সম্পাদকীয় ‘অ-খেলোয়াড়’ (৪-৪) পড়ে এই চিঠি। আইপিএল-এ রবিচন্দ্রন অশ্বিন বল করতে এসে নন-স্ট্রাইকার ব্যাটসম্যান ক্রিজ় থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় বল ছুঁইয়ে উইকেট ফেলে দিয়ে ‘মাঁকড়ীয় আউট’ করায় অনেকেই নৈতিকতার প্রশ্ন তুলেছেন। অশ্বিন যা করেছেন, তা ক্রিকেটীয় আইনের মধ্যে থেকেই করেছেন। আইন তাঁকে এই অধিকার দিয়েছে। এক জন খেলোয়াড় আজকের তীব্র প্রতিযোগিতামূলক খেলায় তাঁর দেশ/ দলকে জেতানোর জন্য আইনের মধ্যে থেকে প্রতিটি সুযোগকে কাজে লাগানোর জন্য যা-যা করার, তা-ই করবেন। সেটাই তাঁর ও প্রধান নীতি ও কর্তব্য। নইলে তিনি দেশ ও দলের প্রতি অবিচার করবেন। সুযোগ নষ্ট করায় দল থেকে বাদও পড়তে পারেন। অশ্বিন কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের শুধুমাত্র এক ক্রিকেটার নন, ক্যাপ্টেনও বটে। ফলে, দলকে জেতানোর জন্য তাঁর ব্যাগ্রতা সবচেয়ে বেশি থাকবে।
যে ব্যাটসম্যান নন-স্ট্রাইকার থাকার সময় ক্রিজ় ছেড়ে আগেই এগিয়ে যান, তিনি দ্রুত ও বেশি রান নেওয়ার অ্যাডভান্টেজ পেয়ে যান। তাঁর এই সুবিধাভোগ যদি অনৈতিক ও ‘অ-খেলোয়াড় সুলভ’ না হয়, তা হলে অশ্বিনের আউট অনৈতিক ও ‘অ-খেলোয়াড়োচিত’ হতে যাবে কোন দুঃখে? ১৯৮৭-র বিশ্বকাপে কোর্টনি ওয়ালশের ‘মাঁকড়ীয় আউট’ না করাটা এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ। কেউ সেটা না করে, আইন কাজে লাগালে তিনি অনৈতিক কাজ করেছেন— এটা কোনও যুক্তি হতে পারে না।
অশ্বিনের মাঁকড়ীয় আউটের নৈতিকতা নিয়ে যাঁরা প্রশ্ন তোলেন, দেখা যাবে তাঁরাই মারাদোনার ‘হ্যান্ড অব গড’ নিয়ে অন্য সময় নাচানাচি করেন! আসলে ‘মাঁকড়ীয় আউট’ সচরাচর হয় না বলে, এত হইচই হচ্ছে। এ রকম আউট আরও কয়েক বার হলে, ব্যাপারটা স্বাভাবিক মনে হবে। এক দিকে এ হেন আইন রাখব আবার নৈতিকতার প্রশ্ন তুলব— এ দুটো একসঙ্গে চলতে পারে না।
প্রণব কুমার মাটিয়া
পাথরপ্রতিমা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
উপেক্ষিত স্টেশন
বারাসত হাসনাবাদ শাখার যাত্রী পরিষেবা বর্তমানে তলানিতে এসে পৌঁছেছে। টিকিট কম বিক্রির অজুহাতে বছর ১২ আগে এই শাখার বেশ কয়েকটি স্টেশনকে ঠিকাদারের হতে তুলে দেয় রেল দফতর। এর মধ্যে টাকি রোড রেলস্টেশন একটি। এর পর থেকেই স্টেশনটি অবহেলার শিকার। ঠিকাদারের অধীনে যাওয়ায় এখানে কম্পিউটার টিকিট মেলে না। এত দিন শিয়ালদহ মেন ও দক্ষিণ শাখার নামমাত্র কয়েকটি স্টেশনের ছাপানো টিকিট পাওয়া যেত। বর্তমানে বসিরহাট বা মালতীপুর যেতে হলে, যাদবপুর বা গড়িয়ার টিকিটে স্ট্যাম্প মেরে দেওয়া হচ্ছে। আর বিধাননগর বা দমদমের আগের তারিখের টিকিট সে দিনের ডেট স্ট্যাম্প মেরে বিক্রি করা হচ্ছে। সেখানে থাকছে না কোনও সময় বা রেল স্টেশনের স্ট্যাম্প। সন্দেহজনক এই টিকিট নিয়ে বিভ্রান্ত হচ্ছেন যাত্রীরা।
বর্তমানে টাকি পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে পশ্চিমবঙ্গের মানচিত্রে জায়গা করে নিয়েছে। শীতের মরসুমে হাজার হাজার মানুষ বাইরে থেকে এখানে বেড়াতে আসেন। গুরুত্বপূর্ণ এই স্টেশনে যাত্রিস্বাচ্ছন্দ্য বলতে ছোট একটি ছাউনি। বর্ষায় সেখানে পৌঁছতে গেলে ভিজতে হয়। পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই, ট্রেন আসা-যাওয়ার ঘোষণা নেই। রাতে প্ল্যাটফর্মের সব আলো জ্বলে না।
অধীর পাল
টাকি, উত্তর ২৪ পরগনা
দেরি, বাতিল
হুগলি জেলার একটা বড় অংশের মানুষের কলকাতা যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম: হাওড়া-বর্ধমান ভায়া কর্ড রেলপথ। এই রেলপথে যাত্রী ট্রেনের সংখা খুবই কম এবং পুরনো প্রযুক্তিতে চলার জন্য ট্রেনের অস্বাভাবিক দেরিতে চলাটাই নিয়ম। শোনা যায় সে জন্য কলকাতার বেসরকারি অফিস- কাছারির কর্মচারী নিয়োগকর্তারা, কর্মপ্রার্থী কর্ড রেলপথের যাত্রী হলে নিয়োগ করেন না।
আবার পূর্ব-ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ হঠাৎ ট্রেন বাতিল করে দেওয়া হয়। গত প্রায় দুই মাস যাবৎ কোনও বোধগম্য কারণ ছাড়াই বেশ কয়েকটি ট্রেন এই রেলপথে বাতিল রয়েছে এবং ফলত ওই বাতিল ট্রেনগুলির পূর্ববর্তী ও পরবর্তী ট্রেনে চড়া বিশেষত বয়স্ক ও মহিলাদের পক্ষে দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবিলম্বে বাতিল ট্রেনগুলি চালু করা হোক।
সুভাষ দাস
বারুইপাড়া, হুগলি
কিছু পদক্ষেপ
পূর্ব রেলের শিয়ালদা-বঁনগা শাখা একটি অত্যন্ত জনবহুল রেলপথ। উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার কয়েক লক্ষ মানুষ কলকাতা যাওয়ার জন্য এই রেলপথের উপর নির্ভরশীল। বর্তমানে অত্যধিক ভিড়ের কারণে বঁনগা লোকালে যাতায়াত করা দুর্বিষহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাত্রিসাধারণের
সুবিধার্থে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি নেওয়ার জন্য রেল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করছি।
১) অফিস টাইমে বঁনগা ও শিয়ালদহের মধ্যে ১৫ মিনিটের ব্যবধানে এবং অন্যান্য সময়ে ২০ মিনিটের ব্যবধানে ট্রেন চালাতে হবে। প্রয়োজনে সব ট্রেনকে শিয়ালদহে না ঢুকিয়ে, বিধাননগর-পার্ক সার্কাস-বালিগঞ্জ লাইনের প্রয়োজনীয় সংস্কার করে উত্তর ও দক্ষিণ শাখাকে মিশিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
২) বঁনগা থেকে শিয়ালদহের দূরত্ব প্রায় ৭৭ কিমি। যেতে সময় লাগে ১ঘণ্টা ৫৬ মিনিট। অথচ রেলের তথ্য অনুযায়ী, এই রেলট্র্যাকে ট্রেনের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ১০০ কিমি। সিগন্যালিং ব্যবস্থার উন্নতি ঘটিয়ে সর্বোচ্চ গতিতে ট্রেন চালাতে হবে।
৩) সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায়, প্রচুর বিদেশি এই পথে যাতায়াত করেন। বিদেশি যাত্রীদের সুবিধার্থে, যে কোনও একটি বগিতে দূরপাল্লার ট্রেনের মতো আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে পরীক্ষামূলক ভাবে সামনে ও পিছনের ভেন্ডরের অর্ধেক কামরাতে এই ব্যবস্থা চালু করা যেতে পারে।
জ্যোতি প্রকাশ ঘোষ
গোবরডাঙা, উত্তর ২৪ পরগনা
কিচিরমিচির
শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় যাতায়াতের কারণে সোনারপুর স্টেশন অতিক্রম করতে হয় নিয়মিত। সন্ধ্যার দিকে স্টেশন অতিক্রম করলে উপরি পাওনা হয় পাখির কিচিরমিচির। সোনারপুর স্টেশনে অনেক বড় বড় গাছ, স্টেশনটির সর্বত্রই এদের উপস্থিতি। কিন্তু ৫ এপ্রিল, বিকেলবেলা ট্রেন থেকেই দেখতে পেলাম, স্টেশনের অন্যতম আকর্ষণ ওই বড় বড় গাছগুলির কিছু কেটে ফেলার কাজ চলছে, দুই নম্বর প্ল্যাটফর্মের উপর। ব্রিটিশ যুগের আইন মোতাবেক রেলের সব কাজই জনস্বার্থে, কিন্তু এটি কতটা যুক্তিযুক্ত কাজ? বর্তমানে যাত্রী-শেড তৈরির জন্য এ রকম গাছ কাটা হচ্ছে, অনেক জায়গায়। কিন্তু গাছের থেকে ভাল ছায়া কে-ই বা দিতে পারে? আর যখন পাখির কলতান এই স্টেশনের বৈশিষ্ট্য, তখন পরিবেশ রক্ষার্থে ও স্টেশনের নান্দনিক সৌন্দর্য রক্ষার্থে গাছগুলিকে রাখা হোক।
মাল্যবান চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা-৪১
দুর্ভোগ
উত্তরবঙ্গগামী তিস্তা-তোর্সা ট্রেনের বায়ো-টয়লেটটি যাত্রীরা ঠিকমতো ব্যবহার না করায় দুর্গন্ধে যাত্রীদের প্রাণ অতিষ্ঠ। তার উপর রাতে বড় বড় মশা ও ইঁদুরের উৎপাত। অবৈধ যাত্রীদের ওঠানামা চলে সারা রাত ধরে, ফলে ঘুমোবার বদলে সব যাত্রীকে সজাগ থাকতে হয় চুরির ভয়ে। অভিযোগ জানাব কাকে, টিটিই টিকিট চেকিংয়ের পর কোথায় উধাও হয়ে যান, কে জানে। সারা কামরায় মাঝে মাঝেই জল শেষ হয়ে যায়।
অনিন্দ্য সেন
কলকাতা-৪২
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।