লন্ডন ডায়েরি

ইউরোপে ১১ নভেম্বর দিনটার গুরুত্ব আলাদা। ১৯১৮ সালে বছরের একাদশতম মাসের এগারো তারিখে সকাল এগারোটার সময় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছিল, সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এখন দিনটা পালিত হয় ‘স্মরণের দিন’ হিসেবে, মৃতদের স্মৃতিতে পোশাকের উপরে কৃত্রিম পপি ফুলের ব্যাজ পরেন মানুষ।

Advertisement

শ্রাবণী বসু

শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৫৬
Share:

পপি ফুল আর শ্রদ্ধায় স্মরণ শহিদদের

Advertisement

জ্বালাও আলো

Advertisement

প্রোজ্জ্বল: দশ হাজার মশালের আলোয় আলোকিত টাওয়ার অব লন্ডন

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ-শেষ স্মরণে ‘টাওয়ার অব লন্ডন’-এর চার পাশের শুকনো পরিখা সেজে উঠেছিল হাজার হাজার জ্বলন্ত মশালে। প্রথম মশালটি জ্বালান টাওয়ার-এর বাইরে প্রহরায় দাঁড়িয়ে থাকা এক ‘সেরিমনিয়াল গার্ড’। টাওয়ার থেকে পরিখায় নামিয়ে আনা হয় সেই মশাল, তার পর সেনা ও স্বেচ্ছাসেবক-প্রতিনিধিরা মিলে টাওয়ারের দেওয়ালের নীচে রাখা প্রায় ১০০০০ মশাল জ্বালান। আজ, ‘স্মরণ সপ্তাহ’-এর শেষ দিনটি অবধি জ্বলবে মশালগুলো।

এই বালুকাবেলায়

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে শহিদ সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধায় অস্কারজয়ী ছবি ‘স্লামডগ মিলিয়নেয়ার’-এর পরিচালক ড্যানি বয়েল একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। ‘পেজেস অব দ্য সি’ নামের এই প্রকল্পে ব্রিটেনের ৩০টি সমুদ্রসৈকতে বালির উপরে সেনাদের ছবি আঁকা হবে। বিশ্বযুদ্ধে লাখো সেনার যুদ্ধযাত্রা ঘটেছিল সমুদ্রপথ ধরে, তাঁদের অনেকেই ফেরেননি। সমুদ্রসৈকতে স্মরণ করা হবে সবাইকে। মূল অনুষ্ঠানটি সেন্ট আইডান’স সৈকতে। ‘স্যান্ড ইন ইয়োর আই’ নামের ছবিটি সাগরের ঢেউয়ে ধুয়ে যাবে এক সময়। বালিতে শহিদদের ছায়ামুখ আঁকবেন জনতাও।

শেকড়

উৎসুক: মিউজ়িয়ামে চিঠি পড়ছেন কেট

ব্রিটেনের অধিকাংশ পরিবারেরই কোনও না কোনও সদস্য প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন। ডাচেস অব কেমব্রিজ কেট-এর পরিবারও ব্যতিক্রম নয়। এ সপ্তাহে ইম্পিরিয়াল ওয়ার মিউজ়িয়াম ঘুরে দেখার সময় কেটকে দেখানো হয় তাঁর পরিবারের ইতিহাসের কয়েকটা টুকরো— চিঠি, কার্ড, টেলিগ্রাম। তাঁর প্রমাতামহের তিন ভাই যুদ্ধে মারা গিয়েছিলেন। কেটকে দেখানো হয় তাঁদের এক জন, ক্যাপ্টেন মরিস লুপটন-এর লেখা শেষ চিঠি, যেখানে তিনি জার্মান সেনার শেল ছোড়ার কথা লিখেছেন, পাঠাতে বলেছেন লেবুর রস ও চিনে চা। ১৯১৫ সালে মাত্র ২৮ বছর বয়সে স্নাইপার-হানায় মারা যান মরিস। ১৯১৭-র ১৯ ফেব্রুয়ারি, তাঁর দাদা, মেজর ফ্রান্সিস লুপটন মারা যান শেলের আঘাতে, ৩১ বছর বয়সে। আর এক ভাই, লেফটেন্যান্ট লায়োনেল লুপটনের মৃত্যু ১৯১৬ সালে, ২৪ বছর বয়সে। যুদ্ধে শহিদ হন পরিবারের তিন ছেলেই।

আজকের দিনেই

কবি উইলফ্রেড আওয়েনে‌র মৃত্যু হয়েছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধ-শেষের মাত্র এক সপ্তাহ আগে, ফ্রান্সের যুদ্ধক্ষেত্রে। তাঁর ঝুলিতে পাওয়া গিয়েছিল একটা নোটবুক, তাতে রবীন্দ্রনাথের ‘গীতাঞ্জলি’র কয়েকটা লাইন। তাঁর মা সুজ়ান দু’বছর পর রবীন্দ্রনাথকে চিঠিতে জানিয়েছিলেন সে কথা। আজকের দিনেই মা পেয়েছিলেন ছেলের মৃত্যুসংবাদ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন