সভ্যতার বিপর্যয়

প্রথমেই বলা যাক বিপ্লব মণ্ডলের কথা। অ্যাক্রিলিক ক্যানভাসে শিল্পীর মানসিকতায় বর্তমান যুব সম্প্রদায়ের হতাশা, রাজনৈতিক স্থায়িত্বের অভাব, আশাহীনতা, সভ্যতার বিপর্যয়ের যাতনা মূর্ত হয়ে উঠেছে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৭ ০০:০০
Share:

দলীয় প্রদর্শনীর নাম ‘জার্নি’। মানে ভ্রমণ বা পর্যটন। এ যাত্রা ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের নানা শিল্পীর বহু পথ ভেঙে একত্রিত হওয়ার, না কি মানুষের অন্তরের দিকে ফিরে যাওয়ার যাত্রা? শিল্পীরা হলেন অলক দত্ত, অপূর্ব মজুমদার, বিপ্লব মণ্ডল, দেবাশিস পাত্র, জগত্তারণ মোদী, রঞ্জিত বরুয়া, শান্তনু সরকার, সোমেন মণ্ডল, শুভেন্দু বিশ্বাস এবং তুহিনরঞ্জন ঘোষ। এটি কলকাতায় তাঁদের তৃতীয় প্রদর্শনী।

Advertisement

প্রথমেই বলা যাক বিপ্লব মণ্ডলের কথা। অ্যাক্রিলিক ক্যানভাসে শিল্পীর মানসিকতায় বর্তমান যুব সম্প্রদায়ের হতাশা, রাজনৈতিক স্থায়িত্বের অভাব, আশাহীনতা, সভ্যতার বিপর্যয়ের যাতনা মূর্ত হয়ে উঠেছে। শিল্পী অত্যন্ত স্পর্শকাতর। তাঁর ছবি মূলত বাস্তবধর্মী। বিপ্লবের ছবিতে মানুষ, বিশেষ করে পরবর্তী প্রজন্ম কী ভাবে নিজেকে বাঁচাবে যেন ভেবে পাচ্ছে না। একটি চিত্র বিশেষ ভাবে মন কাড়ে। নাম ‘স্টিল অ্যাস্লিপ’ — এখনও ঘুমন্ত। ঘড়ির কাঁটা অক্লান্ত ভাবে ঘুরে চলেছে, কিন্তু মানুষ কি এখনও জাগবে না? এর পর উল্লেখযোগ্য কাজ দেবাশিস পাত্রের ভাস্কর্য। শিল্পীর দুটি কাজের উল্লেখ করা যায় এখানে। একটির নাম ‘সমকালীন নেতা’। এটি বেশ বড় কাজ। নেতা একটি বাক্সের ওপর আসীন। এই বাক্স কোনও সাধারণ বাক্স নয়। এর ওপর লাঞ্ছিত, নিপীড়িত মানুষের এবং প্রকৃতির দৃশ্যাবলি। নেতাটির মুখশ্রী বড় শান্ত। আপাতদৃষ্টিতে প্রায় বুদ্ধকে মনে করায়। কিন্তু আসলে সেটি তাঁর মুখ নয়। এ তো মুখোশপরা মানুষ। মাথার ওপর ঝুলন্ত অবস্থায় একটি স্বর্ণমুকুট। মুকুটটি মাথায় স্থান পায়নি এখনও, কিন্তু মানুষটির বড় বাসনা ওই মুকুটটি পরিধান করার। সর্বাঙ্গ কালিমা ও মলিনতায় ভরা। দ্বিতীয়টি একটি কালো পাথরের স্নানরত কাকের ভাস্কর্য। এটিকে জলের ওপর স্থাপনা করা রয়েছে।

ভাস্কর অপূর্ব মজুমদারের কাজের বিশেষত্ব কাঁটাতারের ব্যবহার। এই কাঁটাতার শিল্পীকে অস্থিরচিত্ত করেছে। তাঁর প্রায় সমস্ত শিল্পকর্মেই কাঁটাতার দৃশ্যমান। এটি নিশ্চয়ই প্রতীক-আশ্রয়ী। এর মানে ব্যবধান। মানুষ নানা কাজে ব্যাপৃত কিন্তু তাদের হৃদয় ভারাক্রান্ত, কারণ তাদের মধ্যে লোভ, হিংস্রতা, ক্রোধ, পরশ্রীকাতরতার ব্যবধান। প্রতিবাদমুখী ভাষা এই শিল্পীর। কাঁটাতারের দূরত্বে মানুষ ক্লান্ত। শিল্পী সৌমেন মণ্ডলের ছবিতে মানুষ মুখহীন, অবয়বহীন ভয়াবহ। তিনি যেন পারিপার্শ্বিক অত্যাচার অনাচার থেকে নিজেকে বাঁচাতে ব্যস্ত। নিকষ কালো রং ছুরি দিয়ে কেটে কেটে সাদা জালের সৃষ্টি হয়েছে। অভিনবত্ব আছে। এ ছাড়া যাঁরা যোগদান করেছেন, সবাই নিজের নিজের ভাষায় নানা ভাবে শিল্পকর্ম সৃষ্টি করেছেন।

Advertisement

শমিতা বসু

সাবলীল ভঙ্গি

গুরু কলাবতী দেবীকে সংবর্ধনা জানিয়ে এবং তাঁর আর্শীর্বাদ নিয়ে পূর্বিতা মণিপুরী নৃত্যের অনুষ্ঠান শুরু করেন। মণিপুরী নৃত্যের লীলায়িত ভঙ্গি ও পদক্ষেপে প্রথম নিবেদন ‘প্রবর্ধন নর্তন’। পরবর্তী নিবেদন ‘তাণ্ডব ও লাস্য’। নৃত্য পরিকল্পনা গুরু বিপিন সিংহ। সংগীতে কলাবতী দেবী। খোলবাদনে বীরমঙ্গল সিংহ। তাণ্ডব ও লাস্যের আর একটি নিবেদন রাধা ও কৃষ্ণের নৃত্য প্রতিযোগিতা। অংশ গ্রহণে রিজু দাস ও পূর্বিতা সুন্দরভাবে তা প্রকাশ করলেন। পরবর্তী নিবেদনে শিববন্দনা। মন্দিরা নাট্যমে হাতে তালি দিয়ে নৃত্য। দর্শকমণ্ডলী প্রত্যেকটি উপস্থাপনা উপভোগ করলেন।

দলগত নৃত্যে ছাত্রীরা নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁদের সাবলীল ভঙ্গি ও পদক্ষেপ ছিল খুবই সুন্দর।

অনুষ্ঠানটি শেষ হয় গুরু

কলাবতী দেবীর খণ্ডিতা, নায়িকাভেদ নৃত্য পরিবেশনে। পরিকল্পনা ও সঙ্গীতে গুরু বিপিন সিংহ ও গুরু কলাবতী দেবী। কলাবতী দেবীর নৃত্যমাধুর্যও অনবদ্য।

পলি গুহ

পূরবী রাগ ও তবলার ছন্দে

প্রবীণ তবলিয়া বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘কলাশ্রী’র আটত্রিশতম অনুষ্ঠানে দ্বৈত রাগপ্রধান শোনালেন অশোকা মিত্র ও ঋতুপর্ণা মিত্র। পূরবী রাগে খেয়াল পরিবেশন করলেন অমিতাভ ঘোষ। শুরুতেই ছড়া ও আবৃত্তি শোনালেন পারমিতা রায়, আয়ুষ বন্দ্যোপাধ্যায়, ঐশী চক্রবর্তী, সৌম্যশ্রী কাঁড়ার, রীতম পাল। রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুলগীতি ও ভজন গাইলেন তাপস রানা, সুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবলায় সহযোগিতা করলেন জয়দীপ চক্রবর্তী, শিবনাথ মুখোপাধ্যায়।

দ্বিতীয় পর্বে একক নৃত্যে ছিলেন ঐশী চক্রবর্তী। পরে সমবেত তবলায় প্রথমে রূপক, পরে তিন তালে পেশকার, কায়দা, গত্, রেলা, টুকরা, চক্রধার পরিবেশিত হয়।
অংশ নিয়েছিলেন সুমন কাঁড়ার, অমিয় চৌধুরী, জয়দীপ চক্রবর্তী, রীতম পাল, তাপস রানা, বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায়। অনুষ্ঠান শেষ হয় সংসৃতি সেনের সুন্দর নৃত্যানুষ্ঠানের মাধ্যমে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন