Cricket

Pakistan Cricket: পাক ক্রিকেটের সংস্কৃতির সংস্কার করা বাবর এখন শোলের জয়-বীরু

হারলেই দোষারোপ, গালিগালাজ, অন্তর্ঘাতের গন্ধ খোঁজা পাকিস্তান ক্রিকেটে রীতি। সেখানে বিশ্বকাপে হারার পর বাবর একই সঙ্গে শোলের জয় এবং বীরু।

Advertisement

অনির্বাণ মজুমদার

শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২১ ১২:৫৬
Share:

একই সুতোয় গোটা দলকে বেঁধেছেন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম। ছবি: এএফপি

শুরুতে ফ্লাশব্যাকে যাওয়া প্রয়োজন।

Advertisement

২০০৭ সাল। প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ঠিক আগের ঘটনা। পাকিস্তানের সাজঘরে শোয়েব আখতার, শাহিদ আফ্রিদি এবং মহম্মদ আসিফের মধ্যে তুমুল ঝামেলা হয়েছিল। শোয়েব ব্যাট দিয়ে পিটিয়েছিলেন আসিফকে। দোষ চাপিয়েছিলেন আফ্রিদির ঘাড়ে। দল থেকে ছেঁটে ফেলা হয়েছিল শোয়েবকে।

২০১৬ সাল। পাকিস্তান সুপার লিগের ম্যাচে আহমেদ শেহজাদ ছক্কা মেরেছিলেন ওয়াহাব রিওয়াজকে। পরের বলেই শেহজাদকে বোল্ড করে তাঁর কাছে গিয়ে কান ফাটানো চিৎকার করেছিলেন ওয়াহাব। মাঠেই হাতাহাতি, মারামারি লেগে গিয়েছিল দু’জনের। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড মোটা টাকা জরিমানা করেছিল দু’জনকে।

Advertisement

পাক বোর্ডের এখনকার চেয়ারম্যান রামিজ রাজাও কম যান না। মহম্মদ আমিরকে পাকিস্তানের হয়ে খেলতে দেওয়া উচিত কিনা, তা নিয়ে একটি টেলিভিশন শো-তে আলোচনায় বসেছিলেন রামিজ এবং মহম্মদ ইউসুফ। পাকিস্তান টিভি-তে সেই আলোচনা এমন জায়গায় পৌঁছেছিল, দু’জনের মধ্যে তুমুল কথাকাটাকাটি শুরু হয়ে যায়। সেখান থেকে গালিগালাজ, ব্যক্তিগত ও ধর্মীয় আক্রমণ।

শাহিদ আফ্রিদি বিদায়ী ম্যাচ খেলতে চেয়ে ঝামেলায় জড়িয়েছিলেন জাভেদ মিয়াঁদাদের সঙ্গে। এর সঙ্গে ম্যাচ গড়াপেটা, এমনকী দাউদ ইব্রাহিমের নামও জড়িয়ে গিয়েছিল। শোনা যায়, মিয়াঁদাদের বেয়াই দাউদ নাকি আফ্রিদিকে ফোন করে খুনের হুমকিও দিয়েছিলেন।

পাকিস্তান ক্রিকেট দলের উল্লাস। ছবি: পিটিআই

তিনটি ছক্কা মেরে অস্ট্রেলিয়াকে জেতানো ম্যাথু ওয়েডের ক্যাচ ফেলা হাসান আলিকে ছিঁড়ে খাচ্ছেন পাকিস্তানী সমর্থকরা। বাবর তাঁদের চুপ করিয়ে দিয়ে বলেছেন, ‘‘কেউ ক্যাচ ফস্কাতেই পারে। খেলায় এরকম হতেই পারে। হাসান আমাদের দলের অন্যতম সেরা বোলার। বহু ম্যাচে আমাদের জিতিয়েছে। আমি ওর সঙ্গে আছি। সবার রোজ ভাল যায় না। রোজ ভাল খেলা সম্ভবও নয়। ওর জন্যও দিনটা ভাল ছিল না। এখন সবার আগে ওকে চাঙ্গা করতে হবে।’’

হাসান ক্যাচ ফেলার সঙ্গে সঙ্গে শোয়েব মালিক এসে তাঁর পিঠ চাপড়ে দিয়ে চাঙ্গা করে যান। এই সংস্কৃতি বাবরের পূর্বসূরিদের ইতিহাসে নেই।

পাকিস্তান ক্রিকেটে এই বদলে যাওয়া সংস্কৃতির আর এক মুখ মহম্মদ রিজওয়ান। সেমিফাইনালের কয়েক ঘণ্টা আগে বুকের গুরুতর সংক্রমণ নিয়েও হাসপাতালের আইসিইউ-তে শুয়ে শুয়ে তিনি খেলার ছক কষেছেন। বাবর থেকে শুরু করে হাসপাতালের ভারতীয় চিকিৎসক, যাঁকে পেয়েছেন বলেছেন, ‘‘দয়া করে আমাকে মাঠে নামার মতো জায়গায় পৌঁছে দিন। আমি খেলতে চাই।’’

এখন শুধু প্রাণ ভরে খেলতে চাইছে পাকিস্তান। সেই সঙ্গে মন ভরানো ক্রিকেট উপহার দিতে চাইছেন বাবররা। একটা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পাঁচটা ম্যাচ জেতা শুধু নয়, পাকিস্তানের ক্রিকেট সংস্কৃতির আমূল সংস্কার করে দিলেন শোলের জয়-বীরু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন