Editorial News

প্রলম্বিত নিকষ আঁধারে ক্ষুদ্র আলোকবিন্দু অবশেষে

এক গুচ্ছ আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে। পরমাণু এবং ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি বেপরোয়া ভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর কিম জং-উন এখন প্রবল আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রয়েছেন।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:৫২
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

খুব উজ্জ্বল কোনও আলোকবর্তিকা নয়। অন্ধকারটার প্রগাঢ়তার নিরিখে নেহাৎই অকিঞ্চিৎকর এক আলোকবিন্দু এ বরং। কিন্তু প্রলম্বিত অন্ধকারের বুকে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র আলোকবিন্দু জেগে ওঠাও বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।

Advertisement

নিরন্তর তিক্ততার স্রোত উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে। শান্তির লক্ষ্যে আলোচনা অনেক দূরের বিষয়, প্রায় রোজ পরস্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধের হুঙ্কার দিতে অভ্যস্ত এই দুই রাষ্ট্র। যে-সে যুদ্ধ নয়, পরমাণু যুদ্ধের হুঙ্কার দেয় উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণের হয়ে পাল্টা পরমাণু হুঙ্কার ছাড়ে আমেরিকা। এ হেন উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া প্রায় দু’বছর নিজেদের মধ্যে সব কূটনৈতিক আলোচনা বন্ধ রেখেছিল। কিন্তু শৈত্য কাটিয়ে ফের হটলাইন যোগাযোগ খুলে গেল দু’দেশের মধ্যে। খুব শীঘ্রই বৈঠকেও বসতে চলেছেন দু’দেশের প্রতিনিধিরা— এ খবর স্বস্তি এনে দেবেই।

কৃতিত্ব দক্ষিণেরই বেশি। গত বছর দক্ষিণের ক্ষমতার অলিন্দে পালাবদল হওয়া ইস্তক আলোচনা তথা শান্তি প্রক্রিয়ায় জোর দিচ্ছিল সোল। বার বারই কূটনৈতিক প্রক্রিয়া মসৃণ করার বার্তা যাচ্ছিল দক্ষিণ থেকে উত্তরে। দক্ষিণ কোরিয়ার সদর্থক বার্তাকে একাধিক বার অবজ্ঞা করে যুদ্ধের জিগিরেই অনড় থেকেছেন উত্তরের শাসক কিম জং-উন। যুদ্ধের জন্য যে দক্ষিণও প্রস্তুত, প্রতি বারই সোল সে কথা স্পষ্ট উচ্চারণে জানিয়ে দিয়েছে। কিন্তু নতুন করে ফের শান্তির বার্তাটাও পাঠিয়েছে। পিয়ংইয়ং শেষ পর্যন্ত সাড়া দিল সে বার্তায়। ঘটনাপ্রবাহে দীর্ঘ দিন পর এ এক সদর্থক বাঁক তো বটেই।

Advertisement

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

এক গুচ্ছ আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে। পরমাণু এবং ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি বেপরোয়া ভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর কিম জং-উন এখন প্রবল আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রয়েছেন। অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক বয়কটের ধাক্কা অপরিমেয়। এমন এক পরিস্থিতিতে সুর কিছুটা নরম করা প্রায় অপরিহার্য ছিল কিমের দেশের জন্য। দক্ষিণ কোরিয়ায় আসন্ন শীতকালীন অলিম্পিকের আসরে উত্তরের প্রতিনিধিরা যাতে নির্বিঘ্নে যোগ দিতে পারেন, তা নিশ্চিত করাও পিয়ংইয়ং-এর অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য— বলছে কূটনৈতিক মহলের একাংশ। কিন্তু কারণ যা-ই হোক, কৃতিত্ব যারই হোক, উত্তর কোরিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়া ফের আলোচনায় বসছে, এই খবরটুকুতেই স্বস্তি পাওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।

আরও পড়ুন
দু’বছর পরে এক টেবিলে দুই কোরিয়া

৯ জানুয়ারির আলোচনাই যাবতীয় বিবাদে ইতি টানতে চলেছে বা কোরীয় উপদ্বীপ দীর্ঘ উত্তাপের অবসান ঘটিয়ে অখণ্ড শান্তির দিশায় এগোচ্ছে, এমন কথা বলার সময় আসেনি। পরিস্থিতি বদলের লক্ষ্যে নিতান্তই প্রাথমিক পদক্ষেপ এ। কিন্তু দীর্ঘ দিন পরে ইতিবাচক দিশায় একটা পদক্ষেপ করতে পারল কোরীয় উপদ্বীপ, এ ঘটনা অবশ্যই তাৎপর্যপূর্ণ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন