Coronavirus in India

সম্পাদক সমীপেষু: চাই একটু ভাবনা

অনলাইনে পড়াশোনার চেষ্টা হলেও তা সীমিত ছাত্রছাত্রীর কাছে পৌঁছেছে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২১ ০০:৫৫
Share:

আর্যভট্ট খান লিখেছেন, করোনা অতিমারির জন্যে এই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের গুরুতর ক্ষতি হয়েছে (‘৮ম শ্রেণি পাশের শংসাপত্র অমিল, সঙ্কটে কর্মপ্রার্থীরা’, ১৪-১২)। সর্বাংশে সত্যি। অনলাইনে পড়াশোনার চেষ্টা হলেও তা সীমিত ছাত্রছাত্রীর কাছে পৌঁছেছে। শিক্ষা দফতর নবম শ্রেণি অবধি পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরীক্ষা না হলে মার্কশিট ও সার্টিফিকেট দিতে পারে না বিদ্যালয়গুলি। এর থেকে উদ্ভূত সমস্যাকেই তুলে ধরা হয়েছে। এই শিক্ষাবর্ষে পড়াশোনার যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণের উপায় নেই। তবে পড়ুয়ারা বিদ্যালয় থেকে পাঠ্যপুস্তক পেয়েছিল এবং বাড়িতে পড়াশোনার অঢেল সময় পেয়েছে। মিড-ডে মিল বাবদ খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার সময় ছাত্রছাত্রীদের ‘মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক’ দেওয়া হয়েছে। প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়েছিল, উত্তর লিখে ছাত্রছাত্রীরা বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকারা মূল্যায়নও করেছেন। শিক্ষা দফতর-প্রেরিত প্রশ্নপত্রগুলিতে নম্বর বিভাজন থাকলে মার্কশিটও তৈরি করা যেত। এর একটি রূপরেখা যদি বিদ্যালয় শিক্ষা দফতর তৈরি করে দেয়, তা হলেও মোটামুটি সুরাহা হয়। অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের চাকরির প্রয়োজনে সার্টিফিকেটের দরকার। পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে তাদের লিখিত পরীক্ষা নিলে মার্কশিট ও সার্টিফিকেটের সমস্যাও থাকবে না। সরকারি চাকরির কর্মপ্রার্থীদের যে ভাবে লিখিত পরীক্ষা গ্রহণ করা হচ্ছে, সে ভাবেও শুধু অষ্টম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণ করা যায়। যে বিদ্যালয়ে এত পরিমাণ কক্ষ ও অন্য সুবিধা আছে তাতে শুধু অষ্টম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের কোভিড বিধি মেনে পরীক্ষা গ্রহণও দুষ্কর নয়। সরকার একটু ভাবনাচিন্তা করলেই সমস্যা মিটে যেতে পারে।

Advertisement

সব্যসাচী ধর

শিক্ষক, সিউড়ি নেতাজি বিদ্যাভবন

Advertisement

আর ২০২২?

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা-সহ ২০২১ সালের সমস্ত বোর্ডের পরীক্ষাই অতিমারির জন্য নির্ধারিত সময়ের থেকে কয়েক মাস পরে হবে বলে কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে। কিন্তু যারা পরের বছর, অর্থাৎ ২০২২-এ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক দেবে, তাদেরও পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হবে কি? না কি তাদের নির্দিষ্ট সময়েই পরীক্ষায় বসতে হবে? তারাও তো অনেকে অনলাইনে ক্লাস করতে না-পারার জন্য সমস্যার সম্মুখীন।

আবার কবে তারা স্কুলে গিয়ে ক্লাস করতে পারবে তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে অনুরোধ, ২০২২ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাও যদি পিছিয়ে দেওয়া হয়, তবে সেই সব পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরাও উপকৃত হবে।

ঋতুপর্ণা ভট্টাচার্য

চুঁচুড়া, হুগলি

বড় গরম

১৫ জুন থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু, ঘোষণা হয়েছে। অর্থাৎ, জুনের প্রথমার্ধে মাধ্যমিক পরীক্ষা হবে। কিন্তু সে সময় গ্রীষ্মের দাবদাহ চলবে। অন্য বছর গ্রীষ্মের ছুটি থাকে এই সময়। পরীক্ষা শুরুর সময় দুপুর ১২টার বদলে সকাল ৯টা বা ১০টায় করলে ভাল হয়। না হলে পরীক্ষার্থীরা গরমে কাহিল হয়ে পড়বে।

গৌতম পাত্র

শিক্ষক, মাহেশ শ্রী রামকৃষ্ণ আশ্রম বিদ্যালয়, হুগলি

হৃদমাঝারে

বোলপুরের বাউল শিল্পী বাসুদেব দাস দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে শুনিয়েছেন একই গান, ‘তোমায় হৃদ মাঝারে রাখব ছেড়ে দেব না’। প্রকৃতপক্ষে হৃদয়টা এই রকমই হওয়া উচিত, যেখানে সমস্ত মানুষকে ধারণ করা যায়। অথচ রাজনৈতিক স্বার্থবুদ্ধির চাপে বাসুদেবের মুখে গানের আসল ভাষাটা বদলে গিয়ে সঙ্কীর্ণ হয়ে যায়। ‘শ্যাম রাখি না কুল রাখি’ অবস্থার সৃষ্টি হয়। প্রকৃত ধার্মিকদের মধ্যে বিবাদ-বিদ্বেষ নেই। কারণ সব ধর্মই শিক্ষা দেয় মানুষকে ভালবাসতে, ‘অমৃতের পুত্র’ বলে সম্মান করতে। ধর্মকে ব্যবহার করে সাম্প্রদায়িক বিরোধের পরিবেশ তৈরি করেন রাজনীতিকরা। এখন আবার যে ভাবে ‘বাঙালি’ সেন্টিমেন্ট তুলে প্রাদেশিকতার প্রচার চলছে, তা ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার থেকে কম বিপজ্জনক নয়। রাজনৈতিক স্বার্থে ধর্ম, বর্ণ, ভাষা প্রভৃতি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি করা হচ্ছে, রাজনৈতিক বিরোধ পরিবারকেও ভেঙে দিচ্ছে। যে হৃদয়ের দরজা সকলের জন্য খোলা থাকার শিক্ষা আমরা মনীষীদের কাছ থেকে পাই, সেখানে প্রাচীর তোলার শিক্ষা আমরা যেন বর্জন করি।

সন্দীপ সিংহ

হরিপাল, হুগলি

টানাটানি

শান্তিনিকেতনের বাসুদেব দাস বাউলকে নিয়ে যে নির্লজ্জ টাগ অব ওয়ার চলছে, তা ভোটরঙ্গে সর্বশেষ সংযোজন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তাঁর বাড়িতে দুপুরের আহার করছেন, তার লাইভ টেলিকাস্ট করার আগেই সে দিনের মেনু কাগজে প্রকাশিত হয়েছে। কেন মন্ত্রী অভাব-অভিযোগের গল্প শুনে সেখানেই তাৎক্ষণিক সমাধান, বা নিদেনপক্ষে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বেরিয়ে এলেন না, তা নিয়েও চর্চা হয়েছে। শুনলাম, পর দিনই বাসুদেব স্থানীয় তৃণমূল অফিসে যোগাযোগ করেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদযাত্রায় তিনি যোগ দেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে মঞ্চে উঠতে বলে গানের অনুরোধ করেন। বাসুদেব বিখ্যাত বাউলসঙ্গীত ‘‘ছেড়ে দিলে সোনার গৌর আর তো পাব না’’ কথা বদলে গাইলেন, ‘‘সোনার দিদি আর তো পাব না।’’ বাউলগানের দর্শন ও পরম্পরাকে জলাঞ্জলি দিয়ে এই তোষামোদ কেন?

আমি বাসুদেব দাস বাউলকে অনেক বছর ধরে ব্যক্তিগত ভাবে চিনি, ভালবাসি ও শ্রদ্ধা করি। তিনি অসাধারণ মাপের সাধক ও শিল্পী। শান্তিনিকেতনে যখন যাই, শ্যামবাটির কাছে সুভাষপল্লিতে বাসুদেবের বাড়িতে গিয়ে এক-দেড় ঘণ্টা তাঁর সঙ্গ করে আসি। তাঁর মতো মানুষকে দলে টানাটানির খেলায় রাজনৈতিক দেউলিয়াপনাই প্রমাণিত হয়।

অনিলেশ গোস্বামী

শ্রীরামপুর, হুগলি

বাঙালি কে?

দেবাশিস ভট্টাচার্যের ‘‘বাংলায় ‘বাঙালি’র বেশে’’ (৩০-১২) শীর্ষক নিবন্ধটির প্রসঙ্গে জানাই, বাঙালি আবেগ জাগ্ৰত করার বিষয়টি কি এতই ঠুনকো? শুধুমাত্র রবীন্দ্রনাথ ও বিবেকানন্দ নন, সেই আবেগকে ধারণ করেছেন নজরুল ইসলাম, বেগম রোকেয়া, সৈয়দ মুজতবা আলী, আবু সয়ীদ আইয়ুবের মতো কতশত ব্যক্তিত্ব। এঁরা নমস্য হয়েছেন বাংলার মাটিকে আঁকড়ে ধরে বাঙালির সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করার জন্য। এমন উদাহরণও কম নয় যাঁরা আদতে বাঙালি নন, কিন্তু বাংলাকে ভালবেসে বাঙালি সংস্কৃতির অঙ্গ। ভি বালসারা, শ্যামানন্দ জালানের মতো ব্যক্তিত্ব কি বাঙালির আবেগের সঙ্গে জড়িত নন? শ্যামানন্দ কলকাতায় বসবাস করে বাঙালির রচনাকে পরিচিত করেছেন অবাঙালিদের কাছে। নিজে অভিনয় করেছেন বাংলা নাটক ও সিনেমায়। রাজনীতির ময়দানে এসে বাঙালির আবেগ শুধু সম্প্রদায় ও ভাষাভিত্তিক সঙ্কীর্ণতার আবর্তে ঘুরপাক খাবে, সেটা কখনওই কাম্য হতে পারে না।

অচিন্ত্য বিশ্বাস

কলকাতা-৬৭

সেরা ঝুলন

বাঙালি ক্রিকেটার ঝুলন গোস্বামী স্থান পেলেন আইসিসি-র নির্বাচনে এই দশকের বিশ্ব একাদশে। এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ভবিষ্যতের বাংলার মহিলা ক্রীড়াবিদদের পক্ষে এক অনুপ্রেরণা। তাঁরা হয়তো এখন স্কুল-কলেজে শিক্ষার সঙ্গে ক্রীড়াচর্চা চালিয়ে যাচ্ছেন। পরিবার, সমাজ ও পরিবেশের সঙ্গে লড়াই করে খেলাধুলো করতে হচ্ছে। আরতি সাহা, বুলা চৌধুরী, জ্যোতির্ময়ী শিকদার, মান্তু-মৌমাদের মতো ঝুলনও তাঁদের অনুপ্রাণিত করবেন।

শোভন সেন

সাঁতরাগাছি, হাওড়া

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন