Mamata Banerjee

সম্পাদক সমীপেষু: কেবলই কথা

সারদা-নারদা হুলে আক্রান্ত ব্যক্তিদেরও তিনি ২০১৬-র মন্ত্রিসভায় স্থান দিয়েছেন।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২০ ০০:২০
Share:

—ফাইল চিত্র।

তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলবাজি এবং দুর্নীতি নিয়ে আগেও বহু বার সরব হয়েছেন। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। ২০১৬-র বিধানসভা ভোটের আগে নারদা কাণ্ডে নেতা-মন্ত্রীদের হাত পেতে টাকা নেওয়ার দৃশ্য সামনে এলে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘আগে জানলে টিকিট দিতাম না।’ কিন্তু আবার জিতে আসার দিন সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘আমাদের রাজ্যে দুর্নীতি বলে কিছু হয় না। আমি গর্বিত, পশ্চিমবঙ্গ দুর্নীতিহীন রাজ্য।’ সারদা-নারদা হুলে আক্রান্ত ব্যক্তিদেরও তিনি ২০১৬-র মন্ত্রিসভায় স্থান দিয়েছেন।

Advertisement

ওই বছরই উত্তরবঙ্গ সফরে প্রশাসনিক বৈঠকে এসে বন-সেচ-পূর্ত দফতরের কাজে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ শুনে মুখ্যমন্ত্রী ঝাঁঝিয়ে উঠে বলেছেন, ‘এ তো কাজের নামে লুঠ হচ্ছে’ (১-৭-১৬)। আবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের সভায় বলেছিলেন, ‘কে টাকা তোলে সব জানি’ (১৭-১১-১৮)। নানা প্রকল্পের নামে নেওয়া কাটমানির টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিতে হয়েছিল নজরুল মঞ্চে বসে (১৮-৬-১৯)।

‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্প থেকে ২৫ শতাংশ এবং ‘সমব্যথী’ প্রকল্পের ২০০০ টাকার মধ্যে ২০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি নিজেই স্বীকার করে নিয়েছেন। অথচ কাটমানি নেওয়ার জন্য রাঘব বোয়ালদের তিনি শাস্তি দিলেন না।

Advertisement

মলয় মুখোপাধ্যায়

কলকাতা-১১০

দলের বিডিও?
আমপান-ত্রাণের ‘‘তালিকায় গোলমালের জন্য ছয়-সাত জন বিডিওকে শোকজ করা হইয়াছে’’ (‘দুর্নীতি দুর্যোগ’, সম্পাদকীয়, ২৬-৬)। রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপ সাধুবাদযোগ্য। কিন্তু সমস্যা আরও গভীরে। কয়েক জন বিডিও ব্যক্তিত্বের অভাবে, আর বহু সংখ্যক বিডিও ব্যক্তিগত স্বার্থের তাড়নায় ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের লেজুড়বৃত্তি করেন। কিছু ক্ষেত্রে তাঁরাই কার্যত শাসক দলের স্থানীয় ম্যানেজার! ভাল পোস্টিং এবং দ্রুত প্রমোশনের স্বার্থে রাজ্য স্তরের দাদা-দিদিদের প্রিয়ভাজন হতে চান অনেকেই। সেখান থেকেই শুরু হয় দলদাসত্বের। শেষ পর্যন্ত তাঁরাই কার্যত হয়ে যান শাসক দলের ব্লক সভাপতি। সুতরাং ছয়-সাত জন বিডিও-কে শোকজ় করে কী হবে?
চন্দ্রপ্রকাশ সরকার
বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ

দোষ কবুল
আমপানের দাপটে ক্ষতিগ্ৰস্ত, গৃহহীনের তালিকায় ভুয়ো ব্যক্তির নামের আধিক্য (‘তালিকায় ৮০% ভুয়ো নাম, চিঠি প্রধানেরই’ এবং ‘টাকা ফেরত দিলেই মাফ হয় না অপরাধ’, ২৭-৬) সহৃদয় ব্যক্তিকে নাড়া দেয়। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, তালিকায় স্থানপ্রাপ্ত বহু প্রভাবশালী পাকা বাড়ির মালিক। কোনওটা আবার দোতলা, শক্তপোক্ত বাড়ি যার গায়ে ঘূর্ণিঝড় দাগ কাটতে পারেনি। ত্রাণের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে অভিযুক্তরা একটাই নির্দিষ্ট প্রোফর্মায় হলফনামার আকারে দোষ স্বীকার করে গৃহ পুনর্নির্মাণের কুড়ি হাজার টাকা চেকের মারফত ফেরত দিয়ে প্রায়শ্চিত্তের পথ নিচ্ছেন।
কিন্তু এ ক্ষেত্রে অভিযুক্ত সরকারি ভাবে দুর্নীতি স্বীকার করে নেওয়ার ফলে ভারতীয় দণ্ডবিধির অধীনে তছরুপ, প্রতারণা, দলবদ্ধ ভাবে ষড়যন্ত্র, মিথ্যে তথ্য দেওয়া প্রভৃতি বিভিন্ন অপরাধের ধারায় জড়িয়ে পড়তে পারে।
অঞ্জন কুমার শেঠ
কলকাতা-১৩৬

স্বচ্ছতার দিকে
2 ‘‘শুধু একটি ব্লকেই ফিরল ২০ লক্ষ টাকা’’ (৩০-৬) শীর্ষক সংবাদের প্রেক্ষিতে কিছু কথা। ভাল দিক হল, কিছু শুদ্ধিকরণ হচ্ছে। তৃণমূল স্তরের কিছু নেতা বুঝতে পারছেন, টাকা ফেরালে দলের ভাবমূর্তি কিছুটা স্বচ্ছ হবে। অপরাধ সংশোধনের চেষ্টার মধ্যে একটা সাহসিকতা ও সদিচ্ছা থাকে। কিন্তু সত্যিই কি কোনও পরিবর্তন হচ্ছে? কিছু দিন আগেই রেশন অব্যবস্থা নিয়ে একই রকম নাটক হয়ে গেল।
সরকারি টাকায় দুর্নীতি ও লুঠ এখন জনগণের গা-সওয়া। কড়া আইন করে এই ধরনের দুর্নীতির শাস্তি না হলে সরকারি প্রকল্পের কোটি কোটি টাকা নয়ছয় হতেই থাকবে। সেই টাকার জোগান দিতে ব্যাঙ্কে সুদ কমবে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি হবে।
দীপঙ্কর সেনগুপ্ত
রাজপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা

একপেশে
শিবাশিস দত্তের ‘হারাবে কে?’ শীর্ষক পত্রটি (৩০-৬ ) একপেশে। উনি বলেছেন, তৃণমূল দলের ক্ষমতায় ফেরার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের কম আসন পাওয়ার একটা কারণ মোদীর ভাবমূর্তি হলেও, আসল কারণ পঞ্চায়েত নির্বাচনে (২০১৮) সন্ত্রাস করে বিরোধী দলকে ভোটে প্রার্থী দিতে বাধাদান, এবং ভোটদানে বাধা। কাজেই ২০১৯-এ ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়ে মানুষ তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে। করোনা আবহে কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ উদ্যোগে গরিব মানুষের জন্যে পাঠানো চাল-ডাল চুরি, আমপানে ঘর হারানো মানুষকে ত্রাণ দেওয়ার নামে দুর্নীতি, এবং বিজেপি সাংসদদের ত্রাণ বিলিতে সন্ত্রাস করে বাধার সৃষ্টি, এ সব কারণে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোট পড়বে। কিছু ক্ষেত্রে টাকা ফেরত দিয়ে তৃণমূলের নেতারা প্রমাণ করেছেন যে, সত্যিই তাঁরা টাকা নিয়েছিলেন। প্রশাসন তাঁদের ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু মানুষ ছেড়ে দেবেন কি?
কমল চৌধুরী
কলকাতা-১৪০

বিপদে পড়ুয়া
বিশ্ব জুড়ে করোনা আতঙ্কের জেরে বিদেশ থেকে ভারতীয় পড়ুয়া এবং কর্মসূত্রে থাকা মানুষজন স্বভূমিতে ফিরে এসেছেন। ইতিমধ্যে বিদেশে তাঁদের পঠনপাঠন ও অন্যান্য কাজকর্ম শুরু হয়ে গিয়েছে। অথচ রিটার্ন ফ্লাইট পাওয়া যাচ্ছে না। এয়ার ইন্ডিয়াতে যে রিটার্ন টিকিট ছিল, সেটা ফেরত দেয়নি। আমি ইটালি থেকে প্রায় চার মাসের বেশি সময় বাড়িতে এসেছি। ইটালিতে ফিরে গবেষণার কাজে তাড়াতাড়ি যুক্ত হতে বাধ্য হয়ে ১৬ জুলাই আলিটালিয়াতে টিকিট কেটেছিলাম। ওটা ইটালির বিমান পরিবহণ ব্যবস্থা। ভেবেছিলাম চালু হয়ে যাবে। কিন্তু এখন তারা বলছে ১৬ জুলাই দিল্লি-রোম ফ্লাইট (AZ769) নিশ্চিত না। ফলে এয়ার ইন্ডিয়া ও আলিটালিয়া দুটি সংস্থাতেই আমার অনেক টাকা নষ্ট হল। ফোন করে, ইমেল পাঠিয়ে, টুইট করে উত্তর পাওয়া গেল না। ফোন ধরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা হোল্ড-এ রেখে দিয়েছিল। একই অবস্থা অনেকের। টাকা ফেরত পাব কি না জানি না।
রীতুপর্ণা বিশ্বাস
গবেষক, ভেরোনা বিশ্ববিদ্যালয়

গ্রাফিক্স কার্ড?
‘ল্যাপটপ কেনার জরুরি চেকলিস্ট’ (পত্রিকা, ২৭-৬) নিবন্ধে আরুণি মুখোপাধ্যায় বলেছেন যে ‘নিজের সময় ও সুযোগমতো ভাল কোনও ব্র্যান্ডের গ্রাফিক্স কার্ড কিনে ল্যাপটপে লাগিয়ে নিন!’ এটি ভুল। ল্যাপটপে ‘ইন্টিগ্রেটেড গ্রাফিক্স’ থাকে, ডেস্কটপের মতো গ্রাফিক্স কার্ড কিনে লাগানো যায় না। এ ক্ষেত্রে ‘গ্রাফিক্স কার্ড’-এর বদলে গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট ব্যবহার করা উচিত।
দীপাঞ্জন রায়
অন্ডাল, পশ্চিম বর্ধমান

অসহায়
কৃষ্ণনগরে এক নিকট আত্মীয় মারা গেলেন। যেতে পারলাম না। কলকাতা রেড জ়োনের মধ্যে। করোনা আবহে ওই বাড়িতে কী মনে করবে, সেটাও ভাবলাম। ভয় ছিল এতটা রাস্তা যাব-আসব এই ষাটোর্ধ্ব বয়সে? বড় অসহায় লাগছিল।
আশিস কুমার চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা-৬০

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন