editorial

খুব বিপদে পড়ে গিয়েছি, আমাদের ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করুন

এই লকডাউন পরিস্থিতিতে পাঠকদের থেকে তাঁদের অবস্থার কথা, তাঁদের চারপাশের অবস্থার কথা জানতে চাইছি আমরা। সেই সূত্রেই নানান ধরনের সমস্যা পাঠকরা লিখে জানাচ্ছেন। পাঠাচ্ছেন অন্যান্য খবরাখবরও। সমস্যায় পড়া মানুষদের কথা সরকার, প্রশাসন, এবং অবশ্যই আমাদের সব পাঠকের সামনে তুলে ধরতে আমরা ম‌‌নোনীত লেখাগুলি প্রকাশ করছি।লকডাউনের জন্য কোনও খাবারদাবার পাচ্ছি না। টাকাও ফুরিয়ে এসেছে প্রায়।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২০ ১৭:৫০
Share:

‘খুব বিপদে পড়েছি, আমাদের ঘরে ফেরার ব্যবস্থা করুন’।

চিঠি-১: ভেলোর চিকিৎসা করাতে এসে আর্থিক সঙ্কটে, ফিরতে সাহায্য করুন

Advertisement

ভেলোরের সিএমসি-তে এসেছিলাম চিকিৎসার জন্য, গত ১৮ মার্চ। আমার এই নিয়ে তৃতীয় বার ওপেন হার্ট সার্জারি হল। আমি, আমার স্ত্রী এবং আমার মামা একটি হোটেলে ঘরভাড়া নিয়ে রয়েছি। কিন্তু হোটেল থেকে কোনও রকম সাহায্য পাচ্ছি না। আমাদের আর্থিক অবস্থা সঙ্কটজনক। আমার বাড়ি পুরুলিয়ার পুঞ্চা থানা এলাকার বারমেশ্যা গ্রামে। দয়া করে, আমাদের এখান থেকে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন।

ধ্রুব প্রসাদ রায়, মোবাইল: ৯০৭৩৩৯৪৯০২, ইমেল: roydhrubaprasad@gmail.com

Advertisement

চিঠি-২: মিউজিশিয়ানরা চরম কষ্টে আছেন, কিছু করা যায়?

আমাদের বিচিত্রানুষ্ঠান জগতে বহু অসহায় মিউজিশিয়ান, গায়ক, গায়িকা বা সাউন্ডম্যানেরা আছেন। তাঁরা সবাই প্রায় শিক্ষিত, মধ্যবিত্ত ঘরের মানুষ। আজ তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর মতো মানুষের সংখ্যা খুবই কম। চরম কষ্টের মধ্যে তাঁরা আছেন। যদি একটা ব্যবস্থা করে খবর করে দিতেন তা হলে ভাল হত। বা, কার সঙ্গে যোগাযোগ করলে সুরাহা হতে পারে, সেই পথও যদি বলে দেন তা হলেও খুব উপকার হয়।

কাকে আর বলব আপনাদের ছাড়া? মানুষের পাশে সব সময়েই থাকেন আপনারা। আমার সীমিত ক্ষমতা। তা-ও নিঃশব্দে বেশ কিছু মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। কষ্টে থাকা মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। পারলে একটু ভাববেন। বা, চেষ্টা করবেন।

বাপ্পাদিত্য চক্রবর্তী, ইআইএমপিএ, ইমেল: kalaniketan.kol@gmail.com

চিঠি-৩: ঝাড়খণ্ডে কাজ করতে এসে আটকে পড়েছি, ফিরিয়ে নিয়ে যান

কন্ট্রাক্টে কাজ করা আমরা সাত জন শ্রমিক লকডাউনের জন্য আটকে রয়েছি ঝাড়খণ্ডের কোডার্মায় বানঝেদির কেটিপিএস ডিভিসি হাসপাতালের ক্যাম্পাসে একটি নবনির্মিত মাধ্যমিক স্কুলের ভিতরে। এসেছিলাম বাগান বানানোর কাজ করতে। লকডাউনের জন্য কোনও খাবারদাবার পাচ্ছি না। টাকাও ফুরিয়ে এসেছে প্রায়। আমাদের পশ্চিমবঙ্গে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করলে খুব উপকৃত হই।

আমার সঙ্গে আর যে ৬ জন রয়েছেন-

১) তাপস বন্দোপাধ্যায়, ডানলপ, কলকাতা-৩৫, মোবাইল- ৯৮৩০২৩৫১৬৭ (এঁকে ফোন করবেন)

২) দর্পণ সিংহ, বউনিয়া আবাদ, উত্তর ২৪ পরগণা- ৭৪৩৪৪২

৩) অর্পণ সিংহ, বউনিয়া আবাদ, উত্তর ২৪ পরগণা- ৭৪৩৪৪২

৪) উমেশ সিংহ, বউনিয়া আবাদ, উত্তর ২৪ পরগণা- ৭৪৩৪৪২

৫) হরি সর্দার, বউনিয়া আবাদ, উত্তর ২৪ পরগণা- ৭৪৩৪৪২

৬) কালিবাবু সর্দার, বউনিয়া আবাদ, উত্তর ২৪ পরগণা- ৭৪৩৪৪২

সুবিমল মাইতি, ১৩৫/এস/১, এন টি রোড, আদর্শনগর, বৈদ্যবাটি, হুগলি- ৭১২২২২, ইমেল: subimalmaity7@gmail.com, মোবাইল-৮৫১৪০০৮৯১১

চিঠি-৪: মা, বোন আর আমাকে বাংলাদেশে ফেরার ব্যবস্থা করুন

আমরা বাংলাদেশি। চিকিৎসার জন্য এসে ১ মাস লকডাউনে মা এবং বোন-সহ আটকে পড়েছি। ভারত সরকারের কাছে আবেদন, আমরা চিকিৎসার জন্য ভেলোরে এসে লকডাউনে আটকে আছি। বাংলাদেশে আমাদের স্ত্রী, শিশুসন্তান আছে। বাংলাদেশেও লকডাউন চলছে। তাই এই সঙ্কটজনক অবস্থায় পরিবারের একমাত্র পুরুষ হিসাবে আমার তাঁ দের পাশে থাকা অত্যন্ত জরুরি। দয়া করে, আমাদের ফেরার ব্যবস্থা করুন।

যোগাযোগ করুন ইমেলে- bissojit387@gmail.com

চিঠি-৫: উত্তরপ্রদেশের পানবাড়িতে আটকে রয়েছি, বাঁকুড়ার বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যান

আমার পরিবার পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলায় থাকে। আমি উত্তরপ্রদেশের পানবাড়িতে (জেলা মাহোবা) কাজ করি। এখানে একা থাকি। আমি খুব উদ্বেগে রয়েছি। আমার বৃদ্ধ বাবা হার্ট ও উচ্চ রক্তচাপের রোগী। তাঁরাও আমার অবস্থা নিয়ে খুবই চিন্তিত। আমাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করুন। শুরু থেকে আমি লকডাউনের সমস্ত নিয়ম মেনে চলছি। ভবিষ্যতেও মেনে চলব। ১৪ এপ্রিলের পর দয়া করে আমার বাড়ি যাওয়ার ব্যবস্থা করুন।

আশীষ পাল, ইমেল- asishpal1242@gmail.com, মোবাইল- ৭০০১৪৪৭১১৫

চিঠি-৬: চট্টগ্রামে আমাদের ফিরিয়ে দিন

চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশের চট্টগ্রাম থেকে এসে আটকে পড়েছি। গত ১১ মার্চ থেকে। আমরা চার জন। আমাদের মধ্যে দু’জনের অপারেশন হয়েছে। আমাদের থাকা, খাওয়ার খুব অসুবিধা হচ্ছে। আমাদের দয়া করে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যান।

আবদুল মোহেমেন মোল্লা, মোবাইল- ৯৯১২৮৯৭০০২৮, ইমেল- abmohaimen@gmail.com

চিঠি-৭: বিলাসপুরে না ফিরতে পারলে কাজ খোয়াব

বিলাসপুরের যে সংস্থায় আমি কাজ করি, তা অতি প্রয়োজনীয় সার্ভিসের মধ্যে পড়ে। আমি পুরসভার তরফে বাড়ি বাড়ি গিয়ে আবর্জনা নিয়ে আসি। বাবার হার্ট অ্যাটাকে আমি কলকাতা ফিরে আসি। আর তার পর টানা লকডাউন। এ দিকে আমি কাজে অনুপস্থিত কিন্তু কোম্পানিকে তো কাজ করে যেতেই হবে। তাই আমার বেতন কাটা হচ্ছে। এমতবস্থায় ঘরে টাকার অভাব, আমিই একমাত্র রোজগেরে। কোনও মতে যদি বিলাসপুর ফিরতে না পারি, রয়েছে কাজ হারানোর আশঙ্কা।

লকডাউনের কার্যকারিতা সম্পর্কে কোনও সন্দেহ নেই, কিন্তু সরকারের উচিত আরও একটু কড়া হওয়া। না হলে মেয়াদ বাড়িয়েও ফলের আশা করা যাবে না। আর আমার মতো যাঁরা কাজে ফিরতে চান, বা কাজ হারানোর ফলে বাড়ি ফিরতে চান, তাঁদের জন্যে অল্প সংখ্যক ট্রেন চালানো হোক সমস্ত রকম স্বাস্থ্যবিধি মেনে।

অঙ্কিত কুমার কর্মকার, রামকি এনভায়রো ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড।

চিঠি-৮: ১৪ তারিখের পর আমাদের বাঁকুড়ায় ফিরতে সাহায্য করুন

আমি, আমার মা, জেঠু-সহ ৫ জন বর্তমানে ভেলোরে চিকিত্সার জন্য এসে গত ১৬ মার্চ থেকে আটকে পড়েছি। আমাদের বাড়ি বাঁকুড়া জেলার গঙ্গাজলঘাটি থানার কাল্লাপুর গ্রামে। বাড়িতে বাবা, ছোট বোন ও অসুস্থ ঠাকুমা খুব কষ্টের মধ্যে রয়েছেন। তাই ১৪ তারিখের পর যদি লকডাউন শিথিল করে বাড়ি পৌঁছনোর ব্যবস্থা করেন তা হলে এই আধপেটা অবস্থায় আর্থিক কষ্টের থেকে অন্তত বাঁচব।

মৃণ্ময় মান, মোবাইল-৭৯০৮০৯৭০৬৭, ইমেল- mrinmoymanbcc@gmail.com

চিঠি-৯: বাড়িওয়ালার সঙ্গে রয়েছি, বাড়িতে না ফিরতে পারলে মরে যাব

আমার বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের সালন্দা গ্রামের মঙ্গলকোট থানা এলাকায়। একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে কাজ করি। ছিলাম দিল্লিতে। এখন বদলি হয়ে কলকাতায় এসেছি। আমি গত ২১ মার্চ বাড়ির সব জিনিসপত্র পশ্চিমবঙ্গে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। আমাদের ট্রেনের টিকিট কাটা ছিল ২২ মার্চের (ট্রেন নম্বর ১২৩২৪)। কিন্তু লকডাউনের জন্য আমাদের ট্রেন বাতিল হয়ে যায়। আমার সঙ্গে রয়েছেন পরিবারের আরও তিন জন। যে বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলাম, সেটাও ছেড়ে দিয়েছি। এখন আমরা বাড়িওয়ালার সঙ্গে রয়েছি। কিন্তু নিজেদের ঘরের কিছুই আমাদের সঙ্গে নেই। খুব সঙ্কটে রয়েছি। কার্যত ভিক্ষুকের অবস্থা হয়েছে আমাদের। মালবাহক ট্রাকও দাঁড়িয়ে রয়েছে ঝাড়খণ্ডে। মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ, আমাদের শীঘ্রই ফেরানোর ব্যবস্থা করুন, না হলে মরে যাব।

কাজি আলি আসফার, মোবাইল- ৯৯৭১৭২৫১০৬, ইমেল- kazi1x@gmail.com

চিঠি-১০: চেন্নাইতে আটকে রয়েছি, আমাদের ফেরার ব্যবস্থা করুন মুখ্যমন্ত্রী

আমি দেবব্রত মন্ডল। আমরা ৩ জন চেন্নাইতে আটকে আছি। আমরা দু’বেলা দু’মুঠো খেতে পাচ্ছি না। কোনও সাহায্য পাইনি এখনও। আমরা লকডাউন মানছি। কিন্তু পেটে ভাত না থাকলে কী করব? মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ, দয়া করে আমাদের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করুন।

দেবব্রত মন্ডল, ইমেল- debabrata4191@gmail.com

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন,feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন