Durga Puja 2021

সম্পাদক সমীপেষু: পুজোর আনন্দ

করোনার মতো এই অতিমারির সময় আমরা নিজেরাই পারি পুজোয় কিছু কাটছাঁট করে জনসাধারণের উপর চাপ কমাতে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২১ ০৫:৪৪
Share:

‘আড়ম্বরে কাটছাঁট হলে মন্দ কী’ (৬-১০) শীর্ষক প্রবন্ধে লেখক এক সময়োপযোগী তথ্য তুলে ধরেছেন। সরকার উৎসবে আনন্দ উপভোগ করার জন্য পুজো কমিটিগুলিকে নগদ ৫০ হাজার টাকা-সহ ইলেকট্রিক বিলে ছাড় প্রভৃতি সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে। এ পুজো সকলের। তাই যাতে সকলে মিলেমিশে আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, তাই সরকারের এই সুব্যবস্থা। কিন্তু তা সত্ত্বেও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে জনতার উপর চাঁদা আদায়ের নামে চলে বিভিন্ন ভাবে জুলুমবাজি। আইন থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে পুলিশকে নীরব দর্শক হয়ে থাকতে হয়। প্রায় দেড় বছর হতে সাধারণ মানুষের চাকরিবাকরি নেই বললেই চলে। বাধ্য হয়ে অনেকে পেশা বদলেছেন শুধুমাত্র পরিবারের মুখে দু’মুঠো অন্ন তুলে দেওয়ার জন্য। আজও নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও গরিব পরিবারগুলিকে সরকারের রেশনের উপর নির্ভর করে থাকতে হয়। এই অবস্থায় চাঁদার এই জুলুমবাজি জনসাধারণের উপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাস্তার উপর গাড়ি দাঁড় করিয়ে চাঁদা আদায় করা হয়।

Advertisement

পুজোমণ্ডপে প্রচণ্ড জোরে ডিজে বাজানো, শব্দবাজি ফাটানোর ফলে ভয়াবহ শব্দদূষণ তৈরি হয়, যা খুবই বিরক্তিকর। আগের চাকচিক্যহীন পুজো ছিল একেবারেই নির্ভেজাল, আর আনন্দ ছিল শতগুণ। সেই সময়ের চেয়েচিন্তে মায়ের পুজোয় নিষ্ঠা-ভক্তি ছিল অবাধ। তাই করোনার মতো এই অতিমারির সময় আমরা নিজেরাই পারি পুজোয় কিছু কাটছাঁট করে জনসাধারণের উপর চাপ কমাতে।

অক্ষয় দত্ত

Advertisement

মেজিয়া, বাঁকুড়া

সচেতনতা চাই

শারদোৎসব উপলক্ষে রাজ্য সরকার সমগ্র রাজ্যে আগামী ২০ অক্টোবর পর্যন্ত রাত্রিকালীন কোভিড আচরণবিধি শিথিল করেছিল, যাতে সকলে রাতেও বেরিয়ে ঠাকুর দেখতে পারেন। তবে পাশাপাশি, সামাজিক দূরত্ব মেনে, মুখে মাস্ক পরে মানুষকে বেরোতে প্রশাসন অনুরোধ জানিয়েছিল। অন্যথায়, ডিজ়াস্টার ম্যানেজমেন্ট আইন ২০০৫ অনুযায়ী, বিধি লঙ্ঘনকারীকে শাস্তি পেতে হবে। অথচ, রাস্তাঘাটের ছবিটা পুজোর আগে থেকেই উল্টো। অধিকাংশ মানুষ কোভিড আচরণ মানছেন না। মুখে তো মাস্কের বালাই নেই। যদিও বা পরেন, তা নাকের নীচে ঝুলছে। বোঝা গিয়েছিল, যেখানে পুজোর আগেই মানুষ এত বেপরোয়া, সেখানে উৎসব উপলক্ষে আচরণবিধি শিথিলতার সুযোগে তার সিকি ভাগও তাঁরা মানবেন না। ঠিক এই শিথিলতার জন্যই চলতি বছরে উত্তরাখণ্ডে অনুষ্ঠিত কুম্ভমেলা থেকে দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল কোভিডের দ্বিতীয় স্রোত। অকালে গিয়েছিল বহু প্রাণ। অন্য দিকে, গত বছর কড়া নিয়মবিধি বলবৎ করেই পশ্চিমবঙ্গে কোভিডের প্রথম ঢেউ অনেকটা রোখা সম্ভব হয়েছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ভারত কোভিড পর্বের শেষ পর্যায়ে দাঁড়িয়ে আছে, যা ২০২২-এর পরে হয়তো নির্মূল হবে। তা হলে এ বছরও গত বছরের মতো কড়াকড়ি করা উচিত ছিল। ছোটদের টিকাকরণ প্রক্রিয়া শুরুই হয়নি। বড়রা এ ক্ষেত্রে সম্ভবত কিছুটা সুরক্ষিত হলেও চিন্তা থেকে যায় সেই ছোটদের নিয়েই। অতএব ভয়াবহতা রুখতে প্রশাসনিক স্তরে আরও কঠোরতা অবলম্বন করা উচিত এবং সামাজিক জীব হিসাবে মানুষকে নিজেকেই সচেতন হতে হবে।

শুভজিৎ বসাক

কলকাতা-৫০

রাষ্ট্রের কর্তব্য

বর্তমান পরিস্থিতিতে বড় অংশের খেতমজুর, কুম্ভকার, তাঁতিরা জীবিকার তাগিদে কেউ হয়েছেন রাজমিস্ত্রি, কেউ হয়েছেন দোকান কর্মচারী। কেউ রিকশা চালাচ্ছেন, কেউ বা ভ্যান। কিন্তু বেকারত্বের এত হাহাকার যে, সেখানেও চলছে প্রতিযোগিতা। এ সব কাজ করে তাঁরা যা আয় করছেন, তাতে এই চড়া দ্রব্যমূল্যের বাজারে সংসার চালানো মুশকিল। তাই এঁদের মধ্যে অনেকেই আজ অন্য রাজ্যে গিয়ে পরিযায়ী খেতাব পেয়েছেন। কিন্তু তাতেও কি সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান হয়েছে? বাংলায় জমি-নীতির কারণে এখানে তেমন ভারী শিল্প গড়ে উঠতে পারছে না। আবার যে রাজ্যগুলিতে কারখানা গড়ে উঠেছে, সেখানেও কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে শুধুমাত্র উৎপাদন সামগ্রীর চাহিদা না থাকার কারণে। উৎপাদন সামগ্রীর চাহিদা তখনই কমে যায়, যখন মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যায়। আর ক্রয়ক্ষমতা তখনই কমে, যখন দেশের বেশির ভাগ মানুষের রোজগার কমে যায়। এখন প্রশ্ন হল, এই বিপুল অংশের মানুষের কী হবে? কী করে তাঁদের পেট চলবে? ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করার খরচই বা কে জোগাবে? প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে সমাজে মানুষের যেমন অনেক কিছুরই সুবিধা হয়েছে, তেমনই কিছু সমস্যারও সৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে যে সমস্ত মানুষের কাজ চলে গিয়েছে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাঁদের জীবিকা নির্ধারণের পরিকল্পনা রাষ্ট্রকেই গ্রহণ করা দরকার। তা না হলে অনাহার অর্ধাহারে মানুষের মৃত্যু বাড়বে। কিন্তু এই সঙ্কটাপন্ন মানুষদের জন্য সরকারের কী ভাবনা রয়েছে? মাসে ৫০০ টাকা পাওয়ার লক্ষ্মীর ভান্ডার? লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প জনমোহিনী রাজনীতির একটা অঙ্গ হতে পারে। কিন্তু জীবিকার সঙ্কট থেকে তা কখনওই মুক্তি দিতে পারবে না। আবার পুরনো জীবিকা থেকে উৎখাত হওয়া মানুষগুলো হয়তো আর আগের জীবিকায় ফিরতেও পারবেন না। তাই এঁদের ক্ষেত্রে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা ছাড়া সরকারের কাছে বিকল্প কোনও পথ খোলা নেই। এই মানুষগুলোকে প্রজা না ভেবে নাগরিক ভেবে তাঁদের সমস্যা সমাধান করাটাই হবে রাষ্ট্রের কর্তব্য।

সনাতন পাল

বালুরঘাট, দক্ষিণ দিনাজপুর

মহিষাসুরমর্দিনী

মহালয়ার ভোরে অধিকাংশ বাঙালির ঘুম ভেঙেছিল বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠের মধুময় জাদুতে‌। সে যত‌ই পরিস্থিতি প্রতিকূল হোক, তবু উৎসবের এই দিনগুলো এগিয়ে এলেই রেডিয়োয় মহালয়ার প্রসঙ্গ উঠবেই। এই অনুষ্ঠান নিয়ে আলোচনাও কম হয় না। ভুল-ঠিক তথ্য মিলিয়ে মিশিয়ে প্রায় সবাই রেডিয়োর এই জনপ্রিয়তম অনুষ্ঠানটিকে ঘিরে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। তবে সত্যি‌ সত্যিই ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ শোনার জন্য ক’জন‌ মানুষ রেডিয়োতে কান পাতেন, তা বলা ভীষণ শক্ত। অনেকে মনে করেন, এই অনুষ্ঠান যখন‌ এক বার রেকর্ড হয়ে বাজারে বেরিয়ে গিয়েছে, তখন বছরের এক দিন কখন সেন্টার থেকে তা বাজাবে, তা শোনার জন্য হা-পিত্যেশ করে বসে থাকার কী মানে! কিন্তু যাঁরা‌ বিগত দু’-চার বছর ধরে শুনছেন, তাঁরা জানেন, এখন আকাশবাণী থেকে যে‌ রেকর্ডিংটি বাজানো হয়, সেটি প্রচলিত রেকর্ড নয়। আকাশবাণীতে এই অনুষ্ঠানটির অনেকগুলো রেকর্ড রয়েছে। সেখান থেকে এডিট করে সম্পূর্ণ ভিন্ন স্বাদের একটি রেকর্ড এখন বাজে। প্রচলিত রেকর্ডের সঙ্গে বহু স্থানে এর অমিল রয়েছে। যেমন‌, একটি হল প্রচলিত রেকর্ডে ‘যা চণ্ডী...’ স্তোত্রটি শুরুতেই সঙ্গীত আকারে শুনতে পাওয়া যায়। কিন্তু এখন যে‌ রেকর্ড বাজে, তাতে এই স্তোত্রটিকে স্বয়ং বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র মহাশয়কে আবৃত্তি করতে শোনা যায় তাঁর স্বভাবসিদ্ধ সুর ও ছন্দভঙ্গিমায়। যাঁরা সারা বছর‌ এই অনুষ্ঠান এখানে ওখানে শোনা যায় বলে আর রেডিয়ো শোনেন না, তাঁরা কিন্তু উৎসবের এই মরসুমে অনেক কিছু মিস করে যান‌।

শঙ্খ অধিকারী

সাবড়াকোন, বাঁকুড়া

এমন কেন

কিছু দিন আগে আমার এক আত্মীয় শিয়ালদহ স্টেশনে প্ল্যাটফর্ম টিকিট ১০ টাকায় নিলেন। হাওড়ার নতুন কমপ্লেক্সে একই টিকিট কাটতে গেলে ৫০ টাকা চাওয়া হল। এ দিকে হাওড়ার পুরনো কমপ্লেক্সে ১০ টাকাতেই টিকিট পাওয়া গেল। সে ক্ষেত্রে প্রশ্ন ওঠেই, দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়ার মান কি পূর্ব রেলের হাওড়ার মানের চাইতে পাঁচগুণ বেশি?

উদয়েন্দু সিনহা

ঝাপেটাপুর,খড়্গপুর

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন