রাজনীতি নয়, এ আসলে দলবাজি

রাজনীতি একটি অত্যন্ত সম্মানার্হ বিষয়। রাজনীতিতে লড়াই থাকে, বিবাদ-বিসম্বাদ থাকে, আঘাত-প্রত্যাঘাত থাকে। কিন্তু সে সব সঙ্ঘাতের রূপ যথেষ্ট সমীহসূচক হওয়া জরুরি। রাজনৈতিক প্রতিস্পর্ধা রুচিহীন এবং কলহ-কর্কশ স্তরে নেমে এলে তা সমীহ হারায় এবং তাকে আর রাজনীতি বলে ডাকা যায় না।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:৫৩
Share:

ইট ছুড়ে মারা হয় বাবুল সুপ্রিয়কে।

রাজনীতি একটি অত্যন্ত সম্মানার্হ বিষয়। রাজনীতিতে লড়াই থাকে, বিবাদ-বিসম্বাদ থাকে, আঘাত-প্রত্যাঘাত থাকে। কিন্তু সে সব সঙ্ঘাতের রূপ যথেষ্ট সমীহসূচক হওয়া জরুরি। রাজনৈতিক প্রতিস্পর্ধা রুচিহীন এবং কলহ-কর্কশ স্তরে নেমে এলে তা সমীহ হারায় এবং তাকে আর রাজনীতি বলে ডাকা যায় না। দলবাজি বলা হয়।

Advertisement

আসানসোলে সেই রকমই এক দলবাজির নমুনা দেখলাম। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তাঁর নিজের নির্বাচনী ক্ষেত্রে এসে আক্রান্ত হচ্ছেন প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের হাতে। লজ্জাজনক! কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে আক্রমণ করার নির্দেশ আবার নাকি স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রীর কাছ থেকেই এসেছিল। অভিযোগ অন্তত তেমনই। আরও লজ্জাজনক! একে রাজনীতি বা রাজনৈতিক সঙ্ঘাত হিসেবে আখ্যা দিতে পারছি না কিছুতেই।

বিচ্যুতি দু’তরফেই।

Advertisement

রাজনীতির ময়দানে যে লড়াই, তাকে কখনও জোর করে ব্যক্তিজীবনের আঙিনায় নিয়ে ফেলা উচিত নয়। মন্ত্রী মলয় ঘটক বা বিধায়ক মলয় ঘটকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ থাকতেই পারে। ক্ষোভ থাকলে ঘেরাও-ও হতেই পারে। কিন্তু মন্ত্রী মলয় ঘটক বা বিধায়ক মলয় ঘটককেই ঘেরাও করতে হবে। ব্যক্তি মলয় ঘটককে নয়। অর্থাৎ রাজনৈতিক বিরোধিতার ঝড়টাকে মন্ত্রী বা বিধায়কের কার্যালয়ে পৌঁছে দিতে হবে, তাঁর বাসভবনে নয়। বাসভবন নিতান্তই ব্যক্তিগত ও অরাজনৈতিক একটি পরিসর। দলবল নিয়ে কোনও রাজনীতিকের বাসভবন ঘেরাওয়ের ডাক দেওয়া নাগরিক অধিকার হরণের সামিল। রাজনৈতিক শিষ্টাচারেরও পরিপন্থী। বিজেপি সেই ভুলই করল।

বিজেপি ভুল করল বলে তৃণমূলেরও অপরাধ করার অধিকার জন্মায়, তা কিন্তু নয়। কিন্তু তৃণমূলও অপরাধই করল। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর উপর হামলা চালানো হল।

রাজনৈতিক কারণে খুন-জখম-হানাহানি, নির্বাচনী হিংসা এ রাজ্যে নতুন নয়। এই বল্গাহীন দলবাজির জেরে অনেক বারই অনেক ভয়ঙ্কর ঘটনার সাক্ষী হতে হয়েছে বাংলাকে। কিন্তু রাজ্য চালাচ্ছেন যাঁরা বা দেশ সামলাচ্ছেন যাঁরা, সেই মন্ত্রীদের মধ্যে সঙ্ঘাত কি এই স্তরে নামতে পারে? নাকি নামা উচিত? রাজনৈতিক শিষ্টাচারের বিন্দুমাত্র পরোয়া করবেন না তাঁরা? যদি তেমনই হয়, তা হলে বলতে হবে, শিষ্টাচারবিহীন দলবাজিটাই এখন মূল ধারা এবং আসল রাজনীতি অবলুপ্তির পথে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন