সম্পাদক সমীপেষু: দাঁড়িয়ে দেখবেন?

১৯৬৪ সালে বাড়ি ফেরার পথে নিউ ইয়র্কের রাস্তায় গুন্ডাদের হাতে আক্রান্ত হন কিটি জেনোভেস নামের তরুণী। অন্তত আধ ঘণ্টা এলোপাথাড়ি ছুরির আঘাত নেমে এসেছিল তাঁর উপর।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:৩৯
Share:

সম্প্রতি পরিবেশিত দুই সমধর্মী খবর পড়ে বিচলিত হতে হল। বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় আহত পথচারীর প্রতি নাগরিক উদাসীনতা, ঘটনাটিকে সমবেত ভাবে ক্যামেরাবন্দি করার নির্লজ্জ প্রয়াস এবং রেলে পা কাটা যাওয়া মুমূর্ষুকে কাতরাতে দেখেও কেউ সাহায্য করতে না আসায় আহতের মৃত্যুর ঘটনা (১২-১)। কোনও অন্যায় ঘটতে দেখলে চার পাশের মানুষজন ঝাঁপিয়ে পড়ে না, খানিকটা পুলিশের ভয়ে, খানিকটা স্বার্থপরতায়।

Advertisement

আবার বিশাখাপত্তনমের সাম্প্রতিক ঘটনায়, প্রকাশ্য দিবালোকে রাজপথে এক মদ্যপের হাতে মহিলাকে ধর্ষিতা হতে দেখেও কেউ সাহায্যে এগিয়ে আসেনি, এক জন মোবাইলে দৃশ্যটি ক্যামেরাবন্দি করেছে। এ কি শুধুই স্বার্থপরতা, না কি তার সঙ্গে ধর্ষকামের মিশেল!

১৯৬৪ সালে বাড়ি ফেরার পথে নিউ ইয়র্কের রাস্তায় গুন্ডাদের হাতে আক্রান্ত হন কিটি জেনোভেস নামের তরুণী। অন্তত আধ ঘণ্টা এলোপাথাড়ি ছুরির আঘাত নেমে এসেছিল তাঁর উপর। আটত্রিশ জন প্রত্যক্ষদর্শীর কেউ ছুটে আসেনি সাহায্য করতে। পুলিশ ডাকেনি। মানুষের বিপদে পথচলতি মানুষের এড়িয়ে যাওয়ার এই আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা, সমাজ মনস্তত্ত্বের ভাষায় ‘বাইস্ট্যান্ডার এফেক্ট’ বলে পরিচিতি পায়। ১৯৬০ সালে জাপানের সোশ্যালিস্ট নেতা ইনজিমো আসানুমা টিভি ক্যামেরার সামনে বক্তৃতা দিতে দিতে খুন হয়ে যান। সাংবাদিকরা ছবি তোলা ফেলে কেন বাঁচাতে ছুটে গেলেন না, প্রশ্ন উঠেছিল তখনও।

Advertisement

এই যুগে, যতগুলি স্মার্টফোন বিক্রি হয়, ঠিক ততগুলি চিত্রগ্রাহকের জন্ম হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইক-এর নেশায় সকলেই ছুটছে। প্রত্যাশিত লাইক না পেয়ে অনেকে আবার অবসাদের শিকার। ভার্চুয়াল দুনিয়ার এ এক অমোঘ ভার্চুয়াল সাইড এফেক্ট, পরমাণু শক্তির সদর্থক উপযোগিতার পরিবর্তে পরমাণু বোমা প্রাপ্তি!

সরিৎশেখর দাস চন্দনপুকুর, ব্যারাকপুর

উন্নয়ন!

ঐতিহাসিক জেলা মুর্শিদাবাদ। তার সদর শহর বহরমপুরের বুক চিরে বয়ে গিয়েছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। দু’দিকে তাকালে দেখা যাবে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর হাসিমুখের পোস্টার এবং নীচে লেখা ‘এগিয়ে বাংলা, এগিয়ে মুর্শিদাবাদ’। এই অগ্রগতির দু’একটি নমুনা দিলাম। কর্মসূত্রে যেতে হয় শহর ছেড়ে কিছুটা দূরে। ৫-৭ বছর আগে ওই দূরত্ব অতিক্রম করতে সময় লাগত ৪৫ মিনিট বা ১ ঘণ্টা। বাসভাড়া মোটামুটি একই আছে। কিন্তু এখন আমরা ওই একই রাস্তা যেতে, একই ধরনের বাসে, তিন বা সাড়ে তিন ঘণ্টা বসে থাকার সুযোগ পাই এবং তার জন্য বাড়তি কোনও পয়সা দিতে হয় না। এ কী কম উন্নয়ন, কম অগ্রগতি? আবার, বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজে খোঁজ নিলে হয়তো দেখা যাবে হাসপাতালে মৃত্যুহার এখন অনেক কম। কারণ, গুরুতর অসুস্থ রোগীদের নিয়ে ওই হাসপাতালে পৌঁছনো এক বিরাট ঝঞ্ঝাট, অধিকাংশেরই মৃত্যু হয় রাস্তায়।

সুহৃদ সেন খাগড়া, মুর্শিদাবাদ

অবসরের পর

সম্প্রতি রাজ্য সরকার চুক্তিভিত্তিক রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের চাকরি শেষের পর অবসরকালীন অনুদান হিসেবে দু’লক্ষ টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। অন্য দিকে, অবসরপ্রাপ্ত এসএসকে (শিশু শিক্ষা কর্মসূচি) এব‌ং এমএসকে (মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মসূচি)-র সহায়িকা ও সম্প্রসারক-সম্প্রসারিকাদের অবসরকালীন অনুদান হিসাবে এক লক্ষ করে টাকা দেওয়া হচ্ছে। আমার আবেদন, সকলের জন্যই এই অনুদান দু’লক্ষ টাকা করে হোক। যদি তা সম্ভব না হয়, তা হলে অন্তত এমএসকে-র অবসরপ্রাপ্ত সম্প্রসারক-সম্প্রসারিকাদের দু’লক্ষ করে দেওয়া হোক। কারণ এসএসকে-র সহায়িকাদের চেয়ে তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বেশি, বেতনও বেশি।

টাকাটা যাতে অবসরের সঙ্গে সঙ্গে পাওয়া যায়, সে ব্যবস্থাও করুন। চাকরি ছাড়ার পর অন্য কোনও আয় না থাকায় এঁদের আর্থিক দুর্দশার মধ্যে পড়তে হয়। প্রসঙ্গত, আমিও এক জন অবসরপ্রাপ্ত এমএসকে-র শিক্ষা সম্প্রসারিকা। ফেব্রুয়ারি ২০১৭-য় অবসর নেওয়ার পরে আজও এই টাকা পাইনি।

পূর্ণিমা নন্দী বাড়ভূঞ্যাবসান, পশ্চিম মেদিনীপুর

বাগনান বাস

এখন বাগনান বাসস্ট্যান্ডটি অটো বা ছোট গাড়ির স্ট্যান্ড বললেই চলে। এদের দৌরাত্ম্য এত বেড়েছে, শ্যামপুরের বাসগুলি এক-দেড় ঘণ্টা দাঁড়িয়ে তবেই চ্যানেলে প্রবেশ করতে পারে। ফলে যাত্রীরাও সাধারণ বাসের অপেক্ষায় না থেকে ভ্যাকেট, অটোয় যেতে বাধ্য হন। বাসগুলি সময়মত এলেও, যাত্রী না পেয়ে ফাঁকা অবস্থাতেই যাতায়াত করে। যাত্রীদের সুবিধার্থে রেললাইনের উপর ব্রিজ তৈরি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তেমন সুবিধা হয়নি। রেলব্রিজের দক্ষিণ দিকে প্রচুর খালি জমি পড়ে আছে, যদি সেখানে একটি নতুন বাসস্ট্যান্ড তৈরি করা হয়, বাগনান থেকে কমলপুর, শিবগঞ্জ, গড়চুমুক, গাদিয়াড়া শ্যামপুর যাতায়াতকারী বাসগুলির পক্ষে খুব উপযোগী হবে, যাত্রীদের বিরাট সুবিধা হবে।

