Sudip Bandyopadhyay

দিল্লি ডায়েরি: শালের ঐতিহ্যেই আস্থা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের

সুদীপবাবু যখন রঙিন শাল পরেন, বুঝতে হবে সেগুলি তাঁকে স্ত্রী নয়না বন্দ্যোপাধ্যায় উপহার দিয়েছেন! নিজেই এই তথ্য জানিয়েছেন তিনি!

Advertisement

অগ্নি রায় ও অনমিত্র সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:০০
Share:

সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে সাংসদদের পরনে রংবাহারি সোয়েটার, কার্ডিগান, চাদর, মাফলার, জ্যাকেট, ব্লেজ়ার! কিন্তু পুরুষ সাংসদদের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় গত এক দশক ধরেই শালের ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। শীতকালে অধিবেশনকক্ষে তাঁকে শাল ছাড়া ভাবাই যায় না। আজকাল ডেরেক ও’ব্রায়েনকেও নিত্যনতুন শাল পরতে দেখা যাচ্ছে। কাশ্মীরের ফারুক আবদুল্লাও পরেন মহার্ঘ সব শাল। সুদীপবাবু যখন রঙিন শাল পরেন, বুঝতে হবে সেগুলি তাঁকে স্ত্রী নয়না বন্দ্যোপাধ্যায় উপহার দিয়েছেন! নিজেই এই তথ্য জানিয়েছেন তিনি! তবে অধিবেশনের বেশির ভাগ দিনই সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরনে থাকে সাদা বা ঘি রঙের শাল।

Advertisement

ঐতিহ্যবাহী: সংসদে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, পরনে স্ত্রী নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া শাল।

ইপাদ্দি ইয়েরিক্কে

ভাষা এমন কথা বলে, বোঝে যে সকলে! সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে ভাষা নিয়ে বিসংবাদ। লোকসভায় ডিএমকে সাংসদ তামিলভাষী সুমতি তামিজাচি প্রশ্ন করলেন ইংরেজিতে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব উত্তর দিলেন হিন্দিতে। তৃণমূল সাংসদ স্পিকারকে বললেন, মন্ত্রী ইংরেজি বলতে পারলে, ইংরেজিতে করা প্রশ্নের উত্তর সেই ভাষাতেই দেওয়া উচিত। পরিস্থিতি শান্ত করতে স্পিকার বললেন, হেডফোনে অনুবাদ চলে আসে। পরে ডিএমকে নেতা টি আর বালু প্রশ্ন করলে বৈষ্ণব ভুল শোধরালেন! তামিলে ‘ভনাক্কাম’ (শুভেচ্ছা) জানালেন! সেখানেই না থেমে মন্ত্রী তামিলে বললেন, ‘ইপাদ্দি ইয়েরিক্কে’ (কেমন আছেন)? দৃশ্যতই খুশি বালু!

Advertisement

বিজেপির পাঠ্যপুস্তক

বিজেপির উত্থান নিয়ে বইয়ের অভাব নেই। কিন্তু ঘরের লোকের লেখা বই এই প্রথম। বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদবের বইটির স্বাদ তাই অন্য রকম— মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। বইয়ের নাম দ্য রাইজ় অব দ্য বিজেপি: দ্য মেকিং অব দ্য ওয়র্ল্ড’স লার্জেস্ট পলিটিক্যাল পার্টি। ভূপেন্দ্র-র সহলেখিকা অর্থনীতিবিদ ইলা পট্টনায়ক। জনসঙ্ঘ হয়ে বিজেপির যাত্রাপথ এবং তাদের সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদের বিশদ ব্যাখ্যা রয়েছে বইটিতে। দলের সাফল্যের রসায়ন তাঁর মতো করে লিখেছেন ভূপেন্দ্র। দলের শীর্ষ নেতারা বলছেন, বইটি বিজেপির নবাগতদের কাছে পাঠ্যপুস্তকের কাজ করবে।

দোলা সেনের দুঃখ

শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেনের মা দিল্লি এসেছিলেন, সাংসদ মেয়ের ভূমিকা চাক্ষুষ করতে। কিন্তু অধিবেশনের প্রথম দিনেই সাসপেন্ড হন দোলা। গত বাদল অধিবেশনের একটি অপরাধের জন্য দোলা-সহ রাজ্যসভার ১২ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু। তাঁদের মধ্যে তৃণমূল থেকে দোলা ছাড়াও রয়েছেন শান্তা ছেত্রী। প্রতিবাদে অধিবেশনের বাকি দিনগুলিতে সংসদের গাঁধীমূর্তির সামনে ধর্নায় বসবেন দোলা-শান্তা। মায়ের আক্ষেপ, “কী দেখতে এলাম, আর কী হয়ে গেল!” মেয়ে বলছেন, “এক অপরাধে তিন বার শাস্তি! পৃথিবীতে কোথাও হয়!”

রোগা হওয়ার হিড়িক

ওজন কমানোর ধুম পড়েছে সাংসদদের। প্রথমে স্মৃতি ইরানি। এক ধাক্কায় বেশ কয়েক কিলো ওজন কমিয়ে ফেলে অনেকটাই আগের চেহারায় ফিরে গিয়েছেন ছোট পর্দার তুলসী। যা নিয়ে রীতিমতো সাড়া পড়ে গিয়েছে সমাজমাধ্যমে। সাংসদদের অনেকেই এসে প্রশ্ন করে যাচ্ছেন, কোন ডায়েট মেনে এ ভাবে ছিপছিপে হয়ে গেলেন স্মৃতি? তবে কেবল স্মৃতি একলা নন, দৌড়ে রয়েছেন দক্ষিণের ডিএমকে সাংসদ কানিমোঝি। করুণানিধি-কন্যা নাকি বাদল অধিবেশনের তুলনায় শীতকালীন অধিবেশনে অন্তত দশ কিলোগ্রাম ওজন কমিয়েছেন! জানাচ্ছেন কানিমোঝি-ঘনিষ্ঠ তৃণমূলের এক সাংসদ।

তন্বী: ওজন ঝরিয়ে ভাইরাল স্মৃতি ইরানি।

নামেই আছে রাজনীতি

রাজনীতি তিনি বিশেষ করেননি বটে, কিন্তু কর্মজীবনে রাজনীতিবিদ সামলেছেন বিস্তর। রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু থেকে কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। আমলা জীবন শেষে তিনি এখন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ। সদ্য রাজনীতিতে পা দেওয়া এ-হেন জহর সরকার দিল্লিতে হরিয়ানা থেকে আসা কর্মীদের তৃণমূলে যোগদানের দায়িত্বে ছিলেন। সেখানেই তিনি বললেন, “আমার নাম জহর। আমার এক ভাইয়ের নাম গাঁধী ও আর এক ভাইয়ের নাম সুভাষ। বাবা রেখেছিলেন। রাজনীতি করিনি ঠিকই, কিন্তু বুঝতে তো পারছেন কোন পরিবারের ছেলে আমি!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন