বি আর অম্বেডকর।- ফাইল চিত্র।
‘‘অম্বেডকর, গেরুয়া না নীল’’ (১৮-৪) নিবন্ধের প্রেক্ষিতে এই লেখা। পাঁচ বৎসরের শিশু ভীমরাও সকপাল যখন মহউ ছেড়ে সাতারা স্কুলে ভর্তি হলেন, তখন স্কুলের খাতায় তাঁর উপাধি লেখা হল আম্বাদাকার, তাঁদের আদি নিবাস মহারাষ্ট্রের রত্নগিরি জেলার আম্বাদ্বের নাম অনুসারে। সাতারা স্কুলের শিক্ষক কৃষ্ণ কেশব অম্বেডকর, যিনি জাতে দেবরুখে ব্রাহ্মণ, তাঁর উপাধিটি ভীমরাওকে ব্যবহার করতে দেন। তার পর থেকে তিনি হলেন ভীমরাও অম্বেডকর। ব্রাহ্মণ্যতন্ত্র উৎপাটনের প্রতীক রূপে যে উপাধিটি আসমুদ্রহিমাচল ব্যাপ্ত, সেটি এক ব্রাহ্মণের।
ব্রিটিশ শাসন বিরোধী আন্দোলন যাতে দুর্বল না-হয়, তাই অম্বেডকর গাঁধীজির সঙ্গে বার বার পুণে চুক্তি করেছেন এমন কথা ইতিহাস কিন্তু বলে না। বরং ১৯১৯ সালের গভর্নমেন্ট অব ইন্ডিয়া আইন তৈরির সময় অম্বেডকর ডিপ্রেস্ড ক্লাসের জন্য পৃথক নির্বাচকমণ্ডলী গঠনের দাবি জানিয়ে ছিলেন এবং তিনটি গোল টেবিলে বৈঠকে উপস্থিত থেকে তার দাবি আদায়ে সচেষ্ট ছিলেন। পুণের ইয়ারবাড়া জেলে আমরণ অনশনে বসা গাঁধীজির শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হওয়ায়, প্রবল জনমতের চাপে তিনি পুণে চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন।
ভারতের দলিত আন্দোলনের শিকড় অম্বেডকরের জন্মের অনেক আগে। জ্যোতিবা ফুলে মহারাষ্ট্রে দলিতদের জন্য যে প্রবল জনআলোড়ন তৈরি করেছিলেন তারই ফলস্বরূপ অম্বেডকর স্বয়ং পিছিয়ে পড়া জাতির জন্য নির্ধারিত স্কলারশিপ নিয়ে বিদেশে পড়তে গিয়েছিলেন। তাই দলিতদের ক্ষমতায়ন ও সামাজিক ন্যায়প্রতিষ্ঠার ইতিহাস অনেক পুরনো।
জ্যোতিবা ফুলের সত্যশোধক সমাজের ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠা আন্দোলনের ১৪০ বছর পরেও যখন জিগ্নেশ মেবাণীদের একই কারণে আন্দোলনে নামতে হয়, বোঝা যায়, সংরক্ষণের মাধ্যমে দলিতদের ক্ষমতায়নের পদ্ধতিটি ভারতের রাজনীতিতে চিরকাল সোনার পাথরবাটি হয়েই রয়েছে। শুধু নরেন্দ্র মোদীকে দোষ দিয়ে লাভ নেই।
সোমনাথ গোস্বামী বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ
‘‘অম্বেডকর, গেরুয়া না নীল’’ (১৮-৪) নিবন্ধের প্রেক্ষিতে এই লেখা। পাঁচ বৎসরের শিশু ভীমরাও সকপাল যখন মহউ ছেড়ে সাতারা স্কুলে ভর্তি হলেন, তখন স্কুলের খাতায় তাঁর উপাধি লেখা হল আম্বাদাকার, তাঁদের আদি নিবাস মহারাষ্ট্রের রত্নগিরি জেলার আম্বাদ্বের নাম অনুসারে। সাতারা স্কুলের শিক্ষক কৃষ্ণ কেশব অম্বেডকর, যিনি জাতে দেবরুখে ব্রাহ্মণ, তাঁর উপাধিটি ভীমরাওকে ব্যবহার করতে দেন। তার পর থেকে তিনি হলেন ভীমরাও অম্বেডকর। ব্রাহ্মণ্যতন্ত্র উৎপাটনের প্রতীক রূপে যে উপাধিটি আসমুদ্রহিমাচল ব্যাপ্ত,
সেটি এক ব্রাহ্মণের।
ব্রিটিশ শাসন বিরোধী আন্দোলন যাতে দুর্বল না-হয়, তাই অম্বেডকর গাঁধীজির সঙ্গে বার বার পুণে চুক্তি করেছেন এমন কথা ইতিহাস কিন্তু বলে না। বরং ১৯১৯ সালের গভর্নমেন্ট অব ইন্ডিয়া আইন তৈরির সময় অম্বেডকর ডিপ্রেস্ড ক্লাসের জন্য পৃথক নির্বাচকমণ্ডলী গঠনের দাবি জানিয়ে ছিলেন এবং তিনটি গোল টেবিলে বৈঠকে উপস্থিত থেকে তার দাবি আদায়ে সচেষ্ট ছিলেন। পুণের ইয়ারবাড়া জেলে আমরণ অনশনে বসা গাঁধীজির শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হওয়ায়, প্রবল জনমতের চাপে তিনি পুণে চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন।
ভারতের দলিত আন্দোলনের শিকড় অম্বেডকরের জন্মের অনেক আগে। জ্যোতিবা ফুলে মহারাষ্ট্রে দলিতদের জন্য যে প্রবল জনআলোড়ন তৈরি করেছিলেন তারই ফলস্বরূপ অম্বেডকর স্বয়ং পিছিয়ে পড়া জাতির জন্য নির্ধারিত স্কলারশিপ নিয়ে বিদেশে পড়তে গিয়েছিলেন। তাই দলিতদের ক্ষমতায়ন ও সামাজিক ন্যায়প্রতিষ্ঠার ইতিহাস অনেক পুরনো।
জ্যোতিবা ফুলের সত্যশোধক সমাজের ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠা আন্দোলনের ১৪০ বছর পরেও যখন জিগ্নেশ মেবাণীদের একই কারণে আন্দোলনে নামতে হয়, বোঝা যায়, সংরক্ষণের মাধ্যমে দলিতদের ক্ষমতায়নের পদ্ধতিটি ভারতের রাজনীতিতে চিরকাল সোনার পাথরবাটি হয়েই রয়েছে। শুধু নরেন্দ্র মোদীকে দোষ দিয়ে লাভ নেই।
সোমনাথ গোস্বামী বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ
ব্যতিক্রম
পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে যখন ব্যাপক অশান্তি, তখন সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র ধরা পড়ল পুরুলিয়া জেলার হুড়া থানার অন্তর্গত কুদলুং গ্রামে। এখানে একটি বাড়িতে কংগ্রেস, বিজেপি ও তৃণমূলের দেওয়াল লিখন এক সারিতে সুন্দর ভাবে সহাবস্থান করছে। সেই সঙ্গে এও মনে রাখতে হবে, প্রাক্তন সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হলে, পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি শান্তিরাম মাহাত, বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু হাসপাতালে ছুটে যান অসুস্থ নেতাকে দেখতে।
প্রশান্ত মাহাত পুরুলিয়া
পাসপোর্ট, ভিসা
‘‘ভোটার কার্ড-সহ গ্রেফতার’’ (১৩-৪) শীর্ষক খবরে জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশের এক জন নাগরিক তাঁর বাংলাদেশি পাসপোর্ট এবং ভারতীয় পত্নী-সহ ঢাকা থেকে কলকাতায় আসার বিমানবন্দরে গ্রেফতার হয়েছেন, কারণ তাঁর কাছে তাঁরই নামে একটি ভারতীয় ভোটার কার্ড পাওয়া গিয়েছে। এ পর্যন্ত ঠিকই আছে, যে হেতু এক বিদেশি নাগরিকের কাছে ভারতীয় ভোটার কার্ড থাকা অবশ্যই বেআইনি। কিন্তু সংবাদে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে স্বামী ও স্ত্রী দু’জনের কাছে আলাদা দুই দেশের পাসপোর্ট দেখে অভিবাসন দফতরের সন্দেহ হওয়ায় তাঁদের তল্লাশি করা হয় এবং তখন ওই ভারতীয় ভোটার কার্ড পাওয়া যায়। প্রশ্ন হল, স্বামী ও স্ত্রী আলাদা দুই দেশের পাসপোর্টের মালিক হওয়া সন্দেহের কারণ হবে কেন?
আমার স্ত্রী বাংলাদেশের নাগরিক এবং বাংলাদেশি পাসপোর্টের মালিক। আমি ভারতের নাগরিক এবং আমার পাসপোর্ট ভারতীয়। নিজের নিজের পাসপোর্ট নিয়ে আমরা দু’জন ঢাকা-কলকাতা তো বটেই, ইউরোপ-আমেরিকাতেও নিয়মিত ভ্রমণ করে থাকি। কোনও দেশের বিমানবন্দরে বা সমুদ্রবন্দরেও ইমিগ্রেশন অফিসাররা কোনও দিনই আমাদের আলাদা পাসপোর্টের ব্যাপারে বিন্দুমাত্র সন্দেহপ্রকাশ করেননি।
এ ছাড়াও লেখা হয়েছে, বাংলাদেশি নাগরিকদের দীর্ঘমেয়াদি ভারতীয় ভিসা কিংবা ভারতীয় নাগরিকদের দীর্ঘমেয়াদি বাংলাদেশি ভিসা দেওয়া হয় না। এটাও ঠিক নয়, কারণ এক জন ভারতীয় নাগরিকের পত্নী হওয়ার সুবাদে আমার স্ত্রী দীর্ঘমেয়াদি ভারতীয় ভিসা নিয়ে কলকাতায় থাকেন বা ভারতের অন্যান্য জায়গায় অবাধে যাতায়াত করতে পারেন। তাঁর পাসপোর্টে ভারতীয় ভিসার উপরে স্পষ্ট ভাবে ছাপা আছে: ‘দ্য হোল্ডার্স স্পাউস ইজ অ্যান ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল’। এই ভিসাকে বলে ‘এক্স-টাইপ ভিসা’। আবার বাংলাদেশের এক নাগরিকের স্পাউস হওয়ার সুবাদে আমার পাসপোর্টে বাংলাদেশি ভিসার উপরে ছাপা আছে: এনভিআর, অর্থাৎ ‘নো ভিসা রিকোয়ার্ড’। বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ আমার মতো এক জন অ-বাংলাদেশিকে বরং বাড়তি সুবিধা দিচ্ছেন, কারণ এনভিআর ছাপ থাকার ফলে বাংলাদেশে যাওয়ার সময় কখনওই আমার ভিসা করতে হবে না, যেখানে আমার স্ত্রীর ভারতীয় ভিসা দীর্ঘমেয়াদি হলেও অনির্দিষ্ট কালের জন্য নয়, মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তার নবীকরণের প্রয়োজন হয়।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের নাগরিকদের ভারতীয় ভিসা প্রদান করার নিয়মকানুন সম্প্রতি কিছুটা শিথিল করার ফলে সে দেশের ৬৫ বছরের বেশি বয়সি ব্যক্তিরা এখন ভারতীয় ভিসার জন্য আবেদন করলে তাঁদের অধিকাংশকেই পাঁচ বছর মেয়াদি ভিসা মঞ্জুর করা হচ্ছে।
সাগর চৌধুরী কলকাতা-৬৮
তৃণমূল?
কৃষ্ণা বসুর ‘‘তবু আস্থা রাখি গণতন্ত্রে’’ (২৯-৩) পড়ে একটু ধাক্কা খেতে হল। এক জায়গায় উনি লিখেছেন, ‘‘অধিকাংশের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা যদি মনে করেন, তাঁদের মত দেশের সকল মানুষের ওপর চাপিয়ে দেবেন, তখন তাকে বলা হয় সংখ্যাগরিষ্ঠতাবাদ, যা কিনা গণতন্ত্রের সম্পূর্ণ বিরোধী।’’
এই পর্যন্ত ঠিকই ছিল, কিন্তু তার পরই উনি যা লিখেছেন, তা ওঁর কাছে প্রত্যাশিত ছিল না। ‘‘যখনই কোনও দল বিপুল জনমত নিয়ে ক্ষমতায় আসে, তাদের মধ্যে এই প্রবৃত্তি চোখে পড়ে। পশ্চিমবঙ্গে সিপিএম যুগে এই মনোভাব ছিল। সম্প্রতি এর উদাহরণ আমরা দেখছি শাসকদল বিজেপির কার্যকলাপে।’’ এই একই প্রবৃত্তি তো পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান শাসকদলের মধ্যেও বিশেষ ভাবে বর্তমান— সেটা ওঁর চোখে পড়ল না কেন? এই ‘সিলেকটিভ মায়োপিয়া’র কারণ কী?
অমিত ঘোষ কলকাতা-১০৭
মদের নেশা
শুধুমাত্র মদের দোকান যাতে বন্ধ না-হয় তার জন্য রাজ্য সরকার অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য সড়কের মর্যাদা খর্ব করে সেগুলিকে পুরসভা কিংবা পঞ্চায়েত পরিচালিত রাস্তায় পরিণত করেছে। কিন্তু তা বলে রাস্তায় যানচলাচল তো কমেনি। ফলে এক দিকে যেমন ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ অভিযান পুরোদমে চলছে, অন্য দিকে মদ্যপ চালকদের অনিয়ন্ত্রিত ড্রাইভিংয়ের বলি হচ্ছে বহু পথচারী মানুষ। এখন শহরে, গ্রামে যত্রতত্র মদের প্রাচুর্য। পানের দোকান, চায়ের দোকান, মিষ্টির দোকান, হোটেল— সর্বত্রই মদ পাওয়া যাচ্ছে। ফলে মানুষের মদে আসক্তি বাড়ছে, সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পথ দুর্ঘটনা। এমনকী একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্ররা মদ খেয়ে স্কুল যাচ্ছে এমন নজিরও মিলছে! পঞ্জাবের তরুণ সম্প্রদায় যেমন মাদকাসক্ত হয়ে উঠেছে, তেমনই পশ্চিমবঙ্গের যুব সম্প্রদায় মদে আসক্ত হয়ে উঠছে।
কৌশিক সরকার রঘুনাথপুর, পুরুলিয়া
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ই-মেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়