Editorial News

শীলিত চর্চার দায়বদ্ধতা এড়াতে পারেন না রাজনীতিকরা

রূপা গঙ্গোপাধ্যায় দায়িত্বজ্ঞানের পরিচয় দেননি। তাঁর দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ ‘মারের পাল্টা প্রতিরোধ’-এর ডাক দিয়ে গেলেও সশস্ত্র সংগ্রামের প্রত্যক্ষ আহ্বান জানিয়ে গিয়েছেন, এটা বিশ্বাস করা সম্ভব নয়। বাঁশ ও কঞ্চির চিরাচরিত প্রাবচনিক সম্পর্ক আরও এক বার প্রকাশ পেল রূপার কথায়।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:৪৫
Share:

দায়িত্বজ্ঞানের পরিচয় দেননি রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

যাঁরা এই তথ্য সম্পর্কে অবগত ছিলেন এবং যাঁরা ছিলেন না, উভয় পক্ষই নিশ্চয় যারপরনাই আহ্লাদিত হয়েছেন। রূপা গঙ্গোপাধ্যায় এক‌ে-৪৭ খুব ভাল চালাতে পারেন। পিস্তল, রিভলভার সবই চালাতে পারেন। অভিনেত্রী রূপা, রাজনীতির অঙ্গনে স্বচ্ছন্দ রূপা, সাংসদ রূপার টুপিতে যদি আরও একটি পালক সজ্জিত হয়, তাতে কারও আপত্তি হওয়ার কথা নয়। যেমন ধরা যাক, রূপা গঙ্গোপাধ্যায় যদি বলতেন, তিনি খুব ভাল সেতার বাজাতে পারেন, তাতে কারও আপত্তি হওয়ার কথা ছিল না, বরং আহ্লাদিত হওয়ারই কথা ছিল।

Advertisement

কিন্তু আমরা হলাম না তার পরিপ্রেক্ষিত বিচার করে। কারণ এই দেশ এবং এই দেশের চর্চিত গণতন্ত্র জনপ্রতিনিধি তথা রাজনীতিকদের বেলাগাম আচরণ ও প্রগলভতাকে প্রশ্রয় দেয় না। রাজনীতিকের কোনও একটি মন্তব্য বা ইঙ্গিত বা আচরণের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে থাকা উচিত দায়িত্বজ্ঞানের। তার অন্যথা ঘটলে সমাজ জুড়ে অনর্থের সম্ভাবনা।

রূপা গঙ্গোপাধ্যায় দায়িত্বজ্ঞানের পরিচয় দেননি। তাঁর দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ ‘মারের পাল্টা প্রতিরোধ’-এর ডাক দিয়ে গেলেও সশস্ত্র সংগ্রামের প্রত্যক্ষ আহ্বান জানিয়ে গিয়েছেন, এটা বিশ্বাস করা সম্ভব নয়। বাঁশ ও কঞ্চির চিরাচরিত প্রাবচনিক সম্পর্ক আরও এক বার প্রকাশ পেল রূপার কথায়। তিনি একে-৪৭ ব্যবহারে পারদর্শী, এই সতর্কবার্তার সঙ্গে ‘বিজেপি কর্মীরা বসে বসে মার খাবেন না’ এই বাক্যবন্ধটি জুড়ে দিয়ে সরাসরি ইন্ধন জোগালেন উত্তেজনার। এবং সেটাও অস্ত্রের ঝলকানি সমেত।

Advertisement

শাসক বা বিরোধী, রাজনীতিকদের বৃহত্তর একটা দায় থাকে। তাঁদের আচরণে সংযম, বাগ্‌বিন্যাসে শৃঙ্খলার ছাপ থাকা দরকার। রূপা গঙ্গোপাধ্যায় আশা করি সেটা বুঝবেন। শুধু একা রূপাই নন, দলমতনির্বিশেষে রাজনৈতিক নেতাদের একটা অংশ এই শীলিত চর্চার থেকে দূরে সরে যান। এই দেশের ভূমি প্রতর্কের। সেখানে বুদ্ধির ও মেধার ঝলকানিই প্রত্যাশিত। শাসকের দায় সেখানে আরও বেশি। চম্পাহাটি হোক বা বেঙ্গালুরু— প্রতিটি খুন কিন্তু এই দেশকে অস্ত্রের দিকে এগিয়ে দেয়, এটা বোঝার জন্য রকেটবিজ্ঞানী হওয়ার দরকার পড়ে না।

রাজনীতিকরা কোনও এক দিন নিশ্চয়ই এটা বুঝবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন