Newsletter

সমাপতন? না কি রাজনৈতিক ছক? সত্যের উন্মোচন জরুরি

রাজনৈতিক ভাবে অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ এক সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়াল পশ্চিমবঙ্গ। মুদ্রা প্রত্যাহারের যে সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় সরকার নিয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলই সে সিদ্ধান্তের সবচেয়ে উচ্চকিত বিরোধিতা করেছে।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৭ ০৩:৪৮
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

রাজনৈতিক ভাবে অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ এক সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়াল পশ্চিমবঙ্গ। মুদ্রা প্রত্যাহারের যে সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় সরকার নিয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলই সে সিদ্ধান্তের সবচেয়ে উচ্চকিত বিরোধিতা করেছে। স্বাভাবিক ভাবেই বিজেপি-তৃণমূল সঙ্ঘাত তীব্রতর হয়েছে। এর মাঝেই কিছু গ্রেফতারি, পাল্টা গ্রেফতারি, মামলা, পাল্টা মামলা দেখা গিয়েছে। পরিস্থিতির কারণে সেগুলিতে অবধারিত ভাবে রাজনীতির রং লাগানোর চেষ্টা হয়েছে। এমনই এক পরিস্থিতিতে উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের ফল বেরোল এবং বিজেপি গোটা ভারতে নিজের অস্তিত্বকে আরও বলশালী করে তুলল। লখনউয়ের মসনদে যখন গেরুয়া আসন পাতার তোড়জোড়, কলকাতায় তখনই নারদ স্টিং মামলার রায় বেরিয়েছে। এই মামলারও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ হয়েছে। সবটাই সমাপতন, নাকি কোথাও কোনও কিছু পরিকল্পিত ঘটছে? এ নিয়ে জোর তর্ক আজ। কিন্তু তর্কের নিষ্পত্তি কোথাও নেই। রয়েছে শুধু ধুম্রজাল, রয়েছে শুধু রাজনৈতিক মেঘাচ্ছন্নতা।

Advertisement

যে সন্ধিক্ষণে পশ্চিমবঙ্গ আজ উপনীত, সেই সন্ধিক্ষণকে ব্যাখ্যা করার দু’টি দৃষ্টিকোণ রয়েছে। একটি দৃষ্টিকোণ বলছে, সবটা সমাপতন নয়। পশ্চিমবঙ্গ সম্পর্কে বিজেপি-র উচ্চাকাঙ্ক্ষা, বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা সংক্রান্ত কেলেঙ্কারির অভিযোগ নিয়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তত্পরতা বৃদ্ধি, তৃণমূলের একের পর এক নেতার জেলযাত্রা, তার জেরে তৃণমূলের উচ্চকিত বিজেপি-বিরোধ, তার পরে নারদ স্টিং মামলার তদন্ত ভারও সিবিআই-এর হাতে চলে যাওয়া— এই প্রতিটি ঘটনা এক সূত্রে গাঁথা, কোনওটিই বিচ্ছিন্ন নয় বলে সে দৃষ্টিকোণের দাবি। বিজেপি-র রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার সঙ্গে প্রতিহিংসা পরায়ণতার অভিযোগটাকেও ছুড়ে দিচ্ছেন কেউ কেউ। বস্তুত, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর কণ্ঠস্বরেও তেমনই আভাস।

অপর একটি দৃষ্টিকোণ বলছে, কোথাও কোনও ষড়যন্ত্র নেই, রাজনৈতিক ভ্রান্তি এবং অপরাধগুলো পর পর ঘটেছিল, ফলটাও পর পর ফলছে। এই দৃষ্টিকোণ অনুসারে, যে সমাপতন দেখে আজ আশ্চর্য হচ্ছে তৃণমূল, সে সমাপতনের ছকটা নিজেদের অজান্তে কষে রেখেছিল তৃণমূলই।

Advertisement

পরিস্থিতি বিভ্রান্তিকর আজ। ধুম্রজালটা কেটে গিয়ে সত্যের স্পষ্ট উন্মোচন জরুরি। যদি অপরাধ কিছু ঘটে থাকে, যদি অন্যায় কিছু থেকে থাকে, তা হলে অবশ্যই তার বিচার হোক, শাস্তি হোক অপরাধীর। কিন্তু এত তত্পরতার নেপথ্যে যদি সত্যানুসন্ধানের চেয়েও বড় ভূমিকা থাকে কোনও রাজনৈতিক সঙ্কীর্ণতার, তা হলে কিন্তু আজকের সন্ধিক্ষণ গণতন্ত্রের পক্ষে শুভ নয়।

আবার বলি, সত্যের উন্মোচনের অপেক্ষায় রইলাম। কারণ সত্য এবং একমাত্র সত্যই স্বীকার্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন