আমেরিকার গণতান্ত্রিক সুখ্যাতির ভিতে জোর ধাক্কা

গণতন্ত্রের গগনচুম্বী অট্টালিকা। শ্বেতশুভ্র মর্মরগাত্র আলোকিত সুদৃঢ় গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের দর্পালোকে। কিন্তু অন্দরমহলে অন্ধকার রয়ে গিয়েছে বলে মনে হল আজ।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৬ ০১:২৯
Share:

কিন্তু ট্রাম্প নিজের দেশ সম্পর্কে সংশয়টা জাগিয়ে দিয়েছেন। ছবি সংগৃহীত।

গণতন্ত্রের গগনচুম্বী অট্টালিকা। শ্বেতশুভ্র মর্মরগাত্র আলোকিত সুদৃঢ় গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের দর্পালোকে। কিন্তু অন্দরমহলে অন্ধকার রয়ে গিয়েছে বলে মনে হল আজ।

Advertisement

জয় এলে তবেই মান্য নির্বাচনের ফল, পরাজয়ে বর্জনীয়। এমনই ইঙ্গিত দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

গণতন্ত্রের পথে সওয়া দু’শো বছরের সফর আমেরিকার। জনমতের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনার যে ধারণা, তার অন্যতম পীঠস্থান মার্কিন মুলুক। সে রাষ্ট্রের শীর্ষ সাংবিধানিক পদে আসীন হওয়ার দৌড়ে অগ্রগণ্য যে দু’জন, তাঁদেরই এক জনের কাছে নির্বাচনের ফল তখনই গ্রহণীয়, যখন তা পক্ষে?

Advertisement

বিতর্কের কেন্দ্রে তিনি এই প্রথম নন। আগেও বহু বার। সে সব বিতর্কের কোনওটি তাঁর ব্যক্তিগত ভাবমূর্তিতে ধাক্কা দিয়েছে, কোনওটি তাঁর সামাজিক মূল্যবোধ সম্পর্কে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। কিন্তু নির্বাচনের ফল মানা বা না মানার প্রশ্নে তিনি যা বললেন, তাতে কালিমা শুধু তাঁর ভাবমূর্তিতে লিপ্ত হল না, কালির ছিটে লাগল আমেরিকা নামক গণতান্ত্রিক সৌধটির গায়েও।

কোনও সাধারণ নাগরিকের মুখে বিচ্ছিন্ন ভাবে শোনা গেলে এ মন্তব্যে বড় বিচলিত হওয়ার কারণ ছিল না হয়তো। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদের অন্যতম দাবিদার তথা লক্ষ লক্ষ মার্কিন নাগরিকের প্রতিভূ এক ব্যক্তি যদি জনগণের রায়ে আস্থাশীল না হন, তা হলে আমেরিকার সামগ্রিক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে নিয়েই সংশয়টা তৈরি হয়।

এই মুহূর্তে পৃথিবীতে অস্তিত্বশীল গণতন্ত্রগুলির মধ্যে প্রাচীনতম আমেরিকা। সুদীর্ঘ এই পরম্পরাও কি মূল্যবোধটাকে রন্ধ্রে রন্ধ্রে চারিয়ে দিতে পারেনি তবে? সুসজ্জিত সৌধটার যাবতীয় গরিমা কি শুধু বহিরঙ্গে? অন্দরমহলের আনাচে-কানাচে কি এখনও অন্ধকার অনেক?

হয়তো তাই। অথবা হয়তো তেমন নয়। কিন্তু ট্রাম্প নিজের দেশ সম্পর্কে সংশয়টা জাগিয়ে দিয়েছেন। আমেরিকার যে গণতান্ত্রিক সুখ্যাতি, তার ভিতটাতেই ধাক্কা দিয়েছেন, বেশ জোরেই দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন