হাতে-ঠেলা গিয়ারের ঝক্কিহীন গাড়ি এ বার কম দামেও

তুলনায় কম দামি গাড়িতেও এ বার চালককে হাতে গিয়ার ঠেলা থেকে অব্যাহতি দিল মারুতি-সুজুকি। নতুন ‘অল্টো-কে১০’ গাড়িটিতে এই স্বয়ংক্রিয় গিয়ার বদলের ব্যবস্থা রেখেছে তারা। কিছু দিন আগেও যা সহজে পাওয়া যেত না, তা সে যে দামের গাড়িই হোক না কেন। গাড়ি সংস্থাগুলির ধারণা ছিল, হাতে ঠেলা গিয়ার তুলে দিলে যে-দাম বাড়বে তাতে খদ্দের পাওয়া যাবে না। কিন্তু শহরের যানজটের গুঁতোয় স্বয়ংক্রিয় গিয়ার ব্যবস্থা (অটো গিয়ার শিফট বা এজিএস) রয়েছে এমন গাড়ির বাজার ক্রমশ বাড়ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৪ ০২:২৪
Share:

শহরে নয়া ‘অল্টো-কে১০’। প্রদর্শনে মারুতি-সুজুকি ইন্ডিয়ার দুই কর্তা মোহিত জিন্দল এবং এস এন বর্মন (বাঁ দিক থেকে)। মঙ্গলবার।

তুলনায় কম দামি গাড়িতেও এ বার চালককে হাতে গিয়ার ঠেলা থেকে অব্যাহতি দিল মারুতি-সুজুকি। নতুন ‘অল্টো-কে১০’ গাড়িটিতে এই স্বয়ংক্রিয় গিয়ার বদলের ব্যবস্থা রেখেছে তারা। কিছু দিন আগেও যা সহজে পাওয়া যেত না, তা সে যে দামের গাড়িই হোক না কেন।

Advertisement

গাড়ি সংস্থাগুলির ধারণা ছিল, হাতে ঠেলা গিয়ার তুলে দিলে যে-দাম বাড়বে তাতে খদ্দের পাওয়া যাবে না। কিন্তু শহরের যানজটের গুঁতোয় স্বয়ংক্রিয় গিয়ার ব্যবস্থা (অটো গিয়ার শিফট বা এজিএস) রয়েছে এমন গাড়ির বাজার ক্রমশ বাড়ছে। আর সেই চাহিদায় ভর করেই ‘সেলেরিও’-র পরে তুলনায় কম দামি গাড়ির বাজারেও এ ধরনের প্রযুক্তি আনল মারুতি-সুজুকি ইন্ডিয়া (এমএসআই)।

প্রথাগত (ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন) ‘ক্লাচ’ ব্যবহার করে হাতে-ঠেলা গিয়ার বদলের ঝামেলা এড়াতে পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় (অটোম্যাটিক ট্রান্সমিশন) ব্যবস্থার গাড়ি বিদেশে চলে। ভারতের মতো দেশেও যেখানে রাস্তা অপিরসর, নিত্য যানজট হয়, সেখানে বারবার ‘ক্লাচ’ ব্যবহার করে গাড়ির গতির সঙ্গে গিয়ার বদলানো রীতিমতো ঝঞ্ঝাটের। এ দেশেও তাই মারুতি-সুজুকি-সহ কিছু সংস্থা পুরো -পুরি স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার গাড়ি এনেছিল। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সমস্যা মূলত ৪টি।

Advertisement

• উন্নত প্রযুক্তির জন্য প্রথাগত ব্যবস্থার গাড়ির চেয়ে পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় গাড়ির দাম গড়ে প্রায় এক লক্ষ টাকা বেশি পড়ে।

• একই পথ পাড়ি দিতে স্বয়ংক্রিয় গাড়িটিতে তেলের খরচ বেশি।

• রক্ষণাবেক্ষণের খরচও বেশি।

• প্রযুক্তি আমদানি করতে হয় বিদেশ থেকে।

বস্তুত, গোটা দেশে যত যাত্রী গাড়ি তৈরি হয়, তার ৫ শতাংশেরও কম এ ধরনের গাড়ি। এমএসআই-ও ‘ওয়াগন-আর’ বা ‘রিৎজ’-এ এই প্রযুক্তি আনলেও শেষ পর্যন্ত তা বন্ধ করে দেয়। তাদের নতুন সেডান সিয়াজ-এ অবশ্য এই প্রযুক্তি রয়েছে।

খরচের প্রশ্নে ক্রেতার সাধ ও সাধ্য পূরণের তাগিদ থেকেই ‘অটোম্যাটিক ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন’ বা ‘অটো গিয়ার শিফট’ (এজিএস) প্রযুক্তির উদ্ভব। এ ক্ষেত্রে প্রথাগত ব্যবস্থার পাশাপাশি ইচ্ছে মতো স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতেও গিয়ার বদলানোর সুবিধা মেলে। এতে হাতে ঠেলে গিয়ার বদলাতে হয় না। খরচের প্রশ্নেও পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার চেয়ে এজিএস প্রযুক্তি নির্ভর গাড়ি কিছুটা এগিয়ে। হাতে-ঠেলা গিয়ারের প্রথাগত গাড়ির চেয়ে এজিএস গাড়ির দাম গড়ে ৪০-৫০ হাজার টাকা বেশি।

এমএসআই সম্প্রতি ‘সেলেরিও’ গাড়িটিতে প্রথম এই এইজিএস প্রযুক্তি এনেছিল এমএসআই। সংস্থার অন্যতম ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এন বর্মন মঙ্গলবার কলকাতায় নতুন অল্টো-র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানান, এখনও পর্যন্ত যত সেলেরিও বিক্রি হয়েছে, তার অন্তত ৩৫% গাড়িতে এই সুবিধা রয়েছে। সংস্থা সূত্রের খবর, কলকাতায় এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫০০টি এজিএস প্রযুক্তির সেলেরিও বিক্রি হয়েছে।

এ বার কম দামি গাড়ি অল্টো-তেও এই সুবিধা আনলেন তাঁরা। তাঁদের আশা, দেশের রাস্তায় আগামী দিনে এই ধরনের গাড়ির চাহিদা আরও বাড়বে। এবং ভারতের মতো দামের দিক দিয়ে স্পর্শকাতর বাজারে কম দামি গাড়িতেও এই ব্যবস্থা ভাল সাড়া পাবে। ভবিষ্যতে তাঁদের অন্য গাড়িগুলিতেও এই সুবিধা মিলতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন তিনি। কলকাতায় পেট্রোলচালিত নতুন অল্টো-কে১০-এর দাম পড়ছে ৩.২৫ লক্ষ টাকা থেকে ৩.৭৭ লক্ষ টাকার মতো। এজিএস সুবিধা-সহ গাড়িটির দাম পড়বে ৪.০২ লক্ষ টাকা।

সংস্থার কর্তারা এ দিনও জানিয়েছেন, আগামী আর্থিক বছরেই তাঁদের নতুন ‘কমপ্যাক্ট এসইউভি’ গাড়িটি বাজারে আসবে। উল্লেখ্য, গাড়ি বাজারের প্রায় ২০% দখল করে রয়েছে এ ধরনের গাড়ি। কিন্তু দেশের বৃহত্তম গাড়ি সংস্থা এমএসআই-এর ভাঁড়ারে এখনও পর্যন্ত এমন কোনও গাড়ি না-থাকায় প্রতিযোগিতার বাজারে ফোর্ড বা রেনোর-র কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement