Editorial News

কুকথার তরজায় লাঞ্ছিত হচ্ছে গণতন্ত্রের সংস্কৃতি

তীব্র এক লাঞ্ছনার বোধ এই মুহূর্তে আঘাত করছে আমাদের।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৯ ০০:৫০
Share:

কদর্য ভাষা এবং কদর্যতর ভঙ্গির এই পরিবেশ ভুলিয়ে দেয় এই দেশের নির্বাচনী গণতন্ত্রের বাকনিপুণ, যুক্তিনন্দিত ও ক্ষুরধার প্রতর্কের চর্চিত অতীতকে। ছবি: পিটিআই।

ভারতের গণতন্ত্র তার মহান ঐতিহ্যকে পিছনে ফেলে রেখে উত্তরাধিকারীদের হাতে যে কী ভাবে লাঞ্ছিত হচ্ছে, তার প্রমাণ পদে পদে দিচ্ছে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচন। ভাষা যদি গণতন্ত্রের অন্যতম হাতিয়ার হয়, তবে সেই হাতিয়ারের ন্যক্কারজনক অপব্যবহারের সাক্ষী থাকছে এই মুহূর্তের ভারত। বলতে দ্বিধা নেই, শাসক-বিরোধী সবাই সেখানে সমান।

Advertisement

সমান বললাম ঠিকই, কিন্তু তবু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, আপনার দিকেই আঙুলটা প্রথমে তুলতে হচ্ছেই। আপনি দেশের প্রধানমন্ত্রী, আপনার দলের অর্বাচীনেদের মুখে যা ‘অলঙ্কার’, তা যে আপনার মুখে শোভা পায় না, সেটুকু অন্তত বোঝা উচিত ছিল। বিশেষত, এই লোকসভা নির্বাচনের প্রায় শেষ লগ্নে এসে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর নামে আপনি যে ভাবে লাগাতার বিষবর্ষণ করে চলেছেন, জেনে রাখবেন, আপনার অতি ভক্তের কানেও সেটা কটু ঠেকছে। ভোটে জেতার লক্ষ্যে এই পর্যায়ে যাওয়ার দরকার ছিল কি আদৌ?

বিরোধীরাও কম যাচ্ছেন না কোথাও। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী যতই অভিমুখটা জনতার দিকে ঘোরানোর চেষ্টা করুন না কেন, এই দেশ জানে প্রধানমন্ত্রীকে চোর বলে অভিহিত করার কাজটা করেছিলেন তিনিই স্বয়ং। এর পাশাপাশি ছোট-মাঝারি দলগুলোর সেজো-মেজো নেতাদের কথা তো বাদই দিলাম। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর দিকে অভিযোগ তুলে সাংবাদিক বৈঠকে আপ-এর মহিলা প্রার্থীর কেঁদে ফেলার ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় সামগ্রিক পরিবেশের কদর্যতাকে। কদর্য ভাষা এবং কদর্যতর ভঙ্গির এই পরিবেশ ভুলিয়ে দেয় এই দেশের নির্বাচনী গণতন্ত্রের বাকনিপুণ, যুক্তিনন্দিত ও ক্ষুরধার প্রতর্কের চর্চিত অতীতকে।

Advertisement

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন


আরও পড়ুন: রাজীবকে নিয়ে পাঞ্জা লড়ার ডাক মোদীর

আরও পড়ুন: রাজীব-হত্যায় দায়ী বিজেপিই, দাবি কংগ্রেসের

আরও পড়ুন: দিল্লিতে কুরুচিকর প্রচারপত্র! অতিশীর নিশানায় গম্ভীর, মামলার হুমকি প্রাক্তন ক্রিকেটারের

তীব্র এক লাঞ্ছনার বোধ এই মুহূর্তে আঘাত করছে আমাদের। লাঞ্ছিত হচ্ছে গণতন্ত্রের সংস্কৃতি, লাঞ্ছিত হচ্ছি আমি, আমরা। ঘুরে দাঁড়ানো দরকার। এক বার আমাদের চিৎকার করে ওঠা দরকার। বলা দরকার, এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন