jangal mahal

সম্পাদক সমীপেষু: স্কুলে কি ফিরবে ওরা

করোনায় প্রাইভেট টিউশন বন্ধ। অভিভাবকরা সংসারের বিভিন্ন কাজে যুক্ত থাকায় নিজেরাও পড়াতে পারছেন না ছেলেমেয়েদের।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২১ ০৫:০৮
Share:

পশ্চিমবঙ্গে জঙ্গলমহল উন্নয়নের নিরিখে বেশ পিছিয়ে। শিক্ষার হারও এখানে কম। জেলাগুলিতে তফসিলি জাতি ও জনজাতির একটা বড় অংশ বসবাস করেন। লকডাউনের জেরে রাজ্যে দীর্ঘ দিন স্কুল বন্ধ। ছাত্রছাত্রীরা বাড়িতে বসে আছে। মূলত মিড-ডে মিলের কারণে স্কুলে বই-খাতা-থালা নিয়ে হাজির হত এরা। এখন ছেলেমেয়েগুলো রোজগারের তাগিদে বিভিন্ন পেশায় যুক্ত হচ্ছে। জঙ্গলমহলের জেলাগুলি বনজ সম্পদের উপর নির্ভরশীল। অনেক ছাত্রছাত্রী তাই মা, ঠাকুমা বা কাকিমাদের সঙ্গে জঙ্গলে যাচ্ছে শালপাতা, শালবীজ, কেন্দুপাতা বা শুকনো জ্বালানি সংগ্রহ করতে। কেউ গরু বা ছাগলও চরাচ্ছে সারা দিন।

Advertisement

করোনায় প্রাইভেট টিউশন বন্ধ। অভিভাবকরা সংসারের বিভিন্ন কাজে যুক্ত থাকায় নিজেরাও পড়াতে পারছেন না ছেলেমেয়েদের। ফলে, ছাত্রছাত্রীরা প্রায় দু’বছর ধরে বইখাতা থেকে মুখ ফিরিয়ে রয়েছে। কোনও কোনও অভিভাবক অল্পবয়সি মেয়েদের বিয়েও দিয়ে দিচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেরই বক্তব্য— তাঁদের ভাল ফোন কিনে দেওয়ার ক্ষমতা নেই। ফলে, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা হচ্ছে না। তারা বসে আছে স্কুল কবে খুলবে, সেই আশায়।

অন্য দিকে, উচ্চ, মধ্য ও নিম্নবিত্ত শিক্ষিত সমাজ আধুনিক প্রযুক্তিবিদ্যাকে অবলম্বন করে শিক্ষাধারা বজায় রাখতে সচেষ্ট। এর ফলে সমাজে শিক্ষার ভেদাভেদ আরও প্রকট হচ্ছে। বিশেষ করে আদিবাসী, তফসিলি জাতির ছাত্রছাত্রীরা আরও পিছিয়ে পড়ছে শিক্ষার আলো থেকে। সব কিছু স্বাভাবিক হলেও তাদের কি আর স্কুলমুখী করা যাবে?

Advertisement

প্রভাত কুমার শীট, মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর

স্কুল পরিষ্কার

কোভিড আবহে লকডাউনের সময় বহু শিক্ষায়তনের বারান্দায় ধুলোর আস্তরণ। ক্লাসের অবস্থাও প্রায় একই রকম। চার দিকে আগাছা ক্রমশ বাড়ছে। এমনকি এই সুযোগে শিক্ষায়তন চত্বরের ফাঁকা জায়গায় অনেকেই গরু-ছাগল বেঁধে রেখে যাচ্ছেন। কখনও-সখনও এলাকার ছেলেরা স্কুল-বারান্দায় বসে মোবাইল ঘাঁটে। সরকারি বিধিমতে এখন স্কুলগুলিতে পঠনপাঠন বন্ধ। তাই হয়তো স্কুল কর্তৃপক্ষের তেমন গা নেই। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলি মাঝেমধ্যেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা প্রয়োজন। অন্তত মাসে এক বার মিড-ডে মিলের খাদ্যসামগ্রী বিতরণের ঠিক আগে বা ওই সময়েই এই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করা যেতে পারে। যে হেতু স্কুলগুলিতে এখন তুলনামূলক ভাবে কাজের চাপ অনেক কম, তাই এ ব্যাপারে কি কোনও উদ্যোগ করা যায় না? এই বিষয়ে স্কুলের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষিকা, পরিচালকমণ্ডলীর সদস্য এবং স্কুল পরিদর্শকের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

মুস্তাক আলি মণ্ডল আমতা, হাওড়া

প্রতিবাদ কই

কয়েক দিন ধরে সংবাদপত্রে পড়ছি ব্রাজিলে করোনা মোকাবিলায় ব্যর্থ শাসক দলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমেছেন। সারা বিশ্বে করোনায় মৃত মানুষের সংখ্যার নিরিখে ব্রাজিল দ্বিতীয় আর ভারত তৃতীয় স্থানে রয়েছে। টিকা প্রদানের ক্ষেত্রেও ব্রাজিল এবং ভারত যথেষ্ট পিছিয়ে। তফাত হল, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট প্রথম থেকে রোগটিকে তুচ্ছ করেছেন, আর আমাদের শাসকরা দিয়েছেন ভাঁওতা। দু’টি দেশই বিপর্যস্ত। অথচ, আমাদের দেশে কোনও বিক্ষোভ নেই কেন? ব্রাজিলে একটি লড়াকু বামপন্থী দল আছে, সংগঠন আছে। সবচেয়ে বড় কথা, সাধারণ মানুষের মধ্যে তাদের প্রভাব আছে। আমাদের দেশে বামপন্থীরা ঠান্ডা ঘরে বসে আলোচনা করতে পারেন, কিন্তু পথে নেমে আন্দোলন করা আর তাঁদের দ্বারা হয় না। কাজেই ব্রাজিলের মানুষ হয়তো তাঁদের শাসকের বিরুদ্ধে পথে নামতে পারেন, কিন্তু আমরা টিকার জন্য হা-পিত্যেশ করে বসে থাকব, আর তৃতীয় ঢেউয়ের জন্য অপেক্ষা করব।

অমিত মুখোপাধ্যায়, কলকাতা-৭৫

পথকুকুর

রাজধানী দিল্লিতে সম্প্রতি উপযুক্ত জায়গার ঘাটতির ফলে কুকুরদের মর্গে করোনায় মৃতদের দাহ করা হয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত, বাংলায় মৃত পথকুকুরদের বাঁধানো মর্গ তো দূর, মৃত্যুর পরে অনেক সময় ভাগাড়ে ঠাঁই পাওয়ারও সৌভাগ্য হয় না। ইদানীং, করোনা আবহে অধিকাংশ সংস্থা শুধুমাত্র মানবকল্যাণেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। ফলে গোটা লকডাউন পর্বে অবহেলিত সারমেয় সমাজ খাদ্যাভাবে মরছে। গুটিকতক ব্যক্তি বা সংস্থা নয়, গোটা সমাজেরই এই সময় এই প্রজাতির পাশে থাকা উচিত। এদেরই রাত জাগার কারণে চোর-দুষ্কৃতীরা অপরাধমূলক কাজ করতে গিয়ে বাধা পায়। ফলে, অনেক সময় অপরাধীরা নিজেদের কাজের সুবিধার্থে এই প্রভুভক্ত শ্রেণির খুনে লিপ্ত হচ্ছে। নিঃসন্দেহে পথকুকুরদের কাছে আমরা নানা দিক থেকে ঋণী। আমরা কি পারি না এদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে? নেতানেত্রীরা ক্ষমতায় আসেন-যান। কিন্তু পথকুকুরগুলোর ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না।

তাই প্রশাসন ও সাধারণ মানুষকে এদের পাশে দাঁড়াতে অনুরোধ করব, যাতে এদের নির্দিষ্ট আশ্রয় ও খাদ্যের কোনও সুরাহা করা যায়।

দেবজিৎ সরকার, তমলুক, পূর্ব মেদিনীপুর

রেলগেটে যানজট

নদিয়া জেলার সদর শহর কৃষ্ণনগর। প্রশাসনিক-সহ নানা কাজে জেলা, এমনকি জেলার বাইরে থেকেও প্রচুর মানুষ নিত্যদিন এখানে আসেন। ৩৪ নম্বর (বর্তমানে ১২ নম্বর) জাতীয় সড়ক থেকে পালপাড়া মোড় দিয়ে এ শহরে প্রবেশের পথে কিংবা শহর থেকে জাতীয় সড়কে যাওয়ার পথে পড়ে শিয়ালদহ ডিভিশনের অন্তর্গত লালগোলাগামী রেলপথ। এই রেলগেটে ট্রেন আসার অনেক আগেই গেট ফেলে দেওয়া হয়। প্রায় প্রতি দিনই ঘণ্টার পর ঘণ্টা পার হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। বাস, ছোট গাড়ি, অ্যাম্বুল্যান্স, লরি দীর্ঘ ক্ষণের জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে। তৈরি হয় বিরাট যানজট। বহু ক্ষেত্রে দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়ে না থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে রোগীকে ঘুরপথে নিয়ে যেতে গিয়ে প্রচুর হয়রানির শিকার হতে হয় রোগীর পরিজনদের। অনেকে সময় নষ্ট না করে গেট ডিঙিয়ে হেঁটে পারাপার করেন।
ফলে, যে কোনও দিন বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

জাতীয় সড়ক থেকে শহরের অভ্যন্তরে প্রবেশের এই রাস্তাটি রাজ্য সরকারের পূর্ত দফতরের অধীন। অন্য দিকে, রেলগেট সংলগ্ন এলাকাটি কেন্দ্রের রেলের। যৌথ ভাবে এই রেলগেট-সংলগ্ন এলাকায় যদি যান চলাচলের উপযোগী ওভারব্রিজ বা আন্ডারপাস নির্মাণ করা হয়, তা হলে প্রতি দিনের ভোগান্তির হাত থেকে সাধারণ মানুষ মুক্তি পাবেন।

দীপ্তরাজ সরকার, রানাঘাট, নদিয়া

প্রতারণা চলছে

মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, দেবাঞ্জনকাণ্ডের প্রতারণা ব্যতিক্রমী ঘটনা। সাম্প্রতিক এক অভিজ্ঞতায় মনে হল, তাঁর এই কথাটা হয়তো পুরোপুরি ঠিক নয়। একটি অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে শরীরে অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া হয়েছিল। প্যাকেট এবং ট্যাবলেট স্ট্রিপটি ভাল করে দেখতে গিয়ে লক্ষ করলাম, প্যাকেটে কাগজের উপর প্রায় অদৃশ্য সাদা রং মেশিনে ছেপে তার উপর ব্যাচ, মেয়াদ ফুরোনোর তারিখ, দাম ইত্যাদি নতুন করে ছাপা রয়েছে। বিক্রেতা স্বীকার করলেন যে, এটা হামেশাই হয়। তবে এতে নাকি কিছু হয় না। খবর নিয়ে জানলাম, প্রায় সব ডিস্ট্রিবিউটর ও বড় বিক্রেতা ওষুধের লেবেল পাল্টে থাকেন। কেউ দেখার নেই। এমন ঘটনার কথা কাকে বলব?

তুষারকান্তি চৌধুরী, উত্তরপাড়া, হুগলি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন