এক অস্ত্র, অনেক নিশানা

সিঙ্গুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে মাস্টারস্ট্রোক দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ— এই স্লোগানকে সামনে রেখে ২০০৬ থেকে বামেদের যে যাত্রা, তার পরিণতি কী, তা কারও অজানা নয়।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:১৭
Share:

সিঙ্গুর থেকে শিল্পের বার্তা মমতার। —নিজস্ব চিত্র।

সিঙ্গুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে মাস্টারস্ট্রোক দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ— এই স্লোগানকে সামনে রেখে ২০০৬ থেকে বামেদের যে যাত্রা, তার পরিণতি কী, তা কারও অজানা নয়। কৃষিক্ষেত্রে বামেদের যত্নচর্চিত ভিত্তির ক্ষয় সম্পূর্ণ করে নিজের দিকে টেনে এনেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার সিঙ্গুর দিবসে অতএব কৃষিজয়গাথার উচ্চকিত ঘোষণা থাকবে, হেঁই সামালো ধান হো গানের আবেগে কৃষি আন্দোলনের অনুরণন থাকবে, স্মারকসামগ্রী হিসাবে ‘সিঙ্গুরের মাটি’-র প্রতি শ্রদ্ধার ঘোষণা থাকবে— এ সবই ছিল প্রত্যাশিত।

চমকটা ছিল এর পরেই। জমি আন্দোলনের ধাত্রীভূমি সিঙ্গুরে দাঁড়িয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর পরেই কৃষি ও শিল্পকে ভাই-বোন হিসাবে দাঁড় করিয়ে আহ্বান করবেন টাটা কর্তৃপক্ষকে রাজ্যে আসার জন্য। আহ্বান জানাচ্ছেন ১০০০ একর জমির প্রস্তাব দিয়েই, ঠিক যে পরিমাণ জমিকে কেন্দ্র করে বাম আমলে সংঘাতে গিয়েছিলেন মমতা। এবারের জমি অবশ্য গোয়ালতোড়ে।

Advertisement

এক অস্ত্রে অনেক নিশানাকে ছুঁয়ে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধান লক্ষ্য ছিল অবশ্যই তাঁর এ যাবৎ কালের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের প্রয়াস। শিল্পবিরোধী ভাবমূর্তি নিয়ে তাঁর যাত্রাকে সুদূরপ্রসারী করা যে কঠিন, সেটা মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট বোঝেন। বোঝেন বলেই শিল্পের জন্য বার্তাটাকে স্পষ্ট করতে হচ্ছে তাঁকে।

কিন্তু এটাও স্বাভাবিক। মাস্টারস্ট্রোক কোথায়? যে জমির কারণে রাজ্য ছেড়ে চলে যেতে হয়েছিল টাটাকে, হয়েছিল যাঁর কারণে, সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই সিঙ্গুরে দাঁড়িয়ে সেই হাজার একর জমির প্রস্তাব বাড়িয়ে বলটাকে টুপ করে ফেলে দিচ্ছেন টাটাদেরই কোর্টে।

লোকে তো বলবে, মমতা চেয়েছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন