Delhi Diary

দিল্লি ডায়েরি: রাজ্যসভায় ফিরছেন গুলাম নবি আজাদ?

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে তাঁর রাজ্যসভায় মেয়াদ ফুরিয়েছে। দেড় বছর হতে চলল, তাঁকে কিন্তু এখনও বাংলো ছাড়তে হয়নি।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী, অগ্নি রায় এবং অনমিত্র সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২২ ০৪:৩৯
Share:

দিল্লির পাঁচ নম্বর সাউথ অ্যাভিনিউ লেনের বাড়ির বাসিন্দা কি ফের রাজ্যসভায় যেতে চলেছেন? রাহুল গান্ধী তাঁকে ফের রাজ্যসভায় পাঠাতে চাননি। তা হলে কি রাষ্ট্রপতি-মনোনীত সাংসদ হিসেবে তিনি রাজ্যসভায় যাচ্ছেন? গুলাম নবি আজাদকে নিয়ে রহস্য জমাট বাঁধছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে তাঁর রাজ্যসভায় মেয়াদ ফুরিয়েছে। দেড় বছর হতে চলল, তাঁকে কিন্তু এখনও বাংলো ছাড়তে হয়নি। জনপথে প্রয়াত রামবিলাস পাসোয়ানের বহু দিনের বাংলো থেকে তাঁর ছেলে চিরাগকে উৎখাত করা হয়েছে। কিন্তু জম্মু-কাশ্মীরের কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদের ক্ষেত্রে মোদী সরকার উদার। তাঁর অবসরের দিন প্রধানমন্ত্রী চোখের জল ফেলে বলেছিলেন, তিনি গুলাম নবিকে অবসর নিতে দেবেন না। এর পর গুলাম নবি পদ্মভূষণ পেয়েছেন। রাহুল গান্ধীর ইডি-তে হাজিরার সময় গোটা দল রাস্তায় নামলেও তিনি অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে বিশ্রাম নিয়েছেন। গুলাম নবিকে কেন বাংলো ফাঁকা করতে বলা হচ্ছে না, সে প্রশ্ন ওঠায় নগরোন্নয়ন মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী জবাব দিয়েছেন, যাঁরা অন্য পদে নিযুক্ত হন, তাঁদের আলাদা ব্যাপার। পুরীর এই জবাব গুলাম নবিকে নিয়ে জল্পনা আরও বাড়িয়েছে।

Advertisement

আলোচনা: গুলাম নবি আজাদের বাসভবনে সৌজন্য সাক্ষাতে অশোক গহলৌত

টিভি দেখে জানা

দেশের আগামী রাষ্ট্রপতি কে হবেন, তা নিয়ে জল্পনা সব শিবিরে। বিরোধীরা একটি-দু’টি নাম প্রস্তাব করলেও, শাসক শিবিরের মুখে কুলুপ। রোজই উঠে আসছে একাধিক নাম। বিজেপি নেতাদের মতে, শেষ পর্যন্ত কার নামে টিক চিহ্ন পড়বে, তা কেবল জানেন এক জনই। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলছেন, রেজিমেন্টেড দলে এমনটাই হয়। আগে থেকে কিছুই জানা যায় না। বললেন, “আমাকে যে দলের সভাপতি করা হবে, তা আধ ঘণ্টা আগেও জানতাম না। কেন্দ্রীয় নেতা বি এল সন্তোষ হঠাৎ ফোন করে বললেন, “তোমাকে দায়িত্ব দিতে চাই।” জানতে চাইলাম, কী দায়িত্ব? সন্তোষ মজা করলেন, সরসঙ্ঘচালকের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে না। দায়িত্ব টিভিতে দেখে নিয়ো।” টিভি দেখেই সুকান্ত জানলেন, দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে দলের রাজ্য সভাপতি করা হয়েছে তাঁকে।

Advertisement

রাষ্ট্রপতি হতে চেয়ে...

সবে শেষ হয়েছে কনস্টিটিউশন ক্লাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা রাষ্ট্রপতি প্রার্থী বাছাই নিয়ে বিরোধী দলের বৈঠক। মোট ১৭টি দলের প্রতিনিধিদের উপস্থিতি চাট্টিখানি বিষয় নয়! তৃণমূলের তরফে অনুষ্ঠানের মূল ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে মুখপাত্র সুখেন্দুশেখর রায়। সব সেরে তিনি সন্ধ্যা নাগাদ ক্লাব থেকে বেরোতে গিয়ে বেগতিকে! তাঁকে পাকড়াও করলেন এক ব্যক্তি। পরিচয় দিয়ে জানালেন, তিনি অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক দয়াশঙ্কর আগরওয়াল। দাবি, ‘দিদি’র সঙ্গে কথা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন জমাও দেওয়া হয়ে গিয়েছে! এখন তৃণমূলের পূর্ণ সমর্থন চাই! হতভম্ব সুখেন্দুশেখর। ওই ব্যক্তি তাঁর হাতে গুঁজে দিয়েছেন ভিজ়িটিং কার্ড আর মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রমাণ। ধাতস্থ হয়ে সুখেন্দুশেখর তাঁকে আশ্বস্ত করে বললেন, কোনও চিন্তা নেই! সমর্থন থাকবে! তার পর বিড়বিড় করে ‘সব পাগলই আমার কাছে কেন যে আসে’ বলতে বলতে অদৃশ্য হয়ে গেলেন দূরে দাঁড়ানো গাড়ির ভিতরে।

স্মৃতির প্রদর্শনী

দিল্লির বিকানের হাউসের হলঘর। প্রয়াত পুত্রের ছবির সামনে পিতা। পাশে পুত্রবধূ স্বাতী চাওলা। পোড়খাওয়া রাজনীতিক সীতারাম ইয়েচুরি তখন আর সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক নন। শুধুই পুত্রহারা বাবা। ছেলের তোলা ছবির সামনে দাঁড়িয়ে যাঁর চোখের জল আটকানো মুশকিল হয়ে পড়ে। গত বছর এপ্রিলে কোভিড সীতারাম ইয়েচুরির পুত্র আশিসের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল। মাত্র ৩৫ বছর বয়সে। পেশায় সাংবাদিক আশিসের ফোটোগ্রাফির শখ অনেক আগে থেকেই। সেই সব ছবি নিয়েই প্রদর্শনী হল। স্বাতী সাজিয়েছিলেন প্রদর্শনীটি।

স্মরণ: প্রয়াত আশিস ইয়েচুরি

একটি কথোপকথন

দিল্লিতে ইডি-র সদর দফতর। রাহুল গান্ধীর জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তিনি বার হননি। গরমে ‘ডিউটি’-র শেষে পুলিশ কর্মীরাও ক্লান্ত। এক জনের খাকি উর্দির পকেটে মোবাইল বাজল। ফোনের ও-প্রান্তে স্ত্রী। এর পরে স্ত্রী-র প্রশ্ন, লাঠিধারী স্বামীর কথাবার্তা— কোথায় এখন? ইডি-র দফতরের সামনে। এখনও ডিউটি শেষ হয়নি? না, রাহুল গান্ধী এখনও বার হননি যে! টিভিতে যে দেখাচ্ছে, রাহুলের জিজ্ঞাসাবাদ শেষ! কেন মিথ্যে কথা বলছ? কথা শেষ করে বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকদের দিকে কটমট করে তাকালেন দিল্লি পুলিশের উর্দিধারী।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন