মার্কিন অর্থনীতির হাল ফেরা এবং সে দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক, ফেডারেল রিজার্ভের সেপ্টেম্বরেই সুদ না-বাড়ানোর ইঙ্গিত— এই জোড়া সুখবরের জেরে শুক্রবারও ১৬১.১৯ পয়েন্ট উঠল সেনসেক্স। ঠিক যে কারণে সব পতন ঝেড়ে ফেলে বৃহস্পতিবার এক লাফে ৫১৬.৫৩ পয়েন্ট উঠেছিল সূচকটি। ফলে স্রেফ দু’দিনেই তার মোট উত্থান দাঁড়াল প্রায় ৬৭৮ পয়েন্ট। এ দিন বাজার থিতু হয় ২৬,৩৯২.৩৮ অঙ্কে। তবে ডলারের সাপেক্ষে টাকার দাম পড়েছে ১০ পয়সা। এক ডলার হয়েছে ৬৬.১৪ টাকা।
এত দিন ভারতের বাজারের গতিপ্রকৃতি নির্ধারিত হচ্ছিল চিনের আর্থিক অবস্থার দিকে লক্ষ্য রেখে। এখন হচ্ছে আমেরিকার পরিস্থিতির নিরিখে। শেয়ার বাজার সূত্রের খবর, চলতি বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে (এপ্রিল থেকে জুন) মার্কিন মুলুকের প্রত্যাশা ছাপানো আর্থিক বৃদ্ধির হার (৩.৭%) শেয়ার কিনতে উৎসাহী করছে বিশ্বের বিভিন্ন শেয়ার বাজারের লগ্নিকারীদের। যার জের বৃহস্পতিবারের মতো শুক্রবারও পড়েছে ভারতে।
এ দিকে, ব্যাঙ্কগুলির পক্ষে অতি স্বল্প মেয়াদী ঋণ পাওয়া যাতে সহজে এবং কম সুদে হয়, তা নিশ্চিত করতে এই দিনই চিন ‘ইন্টার ব্যাঙ্ক মানি মার্কেট’-এ ৬,০০০ কোটি ইউয়ান (৯৩৯ কোটি ডলার) ছেড়েছে। ইন্টার ব্যাঙ্ক মানি মার্কেট থেকেই চিনের ব্যাঙ্কগুলি অতি অল্প সময়ের (সাধারণত ১-৭ দিন) জন্য ঋণ নেয়। ওই বাজারে অতিরিক্ত অর্থ আসায় ব্যাঙ্কগুলির পক্ষে আগের থেকে কম সুদে ঋণ পাওয়ার পথ প্রশস্ত হবে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। চিনের এই পদক্ষেপও এ দিন বিশ্ব জুড়ে বেশির ভাগ শেয়ার বাজারকেই চাঙ্গা রাখে।
অবশ্য ভারতে এই উত্থান কতটা স্থায়ী হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে বিশেষজ্ঞদের অধিকাংশের মনেই। যার কারণ, বিশ্ব জুড়ে শেয়ার বাজারে অনিশ্চয়তা। যা তৈরি হয়েছে মূলত চিনের আর্থিক সমস্যাকে কেন্দ্র করে। তবে অনেকে আবার বলছেন, মার্কিন অর্থনীতির হাল ফেরা ও সঙ্কট সামলাতে চিনের পদক্ষেপের ফলে এ দেশের বাজারের হাল ফিরতে বেশি সময় না-ও লাগতে পারে।
যদিও বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি এখনও ভারতের বাজারে টানা শেয়ার বেচে চলেছে। সংবাদ সংস্থার খবর, গত প্রায় পাঁচ দিনেই প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে তারা। উল্টো দিকে, ভারতীয় আর্থিক সংস্থাগুলি কিন্তু প্রায় প্রতি দিনই মোট অঙ্কের শেয়ার কিনছে বলে শেয়ার বাজারমহল সূত্রে খবর।