Delhi Diary

দিল্লি ডায়েরি: কাঁচা বেগুন, শতাব্দীর শাড়ি ও দিল্লিতে মমতা

পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দুর্নীতি ঘিরে রাজ্য যখন তোলপাড়, তখন বৈঠক ঘিরে যে আশঙ্কার মেঘ জমেছিল, তা মুহূর্তে উড়ে যায় মমতার প্রশ্নে।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী, অগ্নি রায় এবং অনমিত্র সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২২ ০৫:০৩
Share:

দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধি বিতর্কে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাড়ির বাগান থেকে তুলে আনা কাঁচা বেগুন কামড়ে লোকসভায় হইচই ফেলে দিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের দিল্লির বাসভবনের বৈঠকে কাকলিকে দেখতেই প্রশ্ন করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়— “কাঁচা বেগুন তুমি খেলে কী করে!” হেসে ফেলেন সকলে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দুর্নীতি ঘিরে রাজ্য যখন তোলপাড়, তখন বৈঠক ঘিরে যে আশঙ্কার মেঘ জমেছিল, তা মুহূর্তে উড়ে যায় মমতার প্রশ্নে। সাংসদ শতাব্দী রায়ের উজ্জ্বল হলুদ শাড়িরও প্রশংসা করেন মমতা। এ দিকে মমতার উড়ান দিল্লি বিমানবন্দরে অবতরণের সময়ের ঠিক আগে ঝেঁপে বৃষ্টি। প্রমাদ গোনেন সুখেন্দু। ফ্লাইট ঘুরে চলে যাবে না তো! তাঁর বাড়িতেই বিকেলে সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে মমতার। সংসদ থেকে কার্যত ছুটে এসে জল যাতে না জমে, তার তদারকি শুরু করেন তিনি। জানতে পারেন, বৃষ্টি শুরুর আগে, অর্থাৎ নির্দিষ্ট সময়ের আগেই দিল্লিতে নেমে পড়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। সুখেন্দুর স্বগতোক্তি, সবই ঈশ্বরের লীলা!

Advertisement

অভিনব: সংসদে কাঁচা বেগুনে কামড় দিয়ে মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে কাকলি ঘোষ দস্তিদার

উদ্ধব ঠাকরের ‘সঞ্জয়’

বাল ঠাকরে ঠিক যে ভাবে কথা বলতেন, তিনি নাকি হুবহু সেই ‘ঠাকরি ভাষা’-তেই লিখতে পারেন। বাল ঠাকরের বায়োপিক ঠাকরে-র কাহিনিও তাঁরই লেখা। শিবসেনার মুখপত্র সামনা-র সম্পাদক সঞ্জয় রাউত গত কয়েক বছরে এতটাই ক্ষমতাশালী হয়ে উঠেছিলেন যে, মুম্বইয়ে অনেকে বললেন, তিনি ছিলেন উদ্ধব ঠাকরের ‘সঞ্জয়’। উদ্ধব তাঁর চোখ দিয়েই দুনিয়া দেখতেন, এবং উদ্ধবের পতনের পিছনেও তিনি। তাঁর ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠা শিবসেনার মাঠময়দান থেকে উঠে আসা নেতাদের পছন্দ হয়নি। দলের রাশ যে হাতছাড়া হচ্ছে, তা-ও সঞ্জয় বালাসাহেবের পুত্রকে ঠিক সময় জানিয়ে উপদেশ দিতে পারেননি। উদ্ধব ঠাকরে আর মহারাষ্ট্রের ক্ষমতায় নেই। সঞ্জয় রাউতের বোলচাল আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এখন তিনি ইডি-র হেফাজতে। মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক শিবিরে গুঞ্জন, বেশি দিন জেলে থাকলে সঞ্জয় সেই অভিজ্ঞতা নিয়েই সিনেমার নতুন চিত্রনাট্য লিখে ফেলতে পারেন! না হলে, মহারাষ্ট্রের সরকার পতনের গল্প তো রয়েইছে।

Advertisement

অমরনাথে কার্ড-ঝঞ্ঝাট

ঘটা করে প্রত্যেক অমরনাথ তীর্থযাত্রীর নামে রেডিয়ো ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন কার্ড জারি করেছিল কেন্দ্র। উদ্দেশ্য, প্রত্যেক তীর্থযাত্রীকে প্রযুক্তির মাধ্যমে নজরে রাখা। কিন্তু অমরনাথে হড়পা বান নামতেই সামনে চলে এল প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতা। জলের ধাক্কায় নিখোঁজ তীর্থযাত্রীদের অবস্থান খুঁজে বার করতে ব্যর্থ প্রযুক্তি। সেনা ও উদ্ধারকারীরাই খুঁজে বার করলেন নিখোঁজ ও মৃতদের। প্রশাসন বলছে, জলের ধাক্কায় অনেকের ওই কার্ড ভেসে গিয়েছিল, বা অনেকে এমন ভাবে কাদায় মাখামাখি ছিলেন যে, কার্ড অচল হয়ে পড়ে। তাই সেগুলির অবস্থানের খোঁজ করা সম্ভব হয়নি। আপাতত ওই ব্যর্থতা থেকেই আগামী বছর আরও উন্নত ধরনের কার্ড ব্যবহারের পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র।

সংসদে ট্র্যাকের রানি

ছোটবেলায় ‘জেনারেল নলেজ’-এ আপনার পুরো নাম মুখস্থ করতে গিয়ে ঘাম ছুটে গিয়েছিল! সংসদে এসে এ কথা শুনে হাসি থামছে না পি টি উষার। রাজ্যসভার নতুন মনোনীত সাংসদ উষা চলতি অধিবেশনেই শপথ নিয়েছেন। প্রথম অধিবেশনেই ‘পায়োলি এক্সপ্রেস’ দৌড় শুরু করে দিয়েছেন। ডোপিং প্রতিরোধ বিল নিয়ে আলোচনাতেও যোগ দিয়েছেন। যেন পি টি উষা বলবেন বলেই এই অধিবেশনে ডোপিং প্রতিরোধ বিল পেশ হয়েছিল। উষা বলেছেন, সমস্ত ক্রীড়া প্রতিযোগিতাকে ‘ন্যাশনাল অ্যান্টি-ডোপিং এজেন্সি’-র আওতায় নিয়ে আসা হোক। আইন ভাঙলে কড়া ব্যবস্থা করা হোক। উষা জানিয়েছেন, কেরলের প্রত্যন্ত গ্রাম পায়োলিতে কোনও খেলাধুলার পরিকাঠামোই ছিল না। সেখান থেকে উঠে এসে তিনি ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সংসদে আসার পরে তাঁকে নরেন্দ্র মোদী অভিনন্দন জানিয়েছেন।

আদর্শ: নতুন ভূমিকায় পি টি উষা

এত টাকা ছিল!

বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। ঘরভর্তি লোক থাকায় বাইরেই অপেক্ষা করছিলেন তিনি। হঠাৎ দরজা খোলায় সুকান্তকে দেখতে পেয়ে আগেই নিজের ঘরে ডেকে নেন নড্ডা। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে সরগরম বাংলা। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বান্ধবীর বাড়ি থেকে নগদ টাকা উদ্ধারের আঁচ এসে পড়েছে দিল্লিতেও। তাই সুকান্তকে বসতে বলেই নড্ডার প্রশ্ন, “ইতনা পয়সা থা পার্থকে পাস!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন