক্ষা, কয়েক দিন ধরেই তা বলছিলেন বিশেষজ্ঞরা। শুক্রবার সেই পূর্বাভাস সত্যি করে এক ধাক্কায় প্রায় ৫০০ পয়েন্ট খোয়ালো সেনসেক্স। তবে বাজারের এই পতনের দিনেও ভাল সাড়া মিলল কোল ইন্ডিয়ার শেয়ারে। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির ১০% শেয়ার বিক্রি করে কেন্দ্রের ভাঁড়ারে আসছে প্রায় ২২,৬০০ কোটি টাকা। যা এখনও পর্যন্ত বৃহত্তম বিলগ্নিকরণ।

Advertisement

কোল ইন্ডিয়ায় হাতে থাকা ৮৯.৬৫% অংশীদারির ১০% শেয়ার বেচার জন্য এ দিন বাজারে এনেছিল কেন্দ্র। বিক্রি করা হচ্ছে ৬৩.১৬ কোটি শেয়ার। দিনের শেষে দেখা গিয়েছে, শেয়ার কেনার জন্য আবেদনপত্র জমা পড়েছে তার মোট সংখ্যার তুলনায় বেশি (১.০৭ গুণ)। প্রতি শেয়ারের ন্যূনতম দাম নির্ধারিত করা ছিল ৩৫৮ টাকা। দিনের শেষে ঠিক হয়েছে যে, চূড়ান্ত দরও হবে ওই অঙ্কের আশেপাশে। ফলে এই বিলগ্নিকরণ থেকে কেন্দ্রের কোষাগারে আসবে প্রায় ২২,৬০০ কোটি টাকা।

এর আগে এ দেশে বাজারে শেয়ার ছেড়ে এত টাকা ঘরে তুলতে পারেনি কোনও সংস্থা। কোনও বিলগ্নিকরণ থেকেও এক লপ্তে এত টাকা কেন্দ্রের হাতে আসেনি। ২০১০ সালে কোল ইন্ডিয়ারই শেয়ার প্রথম বার বিক্রি করে ১৫ হাজার কোটি টাকা পেয়েছিল কেন্দ্র। এত দিন সেটিই ছিল বিলগ্নিকরণ থেকে পাওয়া সর্ব্বোচ্চ অঙ্ক। সেই অর্থে এ দিন নিজেদেরই রেকর্ড ভাঙল সংস্থাটি। যদিও এই বিলগ্নিকরণের প্রতিবাদ করেছে কর্মী সংগঠনগুলি।

Advertisement

কোল ইন্ডিয়ার শেয়ার কিনতে এ দিন বিপুল আগ্রহ দেখিয়েছে জীবনবিমা নিগম। আগ্রহ দেখা গিয়েছে বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলির মধ্যেও। সেই তুলনায় বরং তেমন উৎসাহ দেখাননি সাধারণ ক্ষুদ্র লগ্নিকারীরা। তাঁদের জন্য নির্দিষ্ট করে রাখা ১২.৬৩ কোটি শেয়ারের মাত্র ৪৪% কিনতে আবেদন জমা পড়েছে। যদিও বড় লগ্নিকারীদের তুলনায় ৫% কম দামে তা কিনতে পারবেন তাঁরা।

অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি যখন রাজকোষ ঘাটতিকে লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে বেঁধে রাখতে হিমসিম খাচ্ছেন, তখন তাঁকে কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে বিলগ্নিকরণের এই টাকা। কারণ, গত বাজেটে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার শেয়ার বেচে ৪৩,৪২৫ কোটি টাকা পাওয়ার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছিল। শুধু কোল ইন্ডিয়াই পুষিয়ে দিল তার অর্ধেক। শুধু তা-ই নয়, এই সফল বিলগ্নিকরণে উৎসাহিত হয়ে ওএনজিসি, আইওসি, এনএমডিসি, ভেল, নালকো-র মতো রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার শেয়ার বেচতেও কেন্দ্র দ্রুত পা চালাবে বলে অনেকের মত।

কোল ইন্ডিয়া ও কেন্দ্রের জন্য শুক্রবারের লেনদেন স্বস্তি বয়ে আনলেও, দিন ভাল যায়নি শেয়ার বাজারের। গত ১০ দিনে সেনসেক্স উঠেছিল ২,৩৪৬ পয়েন্ট। ৩০ হাজার ছুঁইছুঁই বাজারে মুনাফার কড়ি ঘরে তুলতে শুক্রবার শেয়ার বিক্রির ধুম পড়ে দেশি-বিদেশি লগ্নিকারীদের মধ্যে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উচ্চতায় এমন সংশোধন স্বাভাবিক। সূচক আরও পড়তে পারে। তবে তা দীর্ঘ মেয়াদে বাজারকে আরও মজবুত করবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন