সংকটে শিলঙের ব্রাহ্মসমাজ
মেঘালয়ের রাজধানী শিলং। শহরের কেন্দ্রস্থলে পুলিশবাজার, যার এক দিকে সেন্টার পয়েন্ট আর এক দিকে পুরনো পুড়ে যাওয়া বিধানসভা ভবন; ত্রিভুজের অন্য দিকে আছে শিলং ব্রাহ্মসমাজ মন্দির। বাঁ–পাশে ট্যাক্সি স্ট্যান্ডকে রেখে দু’পা এগোলেই ব্রাহ্মসমাজের চৌহদ্দির শুরু। বড় গেট খুলে অল্প ঢাল বেয়ে নেমে গেলে পাশাপাশি দেখতে পাওয়া যাবে ব্রাহ্ম গেস্ট হাউজ, রবীন্দ্র স্মৃতি গ্রন্থাগার এবং শিলং ব্রাহ্মসমাজ। ব্রাহ্মসমাজের এই উপাসনাগৃহটি শতবর্ষ পুরনো কাঠ ও টিনের কাঠামো নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ১৮৭৪ সালে শিলঙের ব্রাহ্মরা সমাজ প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৮৭৮ সালে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের এককালীন ৫০০ টাকা সাহায্যে এই ব্রাহ্মমন্দির স্থাপিত হয়। সমাজপ্রতিষ্ঠা ও সঞ্চালনের বিষয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সেই সময়ের খাসিয়া ব্যক্তিত্বরাও। সমাজের কাজের জন্য দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর মাসিক দশ টাকা করে পাঠাতেন। ১৯১৯–এ রবীন্দ্রনাথ প্রথম বার শিলং যান। সেই ভ্রমণপর্বেই এই ব্রাহ্মমন্দিরে বক্তৃতা দিয়েছিলেন তিনি। রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর এক বছর পর, ১৯৪২ সালে তাঁর স্মৃতিরক্ষার্থে ব্রাহ্মমন্দিরের একটি ঘরে ‘রবীন্দ্র স্মৃতি গ্রন্থাগার’–এর পথচলা শুরু। পরে এই লাইব্রেরির জন্য পাশেই নতুন ভবন তৈরি হয়। পশ্চিমবঙ্গের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায় ব্রাহ্ম ছিলেন। মেঘালয়ের বিদ্যুৎ প্রকল্পের তিনি ছিলেন প্রধানপুরুষ। তাঁর সৌজন্যে এই ব্রাহ্মমন্দির দীর্ঘ দিন বিনামূল্যে বিদ্যুৎ পরিষেবাও পেয়েছে। সমাজের শেষ সভাপতি ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী ও লেখক অঞ্জলি লাহিড়ি। প্রায় ১৮,৯৫০ বর্গফুট পরিমাণ জমিতে অবস্থিত এই সুপ্রাচীন ঐতিহ্যপূর্ণ সমাজটি এখন নানা সংকটে ভুগছে। ব্রাহ্মসমাজের সুবর্ণ দিন অস্তমিত। মেঘালয়বাসী ব্রাহ্ম পরিবারগুলির বর্তমান প্রজন্মকে দূরবিন দিয়েও খুঁজে পাওয়া যায় না। লাইব্রেরির পাঠক ও গ্রাহকের সংখ্যা তলানিতে। অর্থ ও লোকাভাবে চল্লিশ হাজার গ্রন্থের এই গ্রন্থাগারের প্রচুর বই ধুলোয়, অযত্নে নষ্ট হচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা, শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠানের লোভনীয় জমিটির দিকে অশুভচক্রের কুনজর পড়েছে। যেন-তেন ভাবে ব্রাহ্মসমাজকে উচ্ছেদ করতে পারলেই কোটি কোটি টাকার ‘মুনাফা’ দেবে এই জমি। তাই নানা চক্র আদা-জল খেয়ে লেগে আছে। তাদের বহু কষ্টে ঠেকিয়ে রেখেছেন সুরজিৎ দত্ত ও তাঁর ভাই বিশ্বজিৎ দত্ত। অঞ্জলি লাহিড়ির ছোট বোন আরতি দেবীর ছেলে তারা। কিন্তু তা আর কত দিন? দত্ত-ভ্রাতৃদ্বয়ের অবর্তমানে শিলং ব্রাহ্মসমাজের জমিতে শপিং কমপ্লেক্স মাথা তুলে দাঁড়াবে না, এ কথা জোর দিয়ে বলা যায় না। তাই তাঁরাও চান, কেন্দ্রীয় সরকার বা মেঘালয় রাজ্য সরকার কিংবা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার হস্তক্ষেপ করে এই রবীন্দ্র-স্মৃতি-ধন্য স্থানটিকে বিশেষ মর্যাদা দিয়ে ‘হেরিটেজ’ হিসেবে ঘোষণা করুন।
শুভাশিস চক্রবর্তী অশোকনগর, সংহতিপার্ক, উত্তর ২৪ পরগনা
প্রতীক্ষালয় কই
• বর্তমান সরকারের কলকাতা শহরকে সুন্দর করে তোলার প্রয়াস নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। তবে, যে সব জায়গায় আলোর দরকার নেই, আগেই ল্যাম্পপোস্ট আছে, সেই সব জায়গায় অদ্ভুত ভাবে ত্রিফলা আলো লাগিয়ে (আলো বললে ভুল হবে, কারণ আলো ওতে হয় না) কী প্রমাণ নগর কর্তৃপক্ষ দিতে চান, তা ঠিক বোধগম্য নয়।
বিশ্ব উষ্ণায়নের পাল্লায় পড়ে এই শহরেরও গড় তাপমাত্রা মাত্রাধিক বৃদ্ধি পেয়েছে। এই চরম পরিবেশে দেখি নিউটাউনে তৈরি নতুন রিং রোডে বাসযাত্রীদের জন্য কোনও প্রতীক্ষালয় তো দূরের কথা, এক ফোঁটা ছায়ায় দাঁড়ানোরও অবকাশ নেই। শহর তো সুন্দর অনেক হল, যেখানে প্রতীক্ষালয় দরকার নেই, সেখানে নেত্রী এবং তার চেলা-চামুণ্ডার ছবি দিয়ে প্রতীক্ষালয় স্থাপনও হল, এ বার যে দিকে হলে কাজে দেবে, সে দিকে একটু দেখুন।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিউটাউন, কলকাতা
খেতে ভয় পাচ্ছি
• আমি নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ। খুব কষ্টে তিন বেলা পরিবারের মুখে খাবার জোটাই। বর্তমানে খাদ্য গ্রহণ করতে ভয় পাচ্ছি। প্রতি নিয়ত বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় খাবারে কীটনাশক, কৃত্রিম রং, সার ব্যবহারের কুফল যে ভাবে দেখানো হচ্ছে এবং তার থেকে যে সমস্ত রোগ হচ্ছে, তার চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য আমার নেই। ফলে মনের মধ্যে আতঙ্ক চেপে বসছে। কী খেয়ে বাঁচব? এ সবের ওপর নতুন আতঙ্ক প্লাস্টিকের ডিম ও প্লাস্টিকের চাল। আমাদের মতো সাধারণ মানুষকে রাজ্য তথা কেন্দ্রীয় সরকার একটু অভয় প্রদান করুন এবং খাদ্য সুরক্ষার ওপর একটু নজর রাখুন, যাতে আমরা নির্ভয়ে খেতে পারি।
আশিস চক্রবর্তী কলকাতা
গন্ধদূষণ
• পচা আবর্জনার তীব্র দুর্গন্ধ ও মশা-মাছির অত্যাচারে প্রাণ ওষ্ঠাগত ভক্ত থেকে ভগবানের। স্থান খড়্গপুর। ২৪ নং ওয়ার্ডের হাতিগোলা পুল (রেল ব্রিজ) সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে ‘মা কালী ও শনি দেবতা’র মন্দির। আর তার গা ঘেঁষে পুরসভার জঞ্জাল ফেলার স্থান।
জাগ্রত বলে পরিচিত এই মন্দিরে প্রচুর ভক্ত সমাগম হয়। কিন্তু ডাম্পিং গ্রাউন্ডের দুর্গন্ধে অনেকেই অসুস্থ বোধ করেন। জানা গেছে, মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে অজস্র বার খড়্গপুর পুরসভার কাছে আবেদন জানানো হয়েছে এই ডাম্পিং গ্রাউন্ডটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার। সাফাই কর্মীদেরও অনুরোধ করা হয়েছে, যাতে এখানে জঞ্জাল-আবর্জনা ফেলা না হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
হাতিগোলা পুলের নীচ দিয়ে খড়্গপুর শহরের বুক চিরে যাওয়া রাস্তাটি আইআইটি, প্রেম বাজার, এগরা হয়ে দিঘার দিকে চলে গিয়েছে। রাস্তার ধারে রয়েছে প্রচুর দোকান, রিকশা স্ট্যান্ড, জনবসতি। পথ চলতি সাধরণ মানুষও এই আবর্জনার দুর্গন্ধে চরম অসুবিধার সম্মুখীন হন। এর ফলে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। উপদ্রব বাড়ছে মশামাছির।
দেবশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায় খড়গপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর
গাছ না কেটে
• লাটাগুড়িতে রেল ক্রসিং-এ ফ্লাইওভার তৈরির জন্য বৃক্ষনিধন খুব ভুল কাজ ও নিন্দনীয়| আমেরিকা ও অন্য উন্নত দেশে দেখেছি ওরা গাছ কেটে এ রকম কাঠামো করে না। অনেক জায়গায় লেভেল ক্রসিং রেখে দেয়| গাছ কাটে না। ট্রাফিক সাময়িকের জন্য বন্ধ থাকলেও| ফ্লাইওভার এর বিকল্প হল ভেহিকুলার আন্ডারপাস। এতে এত গাছ কাটার দরকার পড়ে না। খরচ ফ্লাইওভার এর মতোই বা অল্প কম-বেশি হয়।
প্রবীর গঙ্গোপাধ্যায় কলকাতা-৫৫
যোগ্য কি?
• আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে দেখলাম শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কেন এক নম্বর হবে না।’ ইতিপূর্বে প্রকাশিত আনন্দবাজারেরই সংবাদ যদি সত্যি হয়, এম ফিল মনোনয়নে বাংলা ও ইংরাজি বিভাগে যে ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছিল, তাতে কি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম হওয়ার যোগ্যতা পায়?
নির্মলকুমার দত্ত কলকাতা-৭৮
আর বাইরেটা?
• আমরা প্রত্যেকে নিজ নিজ বাসস্থানের পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে যত্নশীল। অথচ বাড়ির বাইরে বের হলে বেমালুম সব কিছু ভুল গিয়ে যত্রতত্র কফ, থুতু, পানের পিক ফেলে মারাত্মক রোগজীবাণু ছড়াতে সাহায্য করি। আসুন, সবাই মিলে যত্নবান হয়ে পরিচ্ছন্ন সমাজ গড়ি।
অভিজিৎ বসু রবীন্দ্রনগর, শিলিগুড়ি
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ই-মেল: letters@abp.in