জেল ছাড়তে পারবেন আরও দুই ডিরেক্টর

১০ হাজার কোটি জমার শর্তে সুব্রতর জামিনে রাজি আদালত

১০ হাজার কোটি টাকা জমা দিলেই হাতে হাতে জামিন। সহারা কর্তা সুব্রত রায় এবং গোষ্ঠীর অপর দুই ডিরেক্টরের অন্তর্বর্তী জামিনের জন্য বুধবার তার রায়ে এই শর্তই বেঁধে দিল সুপ্রিম কোর্ট। জামিন মঞ্জুরের জন্য এটাই বিশ্বের ইতিহাসে সম্ভবত আদালতের দাবি করা সর্বোচ্চ অঙ্ক বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন আইনি বিশেষজ্ঞরা। নজির হিসেবে তাঁরা উল্লেখ করেছেন, ইউক্রেনের শিল্পপতি দিমিত্রো ফির্তাশের কথা। অস্ট্রিয়ায় দায়ের হওয়া মামলায় চলতি মাসেই ১৭.৪০ কোটি ডলার বা ১,০৫২.৭ কোটি টাকার বিনিময়ে জামিন পান তিনি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৪ ০২:০৯
Share:

১০ হাজার কোটি টাকা জমা দিলেই হাতে হাতে জামিন। সহারা কর্তা সুব্রত রায় এবং গোষ্ঠীর অপর দুই ডিরেক্টরের অন্তর্বর্তী জামিনের জন্য বুধবার তার রায়ে এই শর্তই বেঁধে দিল সুপ্রিম কোর্ট।

Advertisement

জামিন মঞ্জুরের জন্য এটাই বিশ্বের ইতিহাসে সম্ভবত আদালতের দাবি করা সর্বোচ্চ অঙ্ক বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন আইনি বিশেষজ্ঞরা। নজির হিসেবে তাঁরা উল্লেখ করেছেন, ইউক্রেনের শিল্পপতি দিমিত্রো ফির্তাশের কথা। অস্ট্রিয়ায় দায়ের হওয়া মামলায় চলতি মাসেই ১৭.৪০ কোটি ডলার বা ১,০৫২.৭ কোটি টাকার বিনিময়ে জামিন পান তিনি। বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বেআইনি লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এ ছাড়া ওহায়োর আদালত বেআইনি গণিকালয় চালানোয় জনৈক মহিলার কাছ থেকে ১০০ কোটি ডলার বা ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি জামিন বাবদ দাবি করে।

এ দিন বিচারপতি কে এস রাধাকৃষ্ণন ও জে এস খেহরকে নিয়ে গড়া ডিভিশন বেঞ্চ এ দিনই অবশ্য সহারা গোষ্ঠীকে ওই অর্থ সংগ্রহের সুযোগ করে দিতে তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লেনদেন চালু করতে দিতে সম্মত হয়েছে। এত দিন ওই সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সিল করে দেওয়া হয়েছিল। আগামী কাল ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত বিশদ তথ্য জানাতে হবে সহারা গোষ্ঠীকে। তার পর সেগুলি চালু করার রায় দেবে আদালত।

Advertisement

সহারা কর্তা ৬৫ বছর বয়স্ক সুব্রত রায় ও গোষ্ঠীর অপর ২ ডিরেক্টর রবিশঙ্কর দুবে ও অশোক রায়-চৌধুরী গত ৪ মার্চ থেকেই বিচার-বিভাগীয় হেফাজতে তিহাড় জেলে রয়েছেন। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনে লগ্নিকারীদের ২০ হাজার কোটি টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য এখনও সেবি-র কাছে জমা দেননি তাঁরা।

এ দিনের রায়ে ৫ হাজার কোটি টাকা শীর্ষ আদালতে জমা দিতে বলা হয়েছে। বাকি অর্থ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের গ্যারান্টি বাবদ জমা দিতে হবে সেবি-র কাছে। তার পরে গোষ্ঠীকে সংগ্রহ করতে হবে বাকি টাকা।

মঙ্গলবার লগ্নিকারীদের টাকা ফেরানোর লক্ষ্যে সেবির কাছে ২০,০০০ কোটি জমা দেওয়ার নতুন প্রস্তাব অবশ্য পেশ করে সহারা গোষ্ঠী। যার লক্ষ্য ছিল সুব্রতবাবুর মুক্তি নিশ্চিত করা। ডিভিশন বেঞ্চ অবশ্য এই প্রস্তাব শুনতে চায়নি। বেঞ্চের দাবি, বুধবার বিধিসম্মত ভাবে তা রেজিস্ট্রি করে আদালতে জমা দিতে হবে। আর তার পরই প্রস্তাবটি বিবেচনা করে দেখবে তারা। সহারার নতুন প্রস্তাবে ২০১৫-র ৩১ মার্চের মধ্যেই ২০,০০০ হাজার কোটি টাকা সেবির কাছে জমা করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টকে আশ্বস্ত করে সেখানে বলা হয়েছে যে, প্রস্তাব মঞ্জুর হওয়ার পর প্রথম তিনটি কাজের দিনের মধ্যেই সংস্থা জমা করবে ২,৫০০ কোটি। এর পর তিনটি কিস্তিতে দেওয়া হবে ৩,৫০০ কোটি করে। ওই তিন কিস্তির দিনও নির্দিষ্ট করে দিয়েছে তারা। ৩০ জুন, ৩০ সেপ্টেম্বর ও ৩১ ডিসেম্বর। এর পর বাদবাকি ৭,০০০ কোটি জমা দেওয়া হবে ২০১৫-র ৩১ মার্চের মধ্যেই।

প্রসঙ্গত, এর আগের বারেও এ ভাবে কিস্তিতে টাকা জমা দেওয়ার একটি প্রস্তাব পেশ করেছিল সংস্থা। সেখানে তারা সময় নিয়েছিল ২০১৫-র জুলাই পর্যন্ত। কিন্তু সেবি তখন অভিযোগ তোলে যে, ওই প্রস্তাবে সহারার দাখিল করা হিসাব অনুযায়ী টাকার অঙ্ক ১৭,৪০০ কোটি, যা পাওনার তুলনায় অনেক কম। প্রস্তাবটি পত্রপাঠ খারিজ করে দেয় আদালত। এ বার অবশ্য টাকা জমার জন্য নতুন প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি দিতে রাজি থাকার কথাও জানিয়েছে সহারা গোষ্ঠী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন