Poila Baishak

পহেলা বৈশাখ মানে নতুন পোশাকে সেজে উঠছে বাংলাদেশ

এসে গেল পহেলা বৈশাখ। যে দিনে এখানে এখন রীতি হয়ে গিয়েছে, সকালে পান্তাভাত আর ইলিশ খেয়ে আর বৈশাখের নতুন পোশাক পরে রমনার বটমূলে প্রাণ খুলে গাওয়া ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’।

Advertisement

অঞ্জন রায়

ঢাকা শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৮ ১৭:৩৩
Share:

বৈশাখ মানেই নতুন পোশাক, না হলে যেন হবেই না বর্ষবরণ।

ইদে বা পুজোতেই শুধু নয়, এখন বাংলা বছরের প্রথম দিনটিও বাংলাদেশে হয়ে উঠেছে নতুন পোশাক পরে আনন্দে মেতে ওঠার দিন। সে জন্যই চলছে ধুম কেনাকাটা। মানুষের ঢল চোখে পড়ছে ঢাকার বিভিন্ন মল আর পোশাকের বিভিন্ন দোকানে। দামি ব্র্যান্ডশপ থেকে গুলিস্তানের ফুটপাথ— সর্বত্র সাধ আর সাধ্যের টানাপড়েন। তবে বৈশাখী বোনাসের নতুন নিয়মে মুখে হাসি আছে ক্রেতার। বিক্রেতার জন্যও একটু বাড়তি মুনাফা গোনার পথ খুলেছে।

Advertisement

এসে গেল পহেলা বৈশাখ। যে দিনে এখানে এখন রীতি হয়ে গিয়েছে, সকালে পান্তাভাত আর ইলিশ খেয়ে আর বৈশাখের নতুন পোশাক পরে রমনার বটমূলে প্রাণ খুলে গাওয়া ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’। নতুন পোশাক কেনাকে কেন্দ্র করে বাজারে ভিড় বাড়ছে ক্রেতার। বৈশাখ মানেই নতুন পোশাক। নতুন পোশাক না হলে যেন হবেই না বর্ষবরণ। এটাই এখন বাংলাদেশের নতুন সংস্কৃতি।

থিমটা শেকড়ের কাছে ফেরা, চলনেবলনে, সাজপোশাকে শতভাগ বাঙালিয়ানা ফুটিয়ে তুলতে পহেলা বৈশাখের জন্যই মুখিয়ে থাকেন সবাই। বাঙালির উৎসবের এই দিনটিকে নতুন পোশাকে বরণ করে নিতে ভালবাসেন ফ্যাশনপ্রেমীরা। এমনকী, সারা বছর ট্রাউজার পরা তরুণের পরনেও কখনও কখনও ধুতি বা লুঙ্গি। গত কয়েক বছরের লাল-সাদা ডিজাইনের বৃত্ত থেকে অনেকটাই বের হয়ে এসেছে এ বারের বৈশাখী পোশাক। বর্ষবরণের সাজে নিজেকে সাজাতে চান সবাই, চান অনেক রঙের সমাহার। তাই লাল, সাদা, কমলা, হলুদ, সবুজ, বেগুনি, নীল— সব রংকেই বৈশাখী আমেজে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এ বার পোশাক ডিজাইনে।

Advertisement

বৈশাখে ছেলেদের পছন্দের পোশাক পাঞ্জাবি। বাঙালি উৎসবের আমেজ অনেকটাই ফুটে ওঠে পাঞ্জাবিতে।

বাংলাদেশেও নারীর পোশাকের প্রধান অংশ জুড়ে আছে শাড়ি। পহেলা বৈশাখের সাজেও তাই সববয়সী নারীর কাছে শাড়ির প্রাধান্য। বৈশাখের প্রথম দিনটিতে পরনের শাড়িটি হওয়া চাই আরামদায়ক এবং স্বাচ্ছন্দ্যেরও। বৈশাখে ছেলেদের পছন্দের পোশাক পাঞ্জাবি। বাঙালি উৎসবের আমেজ অনেকটাই ফুটে ওঠে পাঞ্জাবিতে।

কাটিংয়ে বৈচিত্র্য, রঙের ভিন্নতা আর ডিজাইনে নতুনত্ব— এই তিনটিই চাই বৈশাখের পোশাকে। সে কারণেই কাটতি রঙিন পাঞ্জাবির। ঢাকায় বৈশাখের পাঞ্জাবি এখন আর শুধু লাল-সাদা রঙের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। যেন সব রংই বৈশাখের পাঞ্জাবিতে মানিয়ে যায় বেশ। লাল, হলুদ, কমলা, বেগুনি, নীল, সবুজ, কালচে লাল রঙের পাঞ্জাবিতে এখানে আরও রঙিন। কোনওটা এক রঙা আবার কোনওটাতে রয়েছে বিভিন্ন রঙের ছোঁয়া। অন্য দিকে, শাড়ি পরতে অনীহা যে মেয়েদের, তাঁদের বৈশাখের প্রথম ভরসা সালোয়ার-কামিজ বা ফতুয়া, এই গরমে এ সব পোশাক আরামেরও বটে। এই পোশাকগুলিতে গত কয়েক বছর থেকে চলছে রঙের খেলা। লাল-সাদায় এখন আর না। বৈশাখের সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া এক রঙের পাশাপাশি ‘মিক্সড অ্যান্ড ম্যাচিং’ ধারাটা চলছে জমজমাট।

কাটিংয়ে বৈচিত্র্য, রঙের ভিন্নতা আর ডিজাইনে নতুনত্ব— এই তিনটিই চাই বৈশাখের পোশাকে।

বৈশাখের বিকিকিনিতে মাতোয়ারা ঢাকার ফ্যাশন হাউসগুলো। সেখানে চলছে শেষবেলার কাজের চাপ। দেশীয় বুটিক হাউজের পাশাপাশি যাঁরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে পোশাক বানান, তাঁদেরও ব্যস্ততা তুমুল। এই সময়ের নতুন ধারা— অনলাইনে পোশাক বিক্রির পরিমাণও প্রচুর।

সব মিলিয়ে ইদ বা পুজোর পরে বাংলাদেশের সবচেয়ে জমজমাট সময় কাটছে পোশাকের বাজারে। দাম একটু চড়া, তাতে কী-বা এসে যায়! উৎসব কি দামের পরোয়া করে?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন