সম্পাদক সমীপেষু

সুন্দরবনের রয়াল বেঙ্গল টাইগার, চিতল হরিণ, কুমির ও সুন্দরীগাছ অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রের সৌন্দর্যকে হার মানিয়েছে। সম্প্রতি পর্যটক, ভুটভুটি ও লঞ্চ পারমিশনের ভাড়া বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সজিনাখালি টুরিস্ট কেন্দ্র। সরকার সব বিভাগে ভাড়া বৃদ্ধি করায় গত ১৬ সেপ্টেম্বর ভুটভুটি ও লঞ্চ মালিকরা প্রতিবাদ জানাতে সজিনাখালি ফরেস্ট অফিসে উপস্থিত হয়।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:০০
Share:

সুন্দরবনে ফিরুক হাসি

Advertisement

বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রভ অরণ্য সুন্দরবন এখন বিপদগ্রস্ত। কিছু দিন আগেই পাহাড়ে অশান্তির জেরে পাহাড় পর্যটন কেন্দ্রের অবস্থাও বেহাল দশা। তাই আপাতত পুজোর ছুটি কাটাতে ভ্রমণপিপাসুদের ঠিকানা সমুদ্রতীরে। সুন্দরবন শুধু বাংলার অমূল্য সম্পদ নয় সারা বিশ্ববাসীর মনে এক অনন্য জায়গা করে নিয়েছে। সুন্দরবনের রয়াল বেঙ্গল টাইগার, চিতল হরিণ, কুমির ও সুন্দরীগাছ অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রের সৌন্দর্যকে হার মানিয়েছে। সম্প্রতি পর্যটক, ভুটভুটি ও লঞ্চ পারমিশনের ভাড়া বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সজিনাখালি টুরিস্ট কেন্দ্র। সরকার সব বিভাগে ভাড়া বৃদ্ধি করায় গত ১৬ সেপ্টেম্বর ভুটভুটি ও লঞ্চ মালিকরা প্রতিবাদ জানাতে সজিনাখালি ফরেস্ট অফিসে উপস্থিত হয়। সেখানে ফরেস্ট অফিসারদের সঙ্গে তাদের বচসা হয়। পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হতে থাকে। ভুটভুটি ও লঞ্চ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বন্‌ধ-এর ডাক দেওয়া হয়। ফলে পর্যটকদের ঘুরতে এসেও ফিরে যেতে হচ্ছে। এঁদের মধ্যে বিদেশি পর্যটকও আছেন। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে বাংলার ঐতিহ্য তথা পর্যটন শিল্পের বিরাট ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। বনদফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সারা রাজ্য জুড়ে সমস্ত জঙ্গলের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কিন্তু ভুটভুটি ও লঞ্চ মালিকদের দাবি, এই ভাড়া পর্যটক, ভুটভুটি ও লঞ্চ সব বিভাগেই বাড়ানো হয়েছে। তার জেরেই ক্ষোভের দানা বাঁধে। এই বিষয়ে সরকার ও প্রশাসনের পূর্ণ সহযোগিতা আশা করছি, যাতে উভয় পক্ষের সঙ্গে সুষ্ঠু আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করা যায়। সুন্দরবন ফিরে পাক প্রাণ। হাসি ফুটুক পর্যটকদের মুখে।

মেহেদি হাসান মোল্লা

Advertisement

বটতলী, গোসাবা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা

আমার স্কুল

‘নম্বর অভিভাবকের’ (৫-৯) সংবাদটির প্রেক্ষিতে আমার এই চিঠি। এক জন অভিভাবক হিসেবে এই পদক্ষেপকে আন্তরিক ভাবে স্বাগত জানাই। এই সিদ্ধান্তটি নেওয়া যে কতটা জরুরি ছিল, তা আমার মতো ভুক্তভোগীমাত্রেই অনুভব করতে পারবেন। অভিভাবক নয়, এক জন ছাত্রীর দৃষ্টি দিয়ে আমার কথা জানানোর চেষ্টা করছি।

১৯৮৪-১৯৮৮ সাল পর্যন্ত আমি তৎকালীন বর্ধমান জেলার রূপনারায়ণপুরের ‘হিন্দুস্থান কেবলস স্কুল’-এর ছাত্রী ছিলাম। মর্নিং সেকশনে মেয়েদের ক্লাসগুলি একেবারেই নিয়মিত হত না। সেই সময়ে মোবাইল না থাকলেও মহিলাদের মধ্যে উল বোনা এবং গল্প করার চিরকালীন প্রথা তো ছিলই। অনেক ক্ষণ ক্লাসে অপেক্ষা করার পর টিচার্স রুমে গিয়ে ক্লাস করানোর অনুরোধ জানালে অধিকাংশ শিক্ষকই বিরক্ত হতেন। অনেকে আবার ক্লাসে এসে পড়ানোর বদলে গল্পের পর গল্প করে যেতেন।

এই বিষয়টি নিয়ে বার বার বলায় শিক্ষিকারা আমার ওপর মানসিক নির্যাতন শুরু করেন এবং পরীক্ষার খাতায় প্রতিশোধ নেওয়াও। সেই সময় এপিলেপ্সি ও অন্যান্য বেশ কিছু রোগে আমি অসুস্থ হলেও পড়াশোনায় মনোযোগী ছিলাম। নিউরোলজিস্ট-এর দেওয়া একটি সার্টিফিকেটও স্কুলে জমা দেওয়া ছিল। এ সব সত্ত্বেও আমার ওপর মানসিক অত্যাচারের ঘটনাগুলি ধারাবাহিক ভাবে চলতেই থাকে। ১৯৮৮ সালে ক্লাস টেন-এ পড়াকালীন আমাদের এক শ্রদ্ধেয়া শিক্ষিকা অশোকা বিশ্বাস নিয়মিত ক্লাস নেওয়া এবং ছাত্রীদের ভালবাসার পাত্রী হয়ে ওঠার কারণে অন্যান্য শিক্ষিকাদের বিরোধিতার শিকার হন। ছাত্রীদের তরফ থেকে ব্যক্তিগত ভাবে আমার উদ্যোগে প্রতিবাদ জানানোয় আমাদের দু’জনের ওপরেই নানা রকম অত্যাচার চলতে থাকে। এই ঘটনায় আমি স্কুলেই অসুস্থ হয়ে পড়ি।

স্কুল থেকে হাসপাতালের বদলে বাড়িতে পাঠানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করা হয়। শেষ পর্যন্ত অশোকাদির উদ্যোগে হাসপাতালে পাঠানো হলেও, সেখানে ভর্তি না নিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় সে দিন আমার প্রাণসংশয় হয়েছিল এবং ছোটবেলার সেই ট্রমার রেশ আজও কাটেনি। অসুস্থতার জন্য টেস্ট পরীক্ষায় বসতে পারিনি এবং আমাকে তৃতীয় তালিকায় টেস্টে উত্তীর্ণ করা হলে ওই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে অস্বীকার করি। চিত্তরঞ্জনের দেশবন্ধু বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের বালিকা বিভাগের হেডমিস্ট্রেস মৈত্রেয়ী মজুমদারের অশেষ সহযোগিতায়, স্নেহে পরের বছর সেই স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে ভাল নম্বর পেয়ে পাশ করি। আজ হিন্দুস্থান কেবলস একটি মৃত প্রতিষ্ঠান। এত অবিচার সত্ত্বেও বাবার চাকরি সূত্রে ওই প্রতিষ্ঠানের নুন খেয়ে বড় হয়েছি। এই ঘটনায় যারপরনাই দুঃখ হয়েছিল। তবে আশার আলো দেখেছিলাম, যখন জানলাম পশ্চিমবঙ্গ সরকার স্কুলটির ভার নিতে চলেছে।

ছোট্ট একটি আরজি আছে। এত দিন হিন্দুস্থান কেবলস-এর কর্মীদের স্ত্রী-সন্তান বা নিকট আত্মীয়েরা অনেক সময় কোনও যোগ্যতা ছাড়াই ওই স্কুলে চাকরি করেছেন বা করছেন। প্রকৃত শিক্ষার অভাবই কাউকে একটি শিশুর বিরুদ্ধে নৃশংস হতে প্ররোচিত করে। তাই সরকারের নিয়ন্ত্রণে আসার পর আমার বিনীত অনুরোধ, সরকারি প্যানেলে থাকা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ওই স্কুলে নিয়োগ করা হোক, যাঁরা ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় পরীক্ষায় পাশ করে চাকরি পাওয়ার অপেক্ষা করছেন। আমার শৈশব আর ফিরে আসবে না। কিন্তু আগামীর শিশুরা ওই মাটিতেই ভাল ভাবে বাঁচুক। এইটুকুই প্রার্থনা।

দময়ন্তী দাশগুপ্ত

কলকাতা-৪৮

প্রাথমিক ও মূল

বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় পাঠ্যক্রম বেশ কয়েকটি খণ্ডে বিভক্ত। এক জন পড়ুয়াকে প্রথম শ্রেণি থেকে গ্র্যাজুয়েশন পর্যন্ত পড়াশোনা করতে গেলে বেশ কয়েক বার পাঠ্যকেন্দ্র পরিবর্তন করতে হয়। যেমন, প্রাথমিক (প্রথম-পঞ্চম শ্রেণি), উচ্চ প্রাথমিক (ষষ্ঠ-অষ্টম শ্রেণি), মাধ্যমিক (নবম-দশম শ্রেণি), উচ্চ মাধ্যমিক (একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি) এবং গ্র্যাজুয়েশন। প্রতিটি পাঠ্যকেন্দ্র পরিবর্তনের মাঝেই সাধারণত পড়ুয়ারা স্কুলছুট হয়ে থাকে। এর প্রধান কারণ, নতুন পরিবেশে মানিয়ে না নেওয়ার ক্ষমতা। কারণ, পড়ুয়াদের মধ্যে একটা ভীতি কাজ করে। সুতরাং সাধারণ পড়ুয়াদের কথা ভেবে সমগ্র পাঠ্যজীবনকে দু’ভাগে ভাগ করা উচিত। যথা ১) প্রাথমিক শিক্ষা ২) মূল শিক্ষা
বা উচ্চশিক্ষা।

১) প্রাথমিক শিক্ষা— প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত হবে প্রাথমিক শিক্ষা। পড়ুয়ারা যাতে শিক্ষার অধিকার আইন-২০০৯ অনুসারে ১৪ বছর পর্যন্ত একই স্কুলে পড়াশোনা করতে পারে, সে বিষয়ে সরকারকে সচেষ্ট হতে হবে। তা হলে প্রাথমিক স্কুলে স্কুলছুটের সংখ্যা ১০০ শতাংশ কমানো সম্ভব। ২) মূল শিক্ষা— নবম শ্রেণি থেকে গ্র্যাজুয়েশন পর্যন্ত হবে মূল শিক্ষা বা উচ্চশিক্ষা। পাস কোর্সের নন-প্র্যাক্টিকাল বিষয়গুলি স্কুলেই পড়ানো হোক। শুধুমাত্র প্র্যাক্টিকাল বা অনার্সের বিষয়গুলি কলেজে পড়ানো হোক। এর ফলে এক দিকে যেমন কলেজের উপর চাপ কমবে, অপর দিকে সাধারণ পড়ুয়ারা একই পাঠ্যকেন্দ্র থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করতে পারবে।

জ্যোতিপ্রকাশ ঘোষ

পাঁচপোতা, উত্তর ২৪ পরগনা

শৌচাগারহীন

মোরগ্ৰাম, মুর্শিদাবাদের গুরুত্বপূর্ণ রেলস্টেশন। ডাউন গণদেবতা আর ডাউন কবিগুরু এই রুটের দুটি জনপ্রিয় এক্সপ্রেস ট্রেন। রামপুরহাট, বোলপুর, বর্ধমান, হুগলি ও হাওড়া সংলগ্ন শহর ও শহরতলির বাসিন্দা, যাঁরা জঙ্গিপুর-সংলগ্ন মুর্শিদাবাদে কর্মরত, তাঁরা ডাউন গণদেবতা ধরতে মোরগ্ৰাম স্টেশনেই ভিড় করেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এই স্টেশনে একটাই শৌচাগার। এবং সেটিও ২৪ ঘণ্টা তালাবন্ধ। ফলে যাত্রীদের চরম দুর্দশায় পড়তে হয়। বিশেষ করে মহিলাদের। আর পানীয় জলের কথা না হয় বাদই দিলাম। স্টেশনে পরিষেবার নামমাত্র নেই।

সঞ্জয় দে

রঘুনাথগঞ্জ, মুর্শিদাবাদ

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন