ইতিহাসের আকর

১৩৪৬-এ ‘বিদ্যাসাগর স্মৃতি মন্দির’-এর দ্বারোদ্ঘাটন করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, এই ভবনেরই একাংশে পরিষদ আজও স্থায়ী ভাবে প্রতিষ্ঠিত।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৯ ০০:০০
Share:

রংপুর জেলার কুণ্ডী-সদ্যপুষ্করিণী থেকে সুরেশচন্দ্র রায়চৌধুরী ১৩১২ বঙ্গাব্দে একটি প্রস্তাব পাঠান: ‘‘বঙ্গীয়-সাহিত্য-পরিষদের প্রসারবৃদ্ধি এবং বঙ্গের ঐতিহাসিক উপকরণ ও প্রাচীন কাব্যাদি সংগ্রহের জন্য প্রতি জেলায় উহার একটি করিয়া শাখা-সভা স্থাপিত হউক।’’ ঠিক এই সময়েই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও পরিষদের কর্মক্ষেত্রের পরিধি বিস্তারের জন্য এক নতুন প্রস্তাব দেন। পরিষদ বহু আলোচনার পর দুটি প্রস্তাবই গ্রহণ করে, এবং রংপুরে প্রথম শাখা স্থাপিত হয়। এ দিকে মেদিনীপুরে ‘মেদিনীপুর হিতৈষী’ সংবাদপত্রের সম্পাদক মন্মথনাথ নাগের বাড়িতে ২০ মাঘ ১৩১৯ তৈরি হয় ‘মেদিনীপুর সাহিত্য সমাজ’। মেদিনীপুরে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের শাখা-পরিষদ স্থাপিত হয় ১৩২২-এ। সে বছরই ২২ ফাল্গুন ব্যোমকেশ মুস্তফির মধ্যস্থতায় দুই প্রতিষ্ঠান মিলে যায়। শুরু হয় নানা কর্মসূচি। বিশিষ্টজনের তৈলচিত্র প্রতিষ্ঠা, পুঁথি ও প্রত্নবস্তু সংগ্রহ ও সংরক্ষণ, গ্রন্থাগার স্থাপন, সাপ্তাহিক মাসিক বার্ষিক অধিবেশন, প্রবন্ধপাঠ ইত্যাদি চলতে থাকে নিয়মিত। ১৩৪৬-এ ‘বিদ্যাসাগর স্মৃতি মন্দির’-এর দ্বারোদ্ঘাটন করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, এই ভবনেরই একাংশে পরিষদ আজও স্থায়ী ভাবে প্রতিষ্ঠিত।

Advertisement

বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ/ মেদিনীপুর শাখা (৩ খণ্ড) সম্পাদক: অচিন্ত মারিক ১২০০.০০ অমিত্রাক্ষর (মেদিনীপুর)

এর আগে ১৩২৯-এ মেদিনীপুর শাখা পরিষদের আহ্বানেই বঙ্গীয় সাহিত্য সম্মিলনের ত্রয়োদশ অধিবেশন সেখানে অনুষ্ঠিত হয়, আর পরিষদের মুখপত্র ‘মাধবী’ পত্রিকাও মনীষীনাথ বসু সরস্বতীর সম্পাদনায় আত্মপ্রকাশ করে ১৩২৯ বঙ্গাব্দেই। বঙ্গীয় সাহিত্য সম্মিলন কয়েক বছর বন্ধ থাকার পর নলিনীরঞ্জন পণ্ডিতের উদ্যোগে মেদিনীপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, প্রধান সভাপতি ছিলেন রায় যতীন্দ্রনাথ চৌধুরী। অমিত্রাক্ষর পত্রিকার উদ্যোগে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের এই শতবর্ষ-অতিক্রান্ত মেদিনীপুর শাখার সামগ্রিক ইতিহাস সঙ্কলনের প্রয়াস সম্ভব হল। প্রথম খণ্ডে শাখা প্রতিষ্ঠা, মূল পরিষদের কার্যবিবরণী থেকে শাখা পরিষদ সংক্রান্ত তথ্য সঙ্কলন, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিস্তারিত পরিচিতি, পরিষদের পুঁথি ও প্রত্নসামগ্রীর তালিকা (বিশেষত উল্লেখ্য শশাঙ্কের দুটি তাম্রশাসন) ও ‘মাধবী’তে প্রকাশিত সম্পাদকীয় ও অন্যান্য রচনা স্থান পেয়েছে। দ্বিতীয় খণ্ড (ক্রোড়পত্র ১)-এ রয়েছে বঙ্গীয় সাহিত্য সম্মিলনের মেদিনীপুর অধিবেশনের কার্যবিবরণীর পূর্ণাঙ্গ প্রতিলিপি এবং তৃতীয় খণ্ড (ক্রোড়পত্র ২)-এ ‘মাধবী’ পত্রিকার প্রথম বর্ষের (আশ্বিন ১৩২৯-ভাদ্র ১৩৩০) বারোটি সংখ্যার পূর্ণাঙ্গ প্রতিলিপি। সব মিলিয়ে এই খণ্ড তিনটি আঞ্চলিক ইতিহাসের এক অমূল্য আকর।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন