সংযম, সতর্কতা এবং স্থৈর্য অত্যন্ত জরুরি আজ। কারণ পরিস্থিতি বড় অনুকূল নয়। পারিপার্শ্বিকতায় প্ররোচনার অনুভূতি রয়েছে।
উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরে খুবই ক্ষুদ্র বিবাদ রাতারাতি বেশ বড় আকার নিয়ে নিল। চড়ুইভাতির আসরকে ঘিরে গোলমালের সূত্রপাত হল। দু’ দল লোক বিবাদে জড়ালেন। শ্লীলতাহানির অভিযোগও উঠল। হু হু করে ছড়াতে শুরু করল ‘খবর’। মুহূর্তে পল্লবিত হতে শুরু করল গুজব। শুরু হল ট্রেন অবরোধ। দীর্ঘক্ষণ অচল হয়ে রইল বনগাঁ-শিয়ালদহ শাখার রেল-যোগাযোগ। অবরোধ শেষ পর্যন্ত উঠল। কিন্তু উত্তেজনা সঞ্চারিত হতে থাকল তার নিজের ছন্দে।
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
যে কোনও ছোট সামাজিক বিবাদকে ঘিরে অত্যন্ত দ্রুত অবনতির দিকে এগোচ্ছে পরিস্থিতি আজকাল। কোনও ঘটনায় উত্তেজনার সামান্য উপাদান থাকলেই ইন্টারনেট-সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবানলের মতো ছড়াচ্ছে তা। দ্রুত ডাল-পালা মেলছে আখ্যান, পত্র-পুষ্পে ফুলে-ফেঁপে উঠছে। প্রকৃত তথ্য বা সত্যাসত্য বিচারের অবকাশ মাত্র থাকছে না। উত্তেজনা লাফিয়ে বাড়ছে অতএব, নিয়ন্ত্রণের রাশ কোথাও থাকছে না।
আরও পড়ুন: দত্তপুকুরে রেল অবরোধে ভোগান্তি
সতর্ক থাকা জরুরি আজ এই কারণেই। কোনও ‘খবরে’ই অনিয়ন্ত্রিত প্রতিক্রিয়া দেখানোর অবকাশ নেই। তাতে বিপদ বাড়ার শঙ্কা। প্রতিক্রিয়ায় সংযম দরকার। স্থৈর্য দরকার, যাতে বিচারবুদ্ধি উত্তেজনার গ্রাসে না চলে যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় হোক বা ফোনে, উড়ো সংলাপ থেকে হোক বা ‘ঘোড়ার মুখ’ থেকে পাওয়া আখ্যানে— কোন খবরে বিশ্বাস রাখব, কতটা রাখব, কতখানি ছেঁকে নেব, কী ভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাব, তা খুব ঠান্ডা মাথায় ভেবে দেখা জরুরি। কোনটা খবর, কোনটা গুজব, চিনে নিতে পারা জরুরি।
প্রশাসনকেও সতর্ক থাকতে হবে। অত্যন্ত সংবেদনশীলতার সঙ্গে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে। কথায় কথায় বিবাদ বেড়ে যাওয়া কাম্য নয়। দত্তপুকুরে চড়ুইভাতি ঘিরে গোলমাল এবং তার জেরে দীর্ঘক্ষণ রেল অবরোধে যতখানি বিঘ্ন ঘটল সাধারণ জনজীবনে, তা বাঞ্ছনীয় নয় মোটেই। তবে শুধু প্রশাসনিক স্তরে নয়, সামাজিক পরিসরে সতর্কতাও খুব জরুরি। সচেতন থাকতে হবে প্রত্যেককে। প্রত্যেককে দায়িত্বশীল হতে হবে।