আতিয়ার রহমান খান শ্যামপুর

মাটি

৫ ডিসেম্বর ‘বিশ্ব মাটি দিবস’ পালিত হয়ে গেল। ক্রমাগত রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে মাটি দূষণের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। চাষিরাও বেশি উৎপাদনের আশায় একই উপাদানের সার বার বার জমিতে দিয়েই চলেছেন।
ঠিক সার প্রয়োগের জন্য মাটি পরীক্ষা খুবই প্রয়োজন। কেন্দ্রীয় সরকার মাটি পরীক্ষা করে ‘সয়েল কার্ড’ দেওয়ার কথা বলেছে। কিন্তু
তা মনে হয় কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ আছে। সব চাষির হাতে মোটেই কার্ড পৌঁছয়নি।

ব্যক্তিগত উদ্যোগে চাষি তাঁর জমির মাটি পরীক্ষা করাবেন, সে উপায়ও নেই। কারণ এ রাজ্যে সম্ভবত একটি মাটি পরীক্ষাগার কেন্দ্র আছে, কলকাতার টালিগঞ্জে। সেখানে মাটি পরীক্ষা করতে দিলে রিপোর্ট পেতেও অনেক দেরি হয়ে যায়। সম্প্রতি রাজ্য সরকার প্রতি জেলায় একটি করে মাটি পরীক্ষাগার তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তা হলে সমস্যা খানিক মিটবে। তবে প্রতি ব্লকে একটি করে পরীক্ষাগার হলে তবেই সমস্যা পুরো মিটবে মনে হয়।

এই অবস্থায় হুগলি জেলার হরিপাল ব্লকের পানিশেওলা সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির মাটি পরীক্ষাগার কেন্দ্রটি দু’বছর হল সম্পূর্ণ প্রস্তুত হয়েও পড়ে আছে। কেন্দ্রীয় সরকারের অনুদানে নির্মিত এই পরীক্ষাগার বছর দুয়েক আগে পাশাপাশি গ্রাম থেকে নমুনা মাটি সংগ্রহ করে, পরীক্ষার জন্য। কিন্তু কেন এটি বন্ধ, তা অজানা। এটি চালু হলে হরিপাল ব্লক তো বটেই, গোটা হুগলি জেলার চাষিদের বিশেষ উপকার হবে।

রাধাকান্ত কর্মকার বলদবাঁধ, হুগলি

পাকা রাস্তা

পূর্ব বর্ধমান জেলার সদর ২নং ব্লকের অন্তর্গত টোটপাড়া, বেলনা, কুমিরকোলা গ্রামের বাসিন্দাদের দীর্ঘ দিনের দাবি, বড়শূল বাসস্ট্যান্ড থেকে কুমিরকোলা, টোটপাড়া হয়ে বেলনা গ্রাম ছুঁয়ে আমড়া গ্রামের ভিতর দিয়ে ২নং জাতীয় সড়ক পর্যন্ত ৫ কিমি রাস্তাটি পাকা করার। বাম আমলে প্রযুক্তিগত ত্রুটিপূর্ণ একটি কালভার্ট হয়েছিল, বর্তমান সরকারের আমলে ছ’বছরে কিছু হয়নি। বড়শূলে বিডিও অফিস, ছেলেদের স্কুল, মেয়েদের স্কুল, হাসপাতাল, পশু-হাসপাতাল, ব্যাংক, পোস্ট অফিস, শিল্প কেন্দ্র, হাট-বাজার সবই থাকার ফলে ওই রাস্তা অত্যন্ত জরুরি। আবার বর্ধমান সদর শহরের যোগাযোগও এই রাস্তার মাধ্যমে। বিডিও অফিসটি টোটপাড়া গ্রাম থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে।

নীলমাধব মণ্ডল বর্ধমান

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন