দিল্লি ডায়েরি

১৯১৬-তে বছর সতেরোর কমলার বিয়ে হয় জওহরলাল নেহরুর সঙ্গে। জওহরলাল তাঁর ‘বারাত’ নিয়ে এসেছিলেন এই বাড়িতেই। শোনা যায়, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ইন্দিরা গাঁধীও এসেছিলেন তাঁর মায়ের জন্মস্থান দেখতে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৮ ০০:০০
Share:

ঐতিহাসিক: বিয়ের দিন কমলা ও জওহরলাল নেহরু। ছবি: গেটি ইমেজেস

এই বাড়িতেই বিয়ে জওহরলাল-কমলার

Advertisement

ইলাহাবাদের আনন্দ ভবন, দিল্লির তিন মূর্তি ভবন বা দশ জনপথ, কিংবা এক নম্বর সফদরজং রোডের মতো এ বাড়ির খ্যাতি নেই। অথচ পুরনো দিল্লির সীতারাম বাজারের ‘হসকর হাভেলি’র সঙ্গে গাঁধী পরিবারের যোগাযোগ একেবারে শিকড়ে। ১৮৯৯-তে এই বাড়িতেই কাশ্মীরি ব্রাহ্মণ জওহরমল কল-এর কন্যা কমলার জন্ম। ১৯১৬-তে বছর সতেরোর কমলার বিয়ে হয় জওহরলাল নেহরুর সঙ্গে। জওহরলাল তাঁর ‘বারাত’ নিয়ে এসেছিলেন এই বাড়িতেই। শোনা যায়, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ইন্দিরা গাঁধীও এসেছিলেন তাঁর মায়ের জন্মস্থান দেখতে। পরে অবশ্য গাঁধী পরিবারের কারও আনাগোনার খবর মেলেনি এখানে। জবরদখলের শঙ্কায় ও প্রোমোটারদের লোভে ঐতিহ্যমণ্ডিত বাড়িটি হারিয়ে যেতে বসেছে শুনে দিল্লি হাইকোর্ট ফরমান জারি করেছে।

Advertisement

উপহার

অরুণ জেটলি অসুস্থ। হাসপাতাল থেকে ফিরেছেন, চিকিৎসা চলছে বাড়ি বসেই। বিশ্রামের অবসরে গল্পগুজবে উঠে এল কিছু দিন আগের এক ঘটনা। সন্ধেয় এক বিয়েবাড়ি যাবেন, গিন্নি নতুন পাজামা-পাঞ্জাবি দিয়ে গিয়েছেন। অরুণ শুধু ভাবছেন, এই নীল র’সিল্কের পাঞ্জাবিটা কবে কিনলাম, বেশ দেখতে! দেখলেন, কাঁধের কাছে লেখা ‘বিশ্ব বাংলা’। মনে পড়ে গেল, এটাই ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাঠানো বিজয়ার উপহার। এনফোর্সমেন্টের তদন্ত যা-ই হোক না কেন, উপহারের মর্যাদা রেখেছেন অর্থমন্ত্রী।

মুখে কুলুপ

এমনিতে বলিয়ে-কইয়ে মানুষ এম জে আকবর, কিন্তু বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই মুখে যেন কুলুপ এঁটে থাকেন। সাংবাদিকরা কারণ জানতে চাওয়ায় ঠাট্টার ছলে বলেছেন, সাউথ ব্লকের বোর্ডে নাকি লেখা আছে, নীরবতা স্বাস্থ্যের পক্ষে হানিকর নয়। বাংলা ও বাঙালি নিয়ে অবশ্য আকবর নীরবতা ভাঙছেন। রাজধানীর বেঙ্গল অ্যাসোসিয়েশনের হীরক জয়ন্তী বর্ষ উপলক্ষে ২১ এপ্রিল ‘অমরেশ গঙ্গোপাধ্যায় স্মারক বক্তৃতা’য় হাজির তিনি। বক্তৃতার বিষয়: গোখলের সেই স্মরণীয় উক্তি, বাঙালি আজ যা চিন্তা করে, ভারত তা ভাবে এক দিন পরে, এই কথাটা কি আজও প্রাসঙ্গিক? বেঙ্গল অ্যাসোসিয়েশনের দীর্ঘ সময়ের কর্ণধার, প্রয়াত অমরেশবাবু ছিলেন আদ্যোপান্ত বামপন্থী। তাঁর স্মারক বক্তৃতায় বিজেপি মন্ত্রীর উপস্থিতি দেখে অনেকেই অবাক।

আবার বই

মনমোহন সিংহের জমানায় কী ভাবে সরকারের কাজকর্ম চলত, তা খোলসা করে দিয়েছিলেন সঞ্জয় বারু। প্রধানমন্ত্রীর মিডিয়া উপদেষ্টা লিখেছিলেন বই: ‘দি অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’। রাজনীতিতে ঝড় তোলা সেই বইকে ভিত্তি করেই এখন তৈরি হচ্ছে চলচ্চিত্র। সেখানে মনমোহনের ভূমিকায় অভিনয় করছেন স্বঘোষিত নরেন্দ্র মোদী-ভক্ত অনুপম খের। এ বার ক্ষমতার করিডরে জোর গুঞ্জন, সদ্য অবসর নেওয়া এক আমলা একই ভাবে কলম ধরেছেন। বিষয়, নরেন্দ্র মোদী জমানায় কী ভাবে সরকারি কাজকর্ম চলবে। ২০১৯-এ লোকসভা ভোটের বছরেই প্রকাশিত হবে সেই বই। এবং তাতে নাকি রীতিমতো বোমা ফাটতে পারে! কিন্তু লেখকটি কে? যাঁরা জানেন, তাঁরা একেবারে স্পিকটি নট। আর যাঁরা জানেন না, তাঁদের জল্পনাই ভরসা।

যুদ্ধবিমানে

আরোহী: যুদ্ধবিমানে সঞ্জয় মিত্র

তিনি চিত্তরঞ্জন পার্কের বাসিন্দা, একেবারে মাছে-ভাতে বাঙালি। প্রতিরক্ষা সচিব হয়েছেন, কিন্তু দিল্লির বাঙালিপাড়ার মায়া কাটাতে পারেননি। সেই সঞ্জয় মিত্রকে পয়লা বৈশাখের আগের দিন দেখা গেল বায়ুসেনার পাইলটের পোশাকে! হরিয়ানার সিরসায় বায়ুসেনার ঘাঁটিতে সিঁড়ি বেয়ে তরতরিয়ে উঠে পড়লেন সুখোই বিমানের ককপিটে। তাঁকে নিয়ে উড়ল যুদ্ধবিমান। বায়ুসেনার যুদ্ধাভ্যাসে একেবারে হাতে-কলমে যোগ দিলেন প্রতিরক্ষা সচিব। বাঙালি আমলার ফিটনেস দেখে হাঁ বায়ুসেনার উপপ্রধান এয়ার মার্শাল এস বি দেও। বায়ুসেনার শীর্ষপদে বাঙালিকে দেখা গিয়েছে। কিন্তু বাঙালি প্রতিরক্ষা সচিবের যুদ্ধবিমানে চড়ার নমুনা তো আর রোজ মেলে না!

দিগ্বিজয়ের ইচ্ছা

শুরু হয়েছিল দশেরায়। ৩৩০০ কিলোমিটারের নর্মদা পরিক্রমা সম্প্রতি সমাপ্ত করলেন দিগ্বিজয় সিংহ। হঠাৎ নর্মদা পরিক্রমা? ‘ডিগ্গিরাজা’র ঘনিষ্ঠজনেরা বলছেন, এর পিছনে আছে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রিত্বের অভিলাষ। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে চান কংগ্রেসের অনেকে, কুর্সির দিকে চোখ কমল নাথেরও। সেই কমল নাথকেই দেখা গেল নর্মদা অভিযানের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে। পরিক্রমায় সঙ্গী ছিলেন দিগ্বিজয়ের স্ত্রী অমৃতাও। জল্পনা চলছে, ২০১৯-এ অমৃতা কি নির্বাচনে লড়বেন? অমৃতা নিজে বলছেন, ধৈর্য ধরুন। আর দিগ্বিজয়কে প্রশ্ন করলে বলছেন, আর যা-ই করি, পকোড়া ভাজব না!

জয়ন্ত ঘোষাল, প্রেমাংশু চৌধুরী

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন