ক্লাবে সাঁতার কাটতে গিয়ে মৃত্যু বৃদ্ধের

পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার বেলা ১২টা নাগাদ সত্যব্রতবাবুর গাড়িচালক ওই ক্লাবের কর্মীদের জানান, সকাল সাড়ে ন’টায় সত্যব্রতবাবু ক্লাবে ঢুকেছেন। কিন্তু ১২টা বেজে গেলেও আসেননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৬:১৫
Share:

মর্মান্তিক: রবীন্দ্র সরোবরের এই অংশেই ডুবে যান সত্যব্রত সেন(ইনসেটে)। মঙ্গলবার। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

সাঁতার কাটতে এসে রবীন্দ্র সরোবরের অ্যান্ডারসন ক্লাবের সুইমিং পুলে নেমে ডুবে মৃত্যু হল এক বৃদ্ধের। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সত্যব্রত সেন (৭৮)। বাড়ি গড়িয়াহাটের ডোভার টেরেসে। তিনি অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার বেলা ১২টা নাগাদ সত্যব্রতবাবুর গাড়িচালক ওই ক্লাবের কর্মীদের জানান, সকাল সাড়ে ন’টায় সত্যব্রতবাবু ক্লাবে ঢুকেছেন। কিন্তু ১২টা বেজে গেলেও আসেননি। চালকের কাছ থেকে খবর পেয়েই কর্তৃপক্ষ ওই ক্লাবের পোশাক পরিবর্তনের ঘরে যান। তাঁরা দেখেন, সেখানে সত্যব্রতবাবুর ছাড়া পোশাক পড়ে রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা দৌড়ন সুইমিং পুলের কাছে। কিন্তু সেখানে গিয়ে খোঁজাখুঁজি করেও সত্যব্রতবাবুকে পাননি ক্লাবের লোকজন। এর পরেই তাঁরা ফোন করে খবর দেন রবীন্দ্র সরোবর থানায়। ঘটনাস্থলে চলে আসে পুলিশ ও কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশি চালাতেই সত্যব্রতবাবুর দেহ মেলে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েই ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। সত্যব্রতবাবুর বাড়ির লোকজন অবশ্য এ বিষয়ে কোনও কথা বলতে চাননি।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের অগস্টে অনেকটা একই ভাবে কলেজ স্কোয়ারের সুইমিং পুলে নেমে মৃত্যু হয়েছিল সাঁতারের প্রশিক্ষক, কাজল দত্ত নামে এক প্রৌঢ়ের। পরে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়।

Advertisement

প্রশ্ন উঠেছে, এক জন সাড়ে ন’টায় জলে নেমে যখন ১২টাতেও উঠলেন না, তখনও ক্লাবের কর্মীরা তা দেখলেন না?

‘ইন্ডিয়ান লাইফ সেভিং সোসাইটি’ বা অ্যান্ডারসন ক্লাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অমিত বসু জানান, এ দিন সকাল সওয়া দশটা নাগাদ ক্লাবের খাতায় সই করে পোশাক পরিবর্তন করতে ঢুকেছিলেন সত্যব্রতবাবু। দু’জন ‘ওয়াচার’-এর উপস্থিতিতেই সিঁড়ি দিয়ে জলে নামেন তিনি। অমিতবাবুর দাবি, ঘণ্টাখানেক সত্যব্রতবাবুকে দেখতে না পেয়ে ওই ‘ওয়াচার’-রাই জলে নৌকা নামিয়ে সত্যব্রতবাবুকে খুঁজতে শুরু করেন। এর মধ্যে তাঁর গাড়িচালকও মালিককে না পেয়ে তাঁদের কাছে আসেন। ক্লাব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ক্লাবের দু’টি ছোট পুল রয়েছে। আরও একটি পুল রবীন্দ্র সরোবর চত্বরের মধ্যে চিহ্নিত করা আছে। সেখানে জলের গভীরতা প্রায় ১৬ ফুট। সেখানে ‘সুইমার’ ছাড়াও অনেক দিন ধরে যাঁরা সাঁতার কাটছেন, শুধু তাঁদেরই সাঁতার কাটতে দেওয়া হয়। তবে অন্ধকারে কাউকে নামতে দেওয়া হয় না। এ দিন সত্যব্রতবাবু দু’জন ‘ওয়াচার’-এর উপস্থিতিতেই জলে নামেন।

কিন্তু এত বয়স্ক এক জনকে গভীর জলের পুলে নামতে দেওয়া হল কেন? ক্লাবের দাবি, ‘‘অনেক বয়স্ক সদস্যই সাঁতার কাটতে চান বলে নামতে দেওয়া হয়। তবে তাঁদের জন্য বিশেষ ভাবে লাইফ সেভাররাও থাকেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন