শাহি সমাচার
CBI

সিবিআই-কাণ্ডে নরেন্দ্র মোদীর কি কোনও দায়িত্ব নেই?

সিবিআইকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করার কাজটা মোদী সরকার আর্টের পর্যায়ে নিয়ে গেল। লিখছেন জয়ন্ত ঘোষালপ্রশ্ন, এত দিন ধরে মোদী কেন এ ব্যাপারে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি? কেন আস্থানাকে গুজরাত থেকে এনে দ্বিতীয় ব্যক্তির মর্যাদা দিয়ে তাঁর হাতেই সমস্ত ক্ষমতা অর্পণ করে খোদ সিবিআই প্রধানকে অকেজো করে দেওয়া হয়?

Advertisement

জয়ন্ত ঘোষাল

শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৮ ০০:০০
Share:

নয়াদিল্লিতে সিবিআইয়ের সদর দফতর। ছবি: পিটিআই।

সিবিআই এখন যুদ্ধক্ষেত্র। সিবিআই নামক দেশের এক গুরুত্বপূর্ণ তদন্তকারী সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতাই ধূলায় লুণ্ঠিত। সিবিআই প্রধান তাঁর নম্বর টু-র বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠিয়েছেন। আবার নম্বর টু খোদ প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন পাল্টা দুর্নীতির। এখন তো নাটকীয় ভাবে দু’জনকেই ছুটিতে পাঠিয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের কথা বলছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।

Advertisement

এই দুই প্রধানের কলহ আজ নয়, শুরু হয়েছে বেশ কিছু দিন থেকেই। প্রশ্ন, এত দিন ধরে মোদী কেন এ ব্যাপারে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি? কেন আস্থানাকে গুজরাত থেকে এনে দ্বিতীয় ব্যক্তির মর্যাদা দিয়ে তাঁর হাতেই সমস্ত ক্ষমতা অর্পণ করে খোদ সিবিআই প্রধানকে অকেজো করে দেওয়া হয়? সমস্যা যখন হাতের বাইরে চলে গেল তখন মাঝরাতে ক্যাবিনেট বৈঠক ডেকে দু’জনকে ছুটিতে যেতে বলা হচ্ছে কেন?

মোদী সরকার বলেছিল দুর্নীতি দমনের কথা। বলেছিল দক্ষ সুশাসনের কথা। এটা কি সেই সুদক্ষ প্রশাসনের নমুনা? সিবিআই প্রধান সাংবিধানিক পদ। দু’বছর তাঁর কাজের মেয়াদও সুনির্দিষ্ট। এ হেন সাংবিধানিক প্রধানকে সংস্থার প্রধানের পদ থেকে কি সরানো যায়? বলা হচ্ছে, টুজি দুর্নীতির জন্য অবসর গ্রহণের ১২ দিন আগেই রঞ্জিত সিনহাকে অবসর নিতে বাধ্য করা হয়। বিজয় মাল্যর পালিয়ে যাওয়া, গোধরা কাণ্ডে সিবিআই তদন্তে অভিযুক্তদের বেকসুর খালাস করার জন্য আদালতে সক্রিয় হওয়া— এ সব তো সিবিআইকে দিয়েই করানো হয় বলে অভিযোগ।

Advertisement

বর্মা-আস্থানা বিতর্ক সিবিআইকে কলুষিত করছে। ফাইল চিত্র

বিরোধী নেতা থাকার সময়ে নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, সিবিআই মানে হল কংগ্রেস ব্যুরো অফ ইন্ডিয়া। কংগ্রেস নাকি সিবিআইয়ের সমস্ত তদন্তকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। আমিও অস্বীকার করছি না যে কংগ্রেস সিবিআইকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করেছে। আবার দেবগৌড়া, গুজরালের সময় বোফর্সকে সামনে রেখে কংগ্রেসকেও কী ভাবে ব্ল্যাকমেল করার চেষ্টা হয়, কী ভাবে কংগ্রেস তখন গুজরালকে সমর্থন প্রত্যাহারের হুমকি দেয় তা-ও ইতিহাস। ইন্দ্রকুমার গুজরালের আত্মজীবনীতে সীতারাম কেশরীর হুমকির কথা বলা হয়েছে। যোগিন্দর সিংহ তখন সিবিআই প্রধান ছিলেন। তাঁর বইতেও বোফর্স তদন্ত নিয়ে রাজনৈতিক চাপের কথা বলা হয়।

সমস্যা হচ্ছে, মোদী আসার পর সিবিআইকে নিয়ে কী করলেন! সিবিআই খাঁচায় বাঁধা তোতাপাখি। তা থেকে তোতাপাখিকে উড়িয়ে দেওয়ার কথা ছিল মোদীর। তার বদলে সিবিআইকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করার কাজটাকে মোদী সরকার আর্টের পর্যায়ে নিয়ে গেল।

বর্মা-আস্থানা বিতর্ক শুধু দুই ব্যক্তির ইগোর লড়াই নয়। সিবিআই প্রধান হলেন নরেন্দ্র মোদী। এই বেনজির ঘটনায় তাঁর কি কোনও দায়িত্ব নেই?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement