Editorial News

আমরা এখন সবাই রাজা, মুকুটটাই যা নেই

চন্দনগরে রবিবার দুপুরে বিচারক চন্দ্রাণী চক্রবর্তীকে যে ভাবে এক দল মত্ত যুবকের হামলা ও শাসানির মুখে পড়তে হল, তার পর কী ভাবে এ সময়কে ব্যাখ্যা করা যায় বলা মুশকিল। এই সময় ধিক্কার ও আত্মধিক্কারের।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৮ ০০:৫১
Share:

পুলিশের সঙ্গে তখন বচসা চলছে পুজো কমিটির সদস্যদের। ছবি: সংগৃহীত।

বল্গাহীন উচ্ছৃঙ্খল প্রমত্ততা। চন্দননগরে রবিবার যে ঘটনা ঘটে গেল, এ ভাবে ছাড়া তার অন্য কোনও বর্ণনা করা গেল না। ধিক্কার ও আত্মধিক্কারের সময় এখন।

Advertisement

চন্দনগরে রবিবার দুপুরে বিচারক চন্দ্রাণী চক্রবর্তীকে যে ভাবে এক দল মত্ত যুবকের হামলা ও শাসানির মুখে পড়তে হল, তার পর কী ভাবে এ সময়কে ব্যাখ্যা করা যায় বলা মুশকিল। এই সময় ধিক্কার ও আত্মধিক্কারের।

চন্দননগরে কী ঘটল? বিচারক চন্দ্রাণী চক্রবর্তী কর্মোপলক্ষে বাড়ি থেকে রওনা দিলেন। আচমকাই জটে আটকালেন, জগদ্ধাত্রী পুজোর বিসর্জনের ‘উত্সবের’ জট। এক দিকে কর্ম অন্য দিকে উত্সব। কর্মানুসারী বললেন পথ ছেড়ে দেওয়া হোক। উত্সবমত্ত বিপুল হুঙ্কারে পথ আটকে বললেন, ‘যেই হোন না কেন, কেউ কিছু করতে পারবেন না।’ অতঃপর পুলিশের তত্পরতা, বচসা-বিতণ্ডা-বাদানুবাদ সমাপনে বিচারক নিজে বেরিয়ে যেতে পারলেন বটে, কিন্তু চন্দনগরের ওই রাস্তায় তথা পশ্চিমবঙ্গের আকাশজুড়ে উদ্বেগের একটা কালো মেঘ ছেয়ে গেল তত্ক্ষণাত্। রাজ্যের সংস্কৃতি কোন জায়গায় গিয়ে পৌঁছচ্ছে তা নিয়ে একটা বিরাট প্রশ্নচিহ্ন তুলেই।

Advertisement

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

ভুলটা চন্দননগরের অথবা ওই মত্ত যুবকদের এমনকি ওই বিচারকের কর্মানুসরণেচ্ছার মধ্যেও নেই। আছে এ বঙ্গে সযত্নে লালিত থোরাই কেয়ার সংস্কৃতির মধ্যে। এই সংস্কৃতিতে কেউ কাউকে কেয়ার করে না। না পুলিশ, না প্রশাসন, না নিয়ম, না ঐতিহ্য। তুম্মো আছো তো আম্মো আছি, তোমার ছোড়দা আছে তো আমার বড়দা আছে— এ সংস্কৃতির আবহে এই মুহূর্তে এ বঙ্গের সমাজ। অতএব পুলিশকে কখনও দেখব মার খেতে, প্রশাসককে দেখব তীব্র ধমকে গুটিয়ে যেতে। আমরা এখন সবাই রাজা, মুকুটটাই যা নেই।

আরও পড়ুন: ‘যেই হোন, কিস্যু করতে পারবেন না...’ চন্দননগরে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা মহিলা বিচারকের

এর মধ্যে যে বিপদের ইঙ্গিত আছে, মাত্স্যন্যায়ের সম্ভাবনা আছে, সেটা আর কেউ না বুঝুক রাজনৈতিক প্রশাসনের বোঝা দরকার। আইন এবং শৃঙ্খলার হাত দোষীদের জন্য যদি শিথিল হয়, তবে যে পরিস্থিতি ভাল হয় না ইতিহাস বারংবার তার সাক্ষ্য দিয়েছে। আমাদের শাসকরা কি বুঝছেন?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন