সম্পাদক সমীপেষু: এ বার কি ভূত নামবে

কেউ পারেননি ভারতীয়দের ঘাড় থেকে ক্রিকেটের ভূত নামাতে। এই অসম্ভব কাজটি কি করে দেখাতে পারবেন বিশ্ব ব্যাডমিন্টনে চ্যাম্পিয়ন, পি ভি সিন্ধু?

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:০৫
Share:

পিভি সিন্ধু।

‘সিন্ধু সভ্যতার স্বর্ণযুগ শুরু’ (২৬-৮), ভারতীয় খেলার মধ্যে সেরার সেরাটি বোধ হয় দেখাল পি ভি সিন্ধুই, বোঝা গেল সংবাদে। খেলা যে শুধু ক্রিকেট নয় তা হাজার চেষ্টা করেও কিছুতেই বোঝাতে পারেননি পি ভি সিন্ধুর আগে নানান ক্ষেত্রে একাধিক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারতীয় খেলোয়াড়েরা। যেমন পারেননি ভারতীয় খেলাধুলায় সর্বকালের সেরা বিশ্ব স্নুকার ও বিলিয়ার্ডসে চ্যাম্পিয়ন, কিংবদন্তি ভারতীয় পঙ্কজ আডবাণী; দাবায় পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বিশ্বনাথন আনন্দ; ছ’বারের বিশ্ব বক্সিংয়ে চ্যাম্পিয়ন মেরি কম; কুস্তিতে এক বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ও পর পর দু’বার অলিম্পিকে পদকজয়ী সুশীল কুমার; বিশ্ব ভারোত্তোলনে জয়ী মীরাবাই চানু; বিশ্ব শুটিং ও তিরন্দাজিতে একাধিক বার চ্যাম্পিয়ন বিভিন্ন খেলোয়াড়েরা। এ ছাড়া অলিম্পিকে শুটিংয়ে ব্যক্তিগত বিভাগে একমাত্র স্বর্ণপদক জয়ী অভিনব বিন্দ্রা। এঁরা কেউ পারেননি ভারতীয়দের ঘাড় থেকে ক্রিকেটের ভূত নামাতে। এই অসম্ভব কাজটি কি করে দেখাতে পারবেন বিশ্ব ব্যাডমিন্টনে চ্যাম্পিয়ন, পি ভি সিন্ধু?

Advertisement

তাপস সাহা

শেওড়াফুলি, হুগলি

Advertisement

মর্যাদার প্রশ্ন

দিঘায় প্রশাসনিক সভায় মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী সিভিক ভলান্টিয়ারের মাধ্যমে পুলিশের তোলা আদায়ের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে পুলিশকে হুঁশিয়ারি দেন। এর আগেও তিনি পুলিশকে সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু দিঘায় এখানে থেমে না থেকে, অসাধু পুলিশ কর্মীদের চিহ্নিত করার জন্য রাস্তায় সিসি ক্যামেরা বসাবার কথা বলেছেন। পুলিশ কী ভাবে তোলা আদায় করে এ তথ্য জানার জন্য কোনও ক্যামেরার দরকার হয় না। পর্যটন কেন্দ্র বা হাইওয়েতে যাঁরা গাড়ি, বিশেষত মালবাহী গাড়ি নিয়ে চলাফেরা করেন তাঁরা হাড়েহাড়ে টের পান। পুলিশকে ‘খুশি’ না করে অবৈধ নির্মাণ, ফুটপাতে হকারি সম্ভব নয়। সংবাদমাধ্যমে বিভিন্ন সময় পুলিশের অসাধুতার খবর বা ছবি দেখা যায়। কিন্তু পুলিশ মানেই তো অসৎ নন। এক ঘর লোকের মাঝখানে এ ধরনের মন্তব্যে সকলকেই কি অপদস্থ করা হল না? যে পুলিশকর্মী প্রলোভন উপেক্ষা করে সততা বজায় রাখেন, টিভিতে সরাসরি সম্প্রচারিত এ দৃশ্য দেখলে পরিবার পরিজনের কাছে তাঁর মানমর্যাদা কোথায় দাঁড়াবে?

ধীরেন্দ্র মোহন সাহা

কলকাতা-১০৭

কাটমানির খনি

‘এত কাটমানি কেন?’ (২৭-৮) শীর্ষক নিবন্ধে স্বাতী ভট্টাচার্য বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন। এক জন অবসরপ্রাপ্ত ‘পঞ্চায়েত অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস অফিসার’ হিসেবে তাঁকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। তবে ‘‘নজরদারির ব্যবস্থা অচল, তাই অবাধে চুরি হচ্ছে পঞ্চায়েতে’’ কথাটির সঙ্গে একমত হওয়া গেল না। বরং বলা ভাল, নিছক ‘চুরি’ নয়, ইচ্ছাকৃত ভাবে নজরদারির ব্যবস্থাকে অচল করে দিয়ে যথেচ্ছ ভাবে লুটপাট চালানো হচ্ছে পঞ্চায়েতে। জেলা এবং রাজ্য স্তরের যে সমস্ত আধিকারিক ইএলএ (এগ্জ়ামিনার অব লোকাল অ্যাকাউন্টস) অডিটের দোহাই দিয়ে পঞ্চায়েতের অভ্যন্তরীণ হিসেব নিরীক্ষার গুরুত্বকে খাটো করে দেখাতে চেয়েছেন, তাঁরা হয় অজ্ঞ না হয় জ্ঞানপাপী। প্রায় প্রতি বছরই ইএলএ’র এমন টিম ব্লক তথা জেলায় আসে, যাদের কাজই হল সংগঠিত ভাবে তোলা তথা ‘কাটমানি’ আদায় করা। যে পঞ্চায়েতের ঘাপলা যত বেশি, সেই পঞ্চায়েতের উপর তারা তত বেশি খুশি।

১৯৭৩ সালের পঞ্চায়েত আইনের ১৮৬ ধারার প্রয়োগে পঞ্চায়েতের অভ্যন্তরীণ হিসাব ও হিসাব নিরীক্ষা আধিকারিক বা ‘পিএএও’ (পাও সাহেব) পদটি চালু হয় ১৯৮০ সাল নাগাদ। প্রথম কয়েক বছর ভালই চলেছিল। এ কথা অনস্বীকার্য যে তৎকালীন প্রধান শাসক দলের সদিচ্ছা খানিকটা ছিল। পরবর্তী কালে সেই শাসক দলই পঞ্চায়েতের ক্ষমতা, বলা ভাল মধুভাণ্ডটি নিরঙ্কুশ ভাবে দখলের জন্য যত মরিয়া হয়ে উঠল, ততই ধীরে ধীরে চলে গেল ধূর্ত-ধুরন্ধর-ধান্দাবাজদের কবলে। তাদের সুরক্ষার জন্য পার্টিও নাক গলাতে শুরু করে বিভিন্ন স্তরের সরকারি প্রশাসনে। পার্টি ও প্রশাসন একাকার হয়ে গেল।

প্রসঙ্গত, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেই ১০০ দিনের কাজে গতি আনার তাড়নায় ভরা বর্ষার মধ্যেই পঞ্চায়েতগুলিকে টাকা খরচের লক্ষ্যমাত্রা নির্দিষ্ট করে দেয়। সে সময় ১০০ দিনের কাজ মানেই মাটিকাটা বোঝাত। পুকুর-খাল-বিল-নয়ানজুলি সবই তখন জলের তলায়। মাটি পাওয়া যাবে কোথায়? ডিএম সাহেব, বিডিও সাহেবরা বললেন, কোথায় পাওয়া যাবে জানি না। সরকার চাইছে, কাজ করতে হবে, ব্যস! পুকুরের এক পাড়ের মাটি কেটে আর এক পাড়ে ফেলো, তাতে ক্ষতি নেই, কিন্তু মাটি কাটতেই হবে। এমনকি রাস্তার পাশের ঝোপজঙ্গল পরিষ্কার করেও বিল করো মাটি কাটার। কাজের গুণমান নয়, টাকা খরচের পরিমাণের উপর নির্ভর করে সরকারের সাফল্য-ব্যর্থতার খতিয়ান।

বহু বছর ধরে দুর্নীতিগ্রস্ত পঞ্চায়েত ব্যবস্থা চলতে দেওয়ার ফলে গ্রামীণ জীবনে ঘটে গিয়েছে আর একটি গুরুতর প্রমাদ। সততা ও নৈতিকতার সাড়ে বারোটা বাজিয়ে নানা রূপে কাটমানি কামিয়ে নেওয়াটাই এখন ‘বুদ্ধিমানের কাজ’। অর্থাৎ দুর্নীতির সামাজিকীকরণ ঘটে গিয়েছে পুরোমাত্রায়। গ্রামীণ সম্পন্ন পরিবারের বেকার সন্তান, যিনি নিজেদের সমস্ত জমিই ভাল করে চেনেন না, মাঠমুখো হন না এক দিনও, তাঁর নামেও রয়েছে ১০০ দিনের জবকার্ড। নিয়মিত টাকা ঢোকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে— ভাগাভাগি হয় পঞ্চায়েত সদস্যের সঙ্গে। এ কথা গ্রামের সবাই জানেন। অবস্থা যখন এই রকম, তখন সোশ্যাল অডিটের কী মূল্য আছে?

প্রশ্ন উঠতে পারে, তা হলে কাটমানি নিয়ে এত ক্ষোভ-বিক্ষোভ কেন? আসলে এ হল সুবিধাভোগী ও সুবিধা-বঞ্চিতদের অন্তর্দ্বন্দ্বের পরিণাম। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সততার পরাকাষ্ঠা দেখাতে গিয়ে, সম্ভবত পিকে-র বুদ্ধিতে, ‘প্যান্ডোরার বাক্স’টি খুলে ফেলেছেন। সরকারের রং লাল থেকে সবুজ হয়েছে, অতঃপর সবুজ থেকে গেরুয়া হলেও কাটমানির জয়যাত্রা অব্যাহতই থাকবে।

চন্দ্রপ্রকাশ সরকার

বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ

বেদখল রাস্তা0

সোদপুর ট্রাফিক মোড় থেকে এইচ-বি-টাউন (ঘোলা বাজার) অবধি সোদপুর-বারাসাত রোড বরাবর উভয় মুখে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করার জন্য বর্তমানে রাস্তা চওড়া করে দু’টি লেনে ভাগ করে নতুন ঢালাই রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। কিছু মানুষ এই রাস্তা দখল করে ব্যবসা চালাচ্ছেন। রাস্তার ওপরেই সাইকেল, বাইক, গাড়ি এমনকি পণ্যবাহী গাড়িও দাঁড় করিয়ে রেখে বেচাকেনা চলছে। ফলে পথচারীরা রাস্তায় নেমে আসতে বাধ্য হচ্ছেন। দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। ব্যাহত হচ্ছে পথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। স্বাভাবিক ভাবেই যানবাহনের গতি হয়ে পড়ছে শ্লথ, বাড়ছে যানজট। প্রশাসন কি পারে না, এই বেদখল রাস্তাকে অবরোধ মুক্ত করতে।

আলোক রায়

কলকাতা-১১০

ধুলোয় মোড়া

দক্ষিণ হাওড়ার ফুসফুস বটানিক্যাল গার্ডেন সংলগ্ন বিস্তীর্ণ আন্দুল রোড অঞ্চল বর্তমানে পুরু ধুলোর আস্তরণে মোড়া। বৃষ্টি পরবর্তী কিছুটা সময় স্বস্তিদায়ক হলেও তার পর অঞ্চলটি পুনরাবস্থায় ফিরে আসে। বেশ কিছু দিন আগে হাঁসখালি পোল পর্যন্ত পাইপ বসানোর কাজ চলায় রাস্তার অবস্থাও তথৈবচ। বর্তমানে রাস্তা সারাই শুরু হয়েছে।

এই সময় অধিকাংশ মানুষই সিওপিডি-তে আক্রান্ত। ধূলিধূসর পরিবেশে এই ক্ষতি আরও বহুলাংশে বেড়ে যায়। এই রাস্তার উপরেই দু’টি গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল এবং একটি নার্সিংহোম রয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে ভগ্নদশা প্রাপ্ত রাস্তাটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আরও বেশি মনোযোগ আকর্ষণের দাবি রাখে।

সঞ্জয় রায়

দানেশ শেখ লেন, হাওড়া

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন