book review

ইতিহাস যে ভাবে ছবি হয়ে ওঠে

ইতিহাসের দিকবদলের সঙ্গে এতটাই ওতপ্রোত চলচ্চিত্রকারের জীবন যে, তাঁর যে কোনও সৃষ্টিতেই ধারাবাহিক ইতিহাস ফুটে ওঠে তার গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলি নিয়ে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:০৭
Share:

ফোকাস অন বাংলাদেশ: ডকুমেন্টারি ফিল্মস অব তানভীর মোকাম্মেল

Advertisement

জন হুড

৭০০.০০

Advertisement

লা স্ত্রাদা

লন্ডনে এক বই-বিপণিতে তানভীর মোকাম্মেলের চোখে পড়ে গিয়েছিল মেজর জেনোসাইডস অব দ্য টোয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি। বই হাতে পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে খেয়াল করলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইহুদি নিধন-সহ নানা মারণযজ্ঞের ইতিহাস আছে সেখানে, শুধু বাদ পড়ে গিয়েছে বাংলাদেশ। সেই মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করবেন অনুপুঙ্খ গবেষণার ভিত্তিতে। ফলত তৈরি হল ১৯৭১, পাক শাসনে ভয়াবহ গণহত্যা ও বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্য দলিল যে ছবি। আলোচ্য বইটির লেখক জন হুড-এর সঙ্গে আলাপচারিতায় এমন অনেক স্মৃতিই বলেছেন তানভীর, তাঁর তথ্যচিত্র নির্মাণের নেপথ্যকাহিনি হিসেবে। লেখক মনে করেন, তথ্যচিত্রের অবশ্যম্ভাবী বাস্তবতাই চলচ্চিত্রকার হিসেবে তানভীরের প্রকৃত মূলধন। ১৯৯১ থেকে ২০১৭ অবধি তানভীরের বিপুল কর্মকাণ্ডের মধ্যে লেখক-কর্তৃক নির্বাচিত বারোটি তথ্যচিত্রই এ বইয়ের বিষয়। ইতিহাসের দিকবদলের সঙ্গে এতটাই ওতপ্রোত চলচ্চিত্রকারের জীবন যে, তাঁর যে কোনও সৃষ্টিতেই ধারাবাহিক ইতিহাস ফুটে ওঠে তার গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলি নিয়ে। ১৯৫৫ সালে খুলনায় জন্ম, দেশভাগ কখনও পিছু ছাড়েনি তাঁর ছবিতে। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, পাকিস্তানি শাসন, বাঙালির জাতীয়তাবাদ, মুক্তিযুদ্ধ, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা, কমিউনিস্ট পার্টি, বিকল্প চলচ্চিত্র, গণশিক্ষা, বাঙালি জাতিসত্তার ভবিষ্যৎ... বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে দীর্ঘ চলচ্চিত্র পরিক্রমায়। জন হুড সেই সৃষ্টির ইতিবৃত্তই তুলে ধরেন নিষ্ঠায়।

সুনীলদা আর শঙ্খবাবু

শিবাশিস মুখোপাধ্যায়

২২৫.০০

সংবিদ

এক তরুণ কবিকে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন শঙ্খ ঘোষের সাক্ষাৎকার নিতে। “আপনি কি একবার বলে দেবেন শঙ্খবাবুকে?” প্রশ্নের উত্তরে সুনীল বলেছিলেন, “উনি যদি মনে করেন সাক্ষাৎকার দেবেন তা হলে তুমি বললেও দেবেন। আর যদি মনে করেন সাক্ষাৎকার দেবেন না তা হলে আমি বললেও লাভ হবে না।” সাক্ষাৎকার পেয়েছিলেন সেই তরুণ, অচিরে প্রবেশ করেছিলেন দু’জনেরই ঘনিষ্ঠ বৃত্তে। দুই প্রবাদপ্রতিম কিন্তু ভিন্ন ব্যক্তিত্বের অধিকারী মানুষকে নিয়ে এ বই। তাঁদের সূত্রে সেই সময়ের উজ্জ্বল লেখকদের সঙ্গে আলাপচারিতার সুযোগ হয়েছিল লেখকের— তারাপদ রায়, সমরেন্দ্র সেনগুপ্ত, নবনীতা দেব সেন, দিব্যেন্দু পালিতদের সঙ্গে ওয়ার্কশপ, এক সঙ্গে বেড়ানো। রয়েছে আড্ডা, গান, অভিনয়ের প্রাণবন্ত স্মৃতি, তেমনই বাবরি মসজিদ ভাঙা ও তার পরবর্তী দাঙ্গার মতো সংঘাতপূর্ণ সময়ে কবিতা রচনা, কবিতা পাঠের স্মৃতি। “স্থানের মাত্রায়, কালের মাত্রায় কবিতা কীভাবে পাল্টে নেয় তার বর্ণমালার বিচ্ছুরণ, কীভাবে... কবিতা নির্বাচনের মধ্যে দিয়েই কবিরা শ্রোতাদের জন্যে সাজিয়ে দিতে পারেন নতুন নতুন উপলব্ধির সংকেত,” সেই বোধের নানা মুহূর্ত সাজানো এই স্মৃতিচারণে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন