যোগী আদিত্যনাথ বলেন, “অযোধ্যায় রামমন্দির ছিল, আছে, থাকবে।”
প্রত্যাশিতভাবেই বিজেপির মুখে এখন আরও একবার রাম নাম শোনা যাচ্ছে। প্রত্যাশিত, কেন না আম আদমির সামনে পেশ করার মতো চোখধাঁধানো কোনও ডালিকে দূর কোণেও দেখা যাচ্ছে না। প্রত্যাশিত কেন না কর্নাটক বা উত্তরপ্রদেশ, সম্মিলিত বিরোধী শক্তির দাপটের আঁচ ভোটবাক্সে প্রতিফলিত হতে দেখা যাচ্ছে। এই অবস্থায় ভোটপূর্ব সংবেদনশীল এই মুহূর্তে কামারের এক ঘা মারার জন্য যারপরনাই উদগ্রীব বিজেপি নেতারা বুকে-পিঠে আবার রামকে তুলে নেবেন, এর মধ্যে অভিনবত্ব নেই।
সেই মতোই, রাম নামে তরী ভাসানোর প্রতিযোগিতা এখন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। মূল্যবৃদ্ধির কষ্ট, অচ্ছে দিনের ক্রমক্ষীয়মান স্বপ্ন, দৈনন্দিনতার তীব্র বেদনা ভুলিয়ে দেওয়ার মতো সর্বরোগহর বটিকা তো ওই একটিই রয়েছে বিজেপির ঝোলায়। রামমন্দির নির্মাণের বজ্রহুঙ্কার, এবং তদনুযায়ী বিভাজিত সমাজ থেকে একটি একটি করে ধর্মভোট তুলে নেওয়ার বহুচর্চিত পুরনো কৌশল আবার নিতে শুরু করেছেন যোগী আদিত্যনাথরা। ধর্মাস্ত্রে শান দিতে শুরু করেছে সঙ্ঘ পরিবার, সেই অনুযায়ী ফৈজাবাদ হয়ে যাচ্ছে অযোধ্যা, আমদাবাদ হতে চলেছে কর্ণাবতী— আবার নতুন করে বিবিধের ভাবনাকে মূলে নাশ করে একমেবদ্বিতীয়মের সাধনা চলছে দেশ জুড়ে।
যে দেশে সাধারণ মানুষের মুখে সুলভে খাবার পৌঁছনো সম্ভব হয় না, সুউচ্চ মূর্তির প্রতিষ্ঠার স্বার্থে ৭৮টা গ্রাম উজাড় করে দিতে হয়, অঙ্কের নানা জালে তথ্য লোফালুফি ছাড়া দরিদ্রের উন্নয়নের কোনও লক্ষণ দেখা যায় না— সেখানে ধর্মের অস্ত্রটিকে ঝোলা থেকে বার করা ছাড়া অন্য কোনও পথ থাকে না শাসকের। অপ্রত্যাশিত ছিল না তাই যোগী আদিত্যনাথের মন্তব্য, অযোধ্যায় রামমন্দির ছিল, আছে, থাকবে।
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
প্রশ্ন একটাই, ঝোলা থেকে অস্ত্র তো বেরোচ্ছে। কিন্তু সেই অস্ত্রে ধার আছে তো? ’৯২ সালের পর সরযূ দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানের ন্যূনতম সুযোগবঞ্চিত আম আদমিকে একই অস্ত্রে ঘায়েল করা যাবে এতগুলো বছরের পর?
রইল ঝোলা, চলল ভোলা— এমনটা যদি হয়? সাধু কি যথেষ্ট সাবধান?
আরও পড়ুন: ‘অযোধ্যায় রামমন্দির ছিল, আছে, থাকবে’, ভোটের আগে যোগীর মুখে ফের রাম নাম