দিল্লি ডায়েরি

তাঁর অনুগামীরা অবশ্য প্রজ্ঞাকে আচার্য মহামণ্ডলেশ্বর স্বামী পূর্ণচেতনানন্দ গিরি বলেই পরিচয় দিতে ভালবাসেন। কারণ প্রয়াগের কুম্ভের সময় ভারত ভক্তি আখড়ার আচার্য মহামণ্ডলেশ্বর ঘোষিত হয়েছেন তিনি।

Advertisement

অগ্নি রায়, দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:০০
Share:

কোনও সাংসদ স্ট্যান্ড-আপ কমেডিতে অংশ নিয়েছেন, এমন নজির বিরল। শশী তারুর সম্প্রতি সেটাই করে দেখিয়েছেন। এ বার সংসদের অধিবেশন শুরু হতেই অভিনন্দনের বন্যায় ভাসছেন। কমেডি শো-তে শশীর মুখে তাঁর ছোটবেলার গল্প শুনে সবাই হেসে কুটিপাটি। বাড়িতে অতিথি এলে নাকি বাবা-মা ডাক দিতেন, ‘শশী, আঙ্কলকে ইংরেজি বলে শোনাও না!’’ মঞ্চে অবশ্য শশী এই প্রথম নন। দিল্লির সেন্ট স্টিফেন্স কলেজে পড়ার সময়ই রীতিমতো নাটক করতেন। শেক্সপিয়রের ‘অ্যান্টনি অ্যান্ড ক্লিয়োপেট্রা’-য় তিনিই ছিলেন অ্যান্টনির চরিত্রে। আর ক্লিয়োপেট্রা? মীরা নায়ার। সেই নাটকে অভিনয় করেছিলেন লেখক অমিতাভ ঘোষ, থিয়েটার পরিচালক আমির রাজা হুসেন। পাবলো বার্থোলোমিউ-র তোলা সেই নাটকের ছবিও পুরনো অ্যালবাম থেকে টুইট করেছেন শশী।

Advertisement

ফ্ল্যাশব্যাক: সেন্ট স্টিফেন্স কলেজে ‘অ্যান্টনি অ্যান্ড ক্লিয়োপেট্রা’ নাটকে শশী তারুর

মন্ত্রসিদ্ধ আসনে প্রজ্ঞা

Advertisement

লোকসভায় সাধারণত শেষ সারিতে বসেন প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুর। বসার আগে তাঁর লাল রঙের আসন পেতে দেন সংসদের কর্মীরা। নাথুরাম গডসে-কে দেশভক্ত বলে, ফের ক্ষমা চেয়ে যতই বিতর্কিত হোন, সংসদে আসা আমজনতার মধ্যে তাঁর সঙ্গে ছবি তোলার হিড়িক। তাঁর অনুগামীরা অবশ্য প্রজ্ঞাকে আচার্য মহামণ্ডলেশ্বর স্বামী পূর্ণচেতনানন্দ গিরি বলেই পরিচয় দিতে ভালবাসেন। কারণ প্রয়াগের কুম্ভের সময় ভারত ভক্তি আখড়ার আচার্য মহামণ্ডলেশ্বর ঘোষিত হয়েছেন তিনি। তাঁদের যুক্তি, একই আসনে বসে রোজ জপ করলে মন্ত্রের শক্তি আসনে গেঁথে যায়। আসন সিদ্ধ হয়। মন চঞ্চল হলেও, আসনে বসামাত্র পূর্বজপের প্রভাব ক্রিয়া করে দেহমনের ওপরে। তাই প্রজ্ঞা ওই আসনেই বসেন।

পাঁচখানা বিয়েবাড়ি

শীতের আমেজ পড়তে না পড়তে, রাজধানীর ক্ষমতার বাগানে প্রজাপতি উড়তে শুরু করেছে! নেতা সাংসদদের ঘোর ফ্যাসাদ। কাকে ছেড়ে কার বিবাহবাসরে হাজিরা দেবেন! নভেম্বরের শেষ থেকে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে পাঁচটা বিয়ের অনুষ্ঠান। তৃণমূলের লোকসভার মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, চলতি অধিবেশন এবং মেয়ের বিয়ের বাজার— দুই নিয়েই মহাব্যস্ত। বিজু জনতা দলের নতুন সংসদীয় নেতা পিনাকী মিশ্র ব্যস্ত ছেলের বিয়ে নিয়ে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরীর মেয়ে, অখিলেশ সিংহ যাদবের একদা ঘনিষ্ঠ অধুনা বিজেপি নেতা সঞ্জয় শেঠের মেয়ের বিয়ে দিল্লিতে। পাঁচতারা বিয়েবাড়িটি বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ সিএম রমেশের। দুবাইয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান। দিল্লি থেকে দুবাই বরযাত্রীদের নিয়ে যাওয়ার জন্য ১৫টি বিমান ভাড়া করেছেন রমেশ।

মুশকিল আসান মানস

কারও সমস্যা কাশি, কিছুতেই কমছে না। কেউ ভুগছেন পায়ের চোটে। অনেকে চট করে জানতে চান উজ্জ্বল ত্বকের গোপন রহস্য। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পাওয়া যাচ্ছে প্রেসক্রিপশন, তৃণমূলের সংসদীয় কক্ষে! পেশাগত ভাবে ডাক্তার এবং পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ মানস ভুঁইয়া হাসিমুখে রাজ্যসভার বিতর্কের খোঁজখবর দেওয়ার পাশাপাশি, ডাক্তারি পরামর্শ বিলোচ্ছেন। কখনও সাংবাদিকদের প্যাড টেনে লিখে দিচ্ছেন ওষুধের নাম।

বাবুলের রিংটোন

মন্ত্রিমশাইয়ের ফোন হঠাৎই ডাকতে শুরু করল ‘প্যাঁক-প্যাঁক’ করে। সংসদের করিডরে বেজায় ব্যস্ত মন্ত্রী ফোন তুলে বললেন, ‘‘কর্তা বিজ়ি হ্যায়। ফোন করতা হ্যায়, করতা হ্যায়।’’ ফোনটি কেটেই বাংলার সাংসদ ও কেন্দ্রের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় বললেন, ‘‘বৌয়ের ফোন।’’ তাই বলে হাঁসের ডাক? বাবুল বললেন, স্ত্রী-মেয়ে-মা-সকলের জন্য আলাদা আলাদা রিংটোন আছে মোবাইলে। স্ত্রীর বরাদ্দ হাঁস। সরস্বতীর বাহন বলেই কি?

ফোনস্থ: বাবুল সুপ্রিয় ফোনে

রাগপ্রধান কল্যাণ

লোকসভার ভিতরে তাঁর মারমুখী মেজাজ সর্বজনবিদিত। তৃণমূলের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে সংসদের বাইরেও দেখা গেল তেরিয়া মেজাজে! মহারাষ্ট্র নিয়ে বিরোধীদের সমবেত ধর্নাস্থল অম্বেডকরের মূর্তির নীচে দ্রুত পৌঁছে তৃণমূলীরা দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন ক্যামেরাশোভন জায়গায়। একটু দেরিতে এসে সনিয়া ঘনিষ্ঠ নেতা আহমেদ পটেল জায়গাটি চান। কল্যাণ নারাজ। রেগে আহমেদ বলেন, এটা কি তৃণমূলের একার ধর্না? রেগেই কল্যাণের জবাব, এটা কংগ্রেসেরও একার অনুষ্ঠান নয়! গজগজ করে আহমেদের প্রস্থান!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন