আবার একটা বর্জনীয় মন্তব্য। অত্যন্ত গুরুতর সামাজিক সমস্যার অতি সরলীকৃত বিশ্লেষণে অভ্যস্ত অসংবেদনশীল রাজনীতিকদের মুখ থেকে মাঝেমধ্যেই ঠিকরে আসে যে ধাঁচের কথা, চিরঞ্জিৎ ঠিক তেমনই একটা কথা বলে দিলেন।
প্রসঙ্গ ছিল বেঙ্গালুরুতে বর্ষবরণের রাতে নারীর অবাধ শ্লীলতাহানি। চিরঞ্জিৎ সে ঘটনার নিন্দাই করলেন। কিন্তু, তার সঙ্গে মেয়েদের পোশাক নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিলেন। পোশাকই নাকি অনেক সময় অবাঞ্ছিত ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, এমন ইঙ্গিত দিলেন।
অবাঞ্ছিত হিসেবে কোনও বিষয়কে যদি চিহ্নিত করতেই হয়, তা হলে সর্বাগ্রে চিরঞ্জিতের এই মন্তব্যকেই অবাঞ্ছিত বলব। এই প্রথম নয়, আগেও এমন মন্তব্য এসেছে তাঁর দিক থেকে। বারাসতে এমনই এক অপ্রীতিকর ঘটনা প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে চিরঞ্জিত পোশাকের তাৎপর্য বিশ্লেষণে নেমেছিলেন। বিতর্ক হয়েছিল বিস্তর। কিন্তু চিরঞ্জিৎ বুঝিয়ে দিলেন, সে বিতর্ক তাঁকে স্পর্শই করেনি।
চিরঞ্জিৎ বারাসতের বিধায়ক। সেই সূত্রে তিনি আজ রাজনীতিকও। কিন্তু, রাজনীতিক পরিচয়ের চেয়ে তাঁর শিল্পী পরিচয়টা অধিকতর উজ্জ্বল। শিল্পী থেকে রাজনীতিক হয়ে ওঠা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু, সংবেদনশীল সত্তার এমন অসংবেদনশীল আচরণ সত্যিই অস্বাভাবিক।
এ মন্তব্যের তো কোনও প্রয়োজন ছিল না চিরঞ্জিৎ। কাঙ্খিতও ছিল না। তা হলে কেন? সমাজের প্রথম সারিতে যাঁরা, তাঁদের ভাবনার প্রবাহেই যদি এমন গরল মিশে থাকে, তা হলে দুঃস্বপ্নগুলোর বিরুদ্ধে লড়ব কী ভাবে? সম্বিৎ ফিরবে কি না জানা নেই। তবে আশা ছাড়ছি না।