কবি তো ফেলনা নয়

এ ভাবেই বিশিষ্ট কবিদের লেখায় গ্রন্থিত এ-বই, যা থেকে তন্নিষ্ঠ পাঠক কিংবা গবেষক সকলেই আন্দাজ পাবেন সাহিত্যের ইতিহাসে কৃত্তিবাসী আন্দোলন কতখানি গুরুত্বপূর্ণ।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:০১
Share:

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ও সুব্রত রুদ্র

কৃত্তিবাস তার জন্মলগ্ন থেকে শুধু তো একটি পত্রিকা নয়, একটি সাহিত্য আন্দোলন। ‘‘বাংলা সাহিত্যের মোড় ফেরার একটি বিশেষ যুগ লক্ষণ— যেমন ‘কল্লোল’, যেমন ‘কবিতা’ পত্রিকা।’’ লিখেছেন নবনীতা দেব সেন। তাঁর মনে হয়েছে ‘‘ষাটের দশকের গোড়ায় অতি তরুণ ‘কৃত্তিবাস’-এর এমনই একটি বিশিষ্ট অভিজ্ঞতা হয়েছিল অ্যালেন গিনসবার্গের কলকাতা ভ্রমণের ফলে— যাতে ‘কৃত্তিবাসের যুগ’ সারা পৃথিবীর ষাটের দশকের বিশেষ সময়টির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছে। সে এক উদ্বেল সময়। সে এক অস্থির সময়।’’

Advertisement

এ ভাবেই বিশিষ্ট কবিদের লেখায় গ্রন্থিত এ-বই, যা থেকে তন্নিষ্ঠ পাঠক কিংবা গবেষক সকলেই আন্দাজ পাবেন সাহিত্যের ইতিহাসে কৃত্তিবাসী আন্দোলন কতখানি গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম প্রকাশের মুখবন্ধে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর স্বভাবসিদ্ধ সরস গদ্যে স্পষ্ট করে তুলেছিলেন এ-পত্রিকাকে ঘিরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের যে প্রতিক্রিয়া তৈরি হত তার কথা: ‘‘প্রথম দিকের কৃত্তিবাসের ললাটে নিন্দামন্দ, কটূক্তি, ইট-পাথর জুটেছে প্রচুর। এখনও একেবারে বাদ যায় না। তৎকালীন কিছু প্রবীণ কবি ও প্রখ্যাত অধ্যাপক কৃত্তিবাস সম্পর্কে কী মনোভাব পোষণ করতেন তার কিছুটা পরিচয় আছে শঙ্খ ঘোষের একটি রচনায়। আবার উদ্দাম সমর্থন ও সহযোগিতাও করেছেন অনেক তরুণ। এখন তো শুনি, কৃত্তিবাসের জীবন কাহিনী নিয়ে পণ্ডিতি গবেষণাও শুরু হয়েছে দু’এক জায়গায়।’’ আর ভূমিকায় সুব্রত রুদ্র: ‘‘আরও একটা কাজ করেছে এ-কাগজ।... কবি যে নিতান্ত ফেল্‌না নয়, কৃত্তিবাস তা বোঝাতে পেরেছে।’’

প্রবীণতম কবি থেকে নবীনতম কবি পর্যন্ত লিখেছেন এ বইটিতে, ফলে কবিতা বা সাহিত্যচর্চার নিয়ত পরিবর্তনে ক্রমাগত চিহ্নিত হতে থাকে কৃত্তিবাস, আর সেখানেই প্রকাশ পেতে থাকে তার বৈভব। শঙ্খ ঘোষের গোটা তিনেক লেখা আছে বইটিতে, তার একটিতে পণ্ডিত-অধ্যাপক শশিভূষণ দাশগুপ্তের ভাষণসূত্রে তুলে এনেছেন তিনি সাহিত্যের এই দিক্‌বদলে কৃত্তিবাস-এর কথা: ‘‘রবীন্দ্রনাথের পর তিরিশের যুগে কবিরা একটা নতুন পথ তৈরি করতে পেরেছিলেন। সে-পথে খানিকটা অভ্যাস হয়ে আসছিল আমাদের। কিন্তু এই তরুণেরা আবার একটা ভিন্ন পথ ধরেছেন। এটাই তো কালের ধর্ম। একে আমরা অগ্রাহ্য করতে পারি না। ধৈর্য নিয়ে শ্রদ্ধা দিয়ে এদের বুঝতে হবে।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন