National news

এই লজ্জাজনক ঔদাসীন্যই আমাদের পিছিয়ে রাখে

ডেফিলিম্পিক্সে ভারতীয় দল এ যাবৎ কালের সেরা কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখল। একটি স্বর্ণপদক-সহ মোট পাঁচটি পদক নিয়ে তুরস্ক থেকে দেশে ফিরলেন ভারতীয় খেলোয়াড়রা।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৭ ০৫:০৬
Share:

নয়া দিল্লি বিমানবন্দরে অ্যাথলিটরা। ছবি: টুইটার।

চড়া আলো যে দিকে, আমাদের রাষ্ট্র এবং আমাদের সমাজের নজর শুধু সে দিকেই। চোখে ঠুলি পরানো থাকলে যেমন হয়, অনেকটা বোধ হয় তেমনই। নজর ঘুরিয়ে এক বারও ঠাহর করার চেষ্টা করি না, আলোক-বৃত্তের বাইরেটায় কোনও মণি-মুক্তো কোথাও জ্বলজ্বল করছে কি না।

Advertisement

ডেফিলিম্পিক্সে ভারতীয় দল এ যাবৎ কালের সেরা কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখল। একটি স্বর্ণপদক-সহ মোট পাঁচটি পদক নিয়ে তুরস্ক থেকে দেশে ফিরলেন ভারতীয় খেলোয়াড়রা। গোড়ায় তো আমরা জানতামই না, তুরস্কে এত বড় আন্তর্জাতিক আসর বসেছে এবং সেখানে ভারতীয় প্রতিযোগীদের বড়সড় দল অংশগ্রহণ করেছে। পরে বিষয়টা আমরা জানলাম, বিশেষ ভাবে সক্ষম এই ভারতীয় খেলোয়াড়রা আন্তর্জাতিক মঞ্চে অসামান্য কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখার পরে দলের তরফেই দেশের ক্রীড়া মন্ত্রককে তা জানানো হল। কিন্তু আমরা তার কদরটা বুঝতেই পারলাম না। উৎসবের আয়োজন করা বা অভিনন্দন জানানোর বন্দোবস্ত দূরে থাক, ডেফিলিম্পিক্স ফেরত দলকে দেশের বিমানবন্দরে স্বাগত জানানোর জন্যও কেউ রইলাম না। অত্যন্ত লজ্জাজনক দৃষ্টান্তের জন্ম দিলাম না কি?

বিশ্বকাপের দরকার পড়ে না, বিরাট কোহালিরা দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলে দেশে ফিরলেই সহস্র অনুরাগীর ভিড় জমে যায় বিমানবন্দরে। সম্প্রতি মিতালি রাজরা বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলে ফেরার পর তাঁদের নিয়েও কিয়দংশে দেখা গিয়েছে সেই উৎসাহ-উদ্দীপনা। মহিলাদের ক্রিকেট বছর কয়েক আগেও যে পরিমাণ অন্ধকারে ছিল, তাতে মিতালি-ঝুলন-হরমনপ্রীতদের নিয়ে এ বারের উচ্ছ্বাস অবশ্যই ইতিবাচক ঘটনা। তবে মিতালিরা আলোক-বৃত্তের সম্পূর্ণ বাইরে ছিলেন, এমনটাও নয়। বৃত্তটার সম্পূর্ণ বাইরে থাকলে কী হয়, কতটুকু কদর পাওয়া যায়, ডেফিলিম্পিক্স ফেরত ভারতীয় তারকাদের দেখে তা খুব স্পষ্ট করেই বোঝা গিয়েছে নিশ্চয়।

Advertisement

আমেরিকা, রাশিয়া, চিন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা— যে কোনও আন্তর্জাতিক ক্রীড়ামঞ্চে উজ্জ্বল উপস্থিতি থাকে এই দেশগুলোর। পদকের ডালি সাজানো থাকে যেন তাদের জন্য। অকারণেই বা এমনিতেই ঘটে এমনটা, তা নিশ্চয়ই নয়। ভারতকে তাদের থেকে শিক্ষা নিতে হবে এ বিষয়ে। কদর পাওয়ার জন্য প্রতিভাকে আলোক-বৃত্তে আসার চেষ্টা করতে হয় এখনও এ দেশে। হওয়া উচিত উল্টোটাই, যাবতীয় আলো নিয়ে প্রতিভার অঙ্কুরগুলোকে খুঁজে বার করার প্রয়াস শুরু হওয়া উচিত। তা যদি না পারি, বিচ্ছিন্ন ভাবে ব্যক্তিগত সাফল্যে হয়তো উজ্জ্বল হয়ে উঠবেন কেউ কেউ, কিন্তু সামগ্রিক উদয়টা কোনও দিনই ঘটবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন