সম্পাদক সমীপেষু: লাভক্ষতির নিক্তি

কল্যাণকামী রাষ্ট্রনীতিতে সব কিছু লাভ-ক্ষতির নিক্তিতে বিচার্য নয়। দেশীয় ঐতিহ্যের দুর্লভ কিছু নিদর্শন এখানে রক্ষিত আছে, যেগুলি আগামী প্রজন্মকে আমাদের শিকড়ের সন্ধান দেবে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৮ ০১:১০
Share:

‘গুরুসদয় সংগ্রহশালা বিপন্ন’ (কলকাতার কড়চা, ১৯-৩) খবরটি পড়ে বিস্ময়াভিভূত হলাম। কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রকের ‘একতরফা ভাবে চুক্তি বাতিলের’ সিদ্ধান্ত শুধু ব্যথিতই করে না, কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশ্য সম্পর্কেও সন্দিহান করে তোলে। সন্দেহ হয়, মিউজিয়ামটির সমাজ-সাংস্কৃতিক গুরুত্ব বিষয়ে কর্তাব্যক্তিদের আদৌ কোনও ধারণা আছে কি না। নাকি তাঁরা আর পাঁচটা অলাভজনক সরকারি সংস্থার মতো এই মিউজিয়ামটিকেও সমগোত্রীয় দেখেন? যেই দেখছেন লাভ হচ্ছে না, অমনি ‘লক-আউট’!

Advertisement

মনে রাখা প্রয়োজন, কল্যাণকামী রাষ্ট্রনীতিতে সব কিছু লাভ-ক্ষতির নিক্তিতে বিচার্য নয়। দেশীয় ঐতিহ্যের দুর্লভ কিছু নিদর্শন এখানে রক্ষিত আছে, যেগুলি আগামী প্রজন্মকে আমাদের শিকড়ের সন্ধান দেবে। সে জন্য এগুলির রক্ষণাবেক্ষণ শুধু জরুরিই নয়, আমাদের জাতীয় কর্তব্যও। তা ছাড়া লোকশিল্পের প্রচার ও প্রসারে গুরুসদয় মিউজিয়ামের বছরভর কর্মসূচির গুরুত্বকেও অস্বীকার করা যায় না। তাই কেন্দ্রীয় সরকারের এমন বদখেয়ালের বিরুদ্ধে সর্ব স্তরে প্রতিবাদ প্রয়োজন।

তরুণ সিংহ মহাপাত্র আমলাশুলি, পশ্চিম মেদিনীপুর

Advertisement

পড়া, চিকিৎসা

বালি জগাছা ব্লকে জনবসতি দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। অথচ এই অঞ্চলে কোনও হাসপাতাল ও নার্সিংহোম এবং কলেজ নেই। ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপর নির্ভর করে থাকতে হয় বাসিন্দাদের। কেউ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে নিয়ে যেতে হয় বেশ দূরে কোনও হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে। অনেক সময় রোগী নিয়ে যাওয়া ঝুঁকির হয়ে যায়। এই অঞ্চলের ছাত্রছাত্রীদেরও অনেকটা দূরে পড়তে যেতে হয়।

অভিজিৎ দাস বালি, হাওড়া

বাইক ও লরি

বরানগর জিএলটি রোড বনহুগলি মোড়ে প্রতিদিন নানা দুর্ঘটনায় প্রাণ যাচ্ছে নিরীহ মানুষের। উপরন্তু হেলমেটবিহীন বাইক-বাহিনীর বিশেষ দাপট। বাইকের এত বীভৎস আওয়াজ, সাধারণ মানুষের হার্ট ব্লক হয়ে যাওয়ার জোগাড়। কলকাতা যদি ‘এ ওয়ান’ সিটি হয়, তা হলে দিবালোকে লাগামছাড়া লরির এত গতি হয় কী করে! বাইকবাহিনী এবং গতিশীল লরিকে আটকাতে দয়া করে তিন রাস্তার উপরে বাম্প করুন।

বিধান দত্ত কলকাতা-৩৫

স্কুলের ফি

রাজ্যে স্কুলগুলিতে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ার আগে মধ্যবিত্ত অভিভাবকরা আতঙ্কে থাকেন। কারণ প্রতি বছর যে রকম অন্যায্য ভাবে স্কুলগুলি ফি বৃদ্ধি ঘটাচ্ছে, তা অধিকাংশ অভিভাবকের কাছে আর্থিক শোষণের নামান্তর।
এ ব্যাপারে সবচেয়ে এগিয়ে সিবিএসই এবং আইসিএসই বোর্ড পরিচালিত স্কুলগুলি। কারণ সেগুলির পঠনপাঠনের মাধ্যম ইংরেজি এবং অভিভাবকগণ স্বাভাবিক ভাবেই সেই সব স্কুলেই সন্তানদের ভর্তি করতে আগ্রহী। আর এই চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতেই শিক্ষাকে বাণিজ্যিক পণ্যে পরিণত করে লাগামহীন মুনাফা লোটার খেলায় মাতছে স্বৈরাচারী স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রতি শিক্ষাবর্ষে নানা অছিলায় ২০-২৫% ফি বৃদ্ধিসহ অভিভাবকদের বাধ্য করা হচ্ছে বইখাতা থেকে শুরু করে পড়াশোনার সব সরঞ্জাম স্কুল থেকে কিনতে। সরকারের উচিত এদের নিয়ন্ত্রণে আইন প্রণয়ন।

দেবকীরঞ্জন গঙ্গোপাধ্যায় উত্তরপাড়া, হুগলি

জৈন দেউল

পুরুলিয়ার মুক্ত প্রত্নস্থল চেলিয়ামা-তেলকুপি বেড়াতে গিয়ে মর্মাহত হলাম, কারণ সহস্রাধিক বছরের প্রাচীন জৈন দেউলগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। ১৮৭২-৭৩’এ জে ডি বেগ্‌লার তেলকুপি ভ্রমণ করে তাঁর রিপোর্টে কমপক্ষে চোদ্দোটি শিল্পশোভিত কারুকার্যমণ্ডিত প্রস্তরনির্মিত মন্দির-দেউলের বিবরণ রেখে গিয়েছেন। দামোদরের উপর ১৯৫৯ সালে পাঞ্চেত বাঁধ নির্মাণের পর, তেলকুপি গ্রামের বড় অংশ জলের তলায় চলে যায় এবং নদীগর্ভে পড়ে দেউলগুলি একে-একে ধ্বংস হয়ে যায়। এখন দামোদরের ঘাসে ঢাকা চরে জলকাদার মধ্যে চরম দুর্দশায় অন্তিম লগ্নের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে অবশিষ্ট দুটি দেউল। আষাঢ় থেকে অগ্রহায়ণ বছরের অর্ধেক সময় দেউল দুটি জলে ডুবে থাকে। পর্যটক ও গবেষকরা তখন নৌকোয় চড়ে দেউল দেখতে যান।

এখন জল নেমে যাওয়ায়, ঘাস-কাদা মাড়িয়ে দেউলের কাছে গিয়ে দেখা গেল, চার পাশের দেওয়ালে শোভা পাচ্ছে কৌণিক, বৃত্তাকার, ষড়ভুজাকার, খাঁজ কাটা, জাফরি করা, নানান দৃষ্টিনন্দন নকশার শিল্পকীর্তি। প্রবেশদ্বারের দু’দিকের কুলুঙ্গিতে অর্ধভগ্ন চতুর্ভুজ দেব বা দেবীমূর্তি। দ্বারশীর্ষে শাসনদেবীর মূর্তি। দেউলের ভেতর ও পার্শ্বদেশের কুলুঙ্গি থেকে মূল জৈনমূর্তি ও দেবদেবীর মূর্তিগুলি অপসৃত হয়েছে। ভিতের মাটি ক্ষয়ে-ক্ষয়ে দুর্বল হয়ে যাওয়ায় দেউল দুটি যে কোনও মুহূর্তে ভূমিশয্যা গ্রহণ করবে।

চেলিয়ামার ভূমিপুত্র লোকশিল্প ও প্রত্নতত্ত্ব গবেষক-লেখক সুভাষ রায় বললেন, প্রতি বছর কোনও না কোনও বিদেশি পর্যটক আসেন এই সব প্রত্নসম্পদের টানে। শুধু দেউল নয়, প্রচুর জৈন দেবদেবীর মূর্তি ছড়িয়ে আছে সারা পুরুলিয়া জেলায়। আশার কথা, একটি জৈন সংস্থার অর্থানুকূল্যে এ রকম কয়েকটি মূর্তি তেলকুপি পার্শ্বস্থ গুরুডির কমলেশ্বর মন্দিরপ্রাঙ্গণে নির্মিত পৃথক মন্দিরে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সুশীল বর্মন উত্তর জগাছা, হাওড়া

সরস্বতী নদী

দীর্ঘ টালবাহানার পর মানুষের আন্দোলন আর আদালতের রায়ের কাছে নতি স্বীকার করে শেষ বামফ্রন্ট সরকার সরস্বতী নদী সংস্কারের কাজে হাত দিতে বাধ্য হয়েছিল। যদিও কেন্দ্র-রাজ্য উভয় সরকারের ঔদাসীন্য আর মানুষের ঠিক নজরদারির অভাবে আংশিক সংস্কার হয়েছিল মাত্র। তবে তার ফলে রুক্ষশুষ্ক নদীতে জোয়ারে জলস্ফীতি দেখা গিয়েছিল আর অন্যায়-জবরদখল হটানো সম্ভব হয়েছিল। নদী সংলগ্ন মানুষজন বেশ কয়েক বছর গ্রীষ্মে জলকষ্ট ভুলে ছিলেন। কিন্তু ধীরে-ধীরে, আবার কিছু অজ্ঞ-অকৃতজ্ঞ মানুষ নিজেদের যাবতীয় নোংরা আবর্জনা, এমনকী মরা-পচা জীবজন্তু, নলবাহিত মল-মূত্র, কারখানার বর্জ্য ও বিষাক্ত জল নদীতে ফেলতে শুরু করেছে। অন্য দিকে জবরদখলকারীরা আবার অবৈধ নির্মাণ শুরু করেছে।

স্বপনকুমার ঘোষ মধ্য ঝোড়হাট, হাওড়া

নরক বাজার

নরকের নাম লেক গার্ডেনস সুপার মার্কেট। ৩৬৫ দিন জল জমে থাকে বাজারের ভিতরে। দোকানি, খরিদ্দার কারও কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই। প্রশাসন সচেতন না হলে দূষণ, ডেঙ্গি ছড়াতেই থাকবে।

স্বপন বসু কলকাতা-৩৩

ভ্রম সংশোধন

• রবিবার তিনের পাতায় ‘জলে ঝাঁপ দিয়ে বৃদ্ধার প্রাণ বাঁচাল দুই কিশোর’ প্রতিবেদনে হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশ সুপারের নাম গৌরব শর্মার পরিবর্তে গৌরব বিশ্বাস ছাপা হয়েছে।

• রবিবার প্রথম পাতায় ‘সাহায্য করার নামে অন্ধকে মার, ছিনতাই’ প্রতিবেদনে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বভারতী লেখা হয়েছে। অনিচ্ছাকৃত এই দুটি ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন