যোগাসনে বাজিমাত কর্মযোগী হাসমুখের
জিএসটি চালু করতে গিয়ে নাওয়া-খাওয়া প্রায় ভোলার দশা হাসমুখ আঢিয়ার। তাতে অবশ্য ক্লান্তি নেই এই গুজরাতি আইএএস-এর। অর্থ মন্ত্রকের রাজস্ব সচিবকে অনেকেই তাই ‘কর্মযোগী’ বলে ডাকেন। এর পিছনে অবশ্য একটা গল্পও রয়েছে। নরেন্দ্র মোদী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় সরকারি অফিসারদের পরিশ্রমী করে তুলতে কর্মযোগী অভিযান চালু করেছিলেন। তাতে কাজের দক্ষতা ও পরিশ্রমের ক্ষমতা বাড়ানোর অন্যতম দাওয়াই ছিল প্রাণায়াম ও যোগাসন। বুদ্ধিটা নাকি দিয়েছিলেন হাসমুখই! মোদীর মতো তিনি শুধু সকালে যোগাসনই করেন না।
প্রিয়পাত্র: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে হাসমুখ আঢিয়া
বাণিজ্যের ছাত্র হয়েও তাঁর পিএইচডি যোগাসন নিয়ে, বেঙ্গালুরুর স্বামী বিবেকানন্দ যোগ অনুসন্ধান সংস্থান থেকে। অর্থ মন্ত্রকের অফিসাররা বলেন, এমনি এমনি কি আর উনি প্রধানমন্ত্রীর প্রিয়পাত্র! আসলে সবটাই যোগ-এর যোগাযোগ!
রূপার প্রাপ্তিযোগ
এখন এ এক অন্য রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। গলায় রুদ্রাক্ষ। রাজ্যসভায় ক্ষুব্ধ, বিদ্রোহী বাংলার শাসনের বিরুদ্ধে। দিল্লির দরবারে গুঞ্জন, প্রধানমন্ত্রী নাকি রূপার ভূমিকায় এখন যারপরনাই খুশি। শুধু কৈলাস বিজয়বর্গীয় নয়, খুশি খোদ অমিত শাহ-ও। আর এই কারণে এ বার মন্ত্রিসভাতেও রূপার ঠাঁই হতে চলেছে। তিনি পূর্ণ না হলেও রাজ্যমন্ত্রী হবেন, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ দফতর! এই গুঞ্জনে দিল্লি যখন ম-ম করছে, তখন রাজ্য বিজেপি দফতরে প্রশ্ন, লকেট চট্টোপাধ্যায়ের সক্রিয় রাজনীতির জন্য তাঁর প্রাপ্তিযোগ কী হবে?
সন্তান
আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে। রাজনীতিতেও বাবারা ঈশ্বরী পাটনী। তা সে যে দলই হোক। গুজরাতে আহমেদ পটেল তাঁর পুত্র ফইজালকে এ বার বিধানসভা ভোটে প্রার্থী করবেন। কাশ্মীরে ফারুক আবদুল্লার ভাইঝিকে বিয়ে করেছেন ফইজাল। রাজনৈতিক পরিবার, বাবা ক্রমশ ফেড-আউট। ছেলে ফেড-ইন। গুজরাতের সংখ্যালঘু নেতার পুত্র আজকাল আমদাবাদে গরম গরম বক্তৃতাও দিচ্ছেন। আবার শিবরাজ সিংহ চহ্বাণের পুত্র কার্তিকেয় পুণে থেকে আইনব্যবসার স্নাতক হয়ে এখন বাবার নির্বাচনকেন্দ্রে গিয়ে নানা অনুষ্ঠানে নানা মঞ্চে ভাষণ দিচ্ছেন। শিবরাজ এখনই মানতে রাজি নন, কিন্তু লো-প্রোফাইল কার্তিকেয় আজকাল খেলাধুলো সংক্রান্ত অরাজনৈতিক কর্মসূচিগুলিতে প্রধান অতিথি। কার্তিকেয় আর ফইজাল, দুজনের মধ্যে একটা বিষয়ে দারুণ মিল। দুজনেই গাড়ি নিজে চালাতে খুব ভালবাসে, বিশেষত স্পোর্টস কার।
শঙ্কর কোথায়
হঠাৎ এক সকালে গুজরাতের কংগ্রেস নেতারা আবিষ্কার করলেন, টুইটে রাহুল গাঁধীকেই ‘আনফলো’ করে দিয়েছেন তাঁদের নেতা শঙ্করসিন বাঘেলা। এক সময় নরেন্দ্র মোদীর ঘোর বিরোধিতা করে বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে গিয়েছিলেন। কিন্তু ক’দিন আগে অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করার পর থেকেই কানাঘুষো বাড়তে থাকে। ভোটের মুখে তাঁর মতিগতি বোঝা যাচ্ছে না। তার ওপর এই সময়ই এক সপ্তাহের ছুটি নিয়ে বসেছেন। তা হলে কি তিনি বিজেপিতে যাচ্ছেন? বাঘেলা বলছেন, না। তাতেও থামছে না জল্পনা
আপনি আচরি ধর্ম
বাঙালির তীর্থ কাশীর বিশ্বনাথ মন্দির তৈরি করেছিলেন মরাঠি রানি অহিল্যাবাই হোলকার। তাঁকে নিয়ে বই লিখেছেন লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন। বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বই প্রকাশের সময় সকলের নজর কাড়েন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর হাতে যখন বইটি দেওয়া হয়, তখন ফিতে দিয়ে বাঁধা মোড়কটি নিজেই খোলেন। কিন্তু ফিতেটি ফেলে দেননি। বরং সেটা হাতে পাকিয়ে নিজের পকেটে রেখে দেন। তা দেখে সভাস্থলেই উঠল ‘মোদী-মোদী’ ধ্বনি। মোদী-ভক্তদের মতে, গোটা দেশে ‘স্বচ্ছ ভারত’-এর প্রতীক নরেন্দ্র মোদীর থেকে শেখার আছে অনেক কিছুই। আক্ষরিক অর্থেই তিনি পালন করেন, ‘আপনি আচরি ধর্ম, অপরে শিখাও।’
বিপাকে সঞ্জয়
উপেক্ষিত: সঞ্জয় মিত্র
একেই বলে প্যারাডাইস লস্ট। পরিবহণ সচিব হয়েও সঞ্জয় মিত্র লুটিয়েন্স দিল্লির বাংলোতে যাননি। বাবা-মা’র স্মৃতিবিজড়িত চিত্তরঞ্জন পার্ক ছাড়তে রাজি ছিলেন না। রবিবার চিত্তরঞ্জন ভবনে লাইব্রেরিতে এসে পুরনো বাংলা বই খোঁজার নেশা। মাঝে মাঝে বাজারে ফুচকা ভক্ষণ। এ সব নিয়েই তিনি। কিন্তু এ বার বাঙালি প্রতিরক্ষা সচিবের চিত্তরঞ্জন পার্কের বাড়িতে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ নিরাপত্তা। প্রতিরক্ষা সচিবের জন্য বিশেষ বাংলোর ব্যবস্থা। পাড়ার পার্কেও সকালবেলা হাঁটা বারণ। পরবর্তী ক্যাবিনেট সচিব পদটি হয়তো পাওয়া গেল না। কারণ সেটি রাজস্ব সচিব হাসমুখ আঢিয়া-র জন্যই বরাদ্দ। মোদী-ঘনিষ্ঠ এই গুজরাতি অফিসারটির জন্য বর্তমান ক্যাবিনেট সচিব এক্সটেনশন পেলেন। হিসেবটা এমন, যাতে আঢিয়া অবসর নেওয়ার মুখে ক্যাবিনেট সচিব হয়ে দু’বছর অতিরিক্ত সময় পাবেন। সঞ্জয়ের অতিরিক্ত দু’বছর পাওয়া হল না, কিন্তু বাঙালি প্রতিরক্ষা সচিব মেম্বার অব বিগ ফোর, তা-ই বা কম কিসে!
জয়ন্ত ঘোষাল,অগ্নি রায়, অনমিত্র সেনগুপ্ত, দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রেমাংশু চৌধুরী