Goa Nightclub Fire

নৈশক্লাবের মালিক দুই ভাইকে হাতে পেতে তৎপর গোয়া সরকার, পাসপোর্ট বাতিলের আর্জি বিদেশ মন্ত্রকের কাছে

গত ৬ ডিসেম্বর মধ্যরাতের পর উত্তর গোয়ার আরপোরার বির্চের ওই নৈশক্লাবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনা নিয়ে শোরগোল শুরু হতেই সকলের চোখের আড়ালে ভারত ছেড়ে পালান সৌরভ এবং গৌরব লুথরা (লুথরা ভাই)।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ ২২:৪১
Share:

গোয়ার সেই নৈশক্লাবের দুই মালিক সৌরভ এবং গৌরব লুথরা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

গোয়ায় অগ্নিকাণ্ডের শিকার নৈশক্লাবের অন্যতম মালিক দুই ভাই গৌরব লুথরা এবং সৌরভ লুথরাকে গ্রেফতারের জন্য কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ চেয়ে কেন্দ্রের দ্বারস্থ হল গোয়ার বিজেপি সরকার। বুধবার গোয়া সরকারের তরফে লুথরা ভাইদের পাসপোর্ট বাতিলের জন্য বিদেশ মন্ত্রকের কাছে বার্তা পাঠানো হয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডের পরেই তাইল্যান্ডে পালিয়ে গিয়েছিলেন অভিযুক্ত দুই ভাই। এখনও সেখানেই তাঁরা রয়েছেন। তাইল্যান্ড থেকেই লুথরা ভ্রাতৃদ্বয় আগাম জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন দিল্লির আদালতে। তবে তাঁদের আবেদন এখনই মঞ্জুর হচ্ছে না। মামলাটি ফের শুনানির জন্য উঠবে বৃহস্পতিবার।

Advertisement

গৌরব এবং সৌরভের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই ব্লু কর্নার নোটিস জারি করেছে ইন্টারপোল। তাইল্যান্ড থেকে তাঁরা জানিয়েছেন, গ্রেফতারির ভয়েই দেশে ফিরতে পারছেন না। দেশে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে যেন তাঁদের গ্রেফতার না-করা হয়, তা নিশ্চিত করতে আগাম জামিনের আবেদন জানান আদালতে। বুধবার সেই মামলার শুনানি ছিল। লুথরা ভাইরা দাবি করেছেন, তাঁরা দিল্লিতে থাকেন। গোয়ার ক্লাবের আংশিক মালিকানা তাঁদের থাকলেও ওই ক্লাবের দৈনন্দিন কার্যকলাপের সঙ্গে তাঁরা যুক্ত নন। বরং ক্লাব কর্তৃপক্ষ প্রতিশোধমূলক আচরণ করছেন বলে লুথরাদের অভিযোগ। তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের ইচ্ছাকৃত ভাবে ফাঁসানো হচ্ছে এবং তাঁদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হচ্ছে।

বুধবার দিল্লির আদালত গোয়া কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লুথরা ভাইদের অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য জানতে চেয়েছে। শুনানির পর বৃহস্পতিবার আদালত সিদ্ধান্ত জানাতে পারে। মোট চার সপ্তাহের আগাম জামিন চেয়েছিলেন লুথরা ভাইরা। গোয়ার বার্চ বাই রোমিয়ো লেন নৈশক্লাবের মালিকানা মোট চার ভাগে বিভক্ত। লুথরারা ছাড়াও ওই ক্লাবের মালিক অজয় গুপ্ত এবং সুরেন্দ্র কুমার খোসলা। অগ্নিকাণ্ডের পরে অজয়ও আত্মগোপন করেছিলেন। কিন্তু তাঁকে দিল্লি থেকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। বুধবার অজয়কে আদালতে তোলা হয়ে গোয়া পুলিশের আবেদনে সাড়া দিয়ে বিচারক ট্রানজিট রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ ছাড়া সুরেন্দ্রের বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস জারি করা হয়েছে। সুরেন্দ্র ব্রিটিশ নাগরিক বলেও জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

প্রসঙ্গত, গত ৬ ডিসেম্বর মধ্যরাতের পর উত্তর গোয়ার আরপোরার ওই নৈশক্লাবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২৫ জনের মৃত্যু হয়। কী ভাবে আগুন লাগল, তা এখনও পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। আগুন লাগার দু’টি কারণ উঠে এসেছে। এক, ওই ক্লাবে বেসমেন্টে রেস্তরাঁয় প্রথমে আগুন লাগে। গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে আগুন ধরে যায়। পরে সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে ক্লাবের অন্যত্র। এ ছাড়াও, আগুন লাগার আরও একটি সম্ভাব্য কারণের কথা বলা হচ্ছে। ক্লাবে মধ্যরাতে যখন নাচ চলছিল, তখন কর্মীরা কিছু আতশবাজি পোড়ান। তা থেকেই আগুন ছড়ায়। অগ্নিকাণ্ডের পর পরই সকলের চোখের আড়ালে সৌরভ এবং গৌরব ভারত ছেড়ে উড়ে যান তাইল্যান্ডের ফুকেটে। এফআইআর দায়েরের পরই দুই ভাইয়ের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মালিকদের এক জন ছাড়া বাকিদের কাউকে ধরা যায়নি। অগ্নিকাণ্ডের পর নৈশক্লাবের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক নিয়মভঙ্গের অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement