কবে থেকে মুকুল রায়ের বিবেক জাগ্রত হচ্ছিল? —ফাইল চিত্র।
মুকুল রায়ের বোধোদয় হল। বিলম্বিত, অতি বিলম্বিত সেই বোধোদয়। তবু হল তো। কিন্তু সেই উদয়েও এত রাখঢাক কেন? স্টিভ স্মিথ বা ডেভিড ওয়ার্নারদের অশ্রুসজল স্বীকারোক্তি বিশ্বের একটা অংশের মানুষের মনে সমবেদনা উদ্রেকে সাহায্য করেছে। মুকুল রায়ও স্বীকার করলেন, তিনি পাপ করেছিলেন। নদিয়া জেলা পরিষদ পাঁচ বছর আগে বামেদের হাত থেকে ছিনিয়ে নিতে যে পন্থা তাঁর নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস নিয়েছিল, সেটা ছিল পাপাচার, কবুল করেছেন মুকুল রায়। প্রায়শ্চিত্তের জন্য প্রস্তুত এই নেতা সমবেদনা উদ্রেক করতে সমর্থ হলেন না কেন?
কারণ, এই অধুনা স্বীকারোক্তি এবং প্রায়শ্চিত্ত-আকাঙ্খাও বস্তুত রাজনৈতিক কৌশল, এমন ধারণাকেই জাগিয়ে তুলল। কবে থেকে মুকুল রায়ের বিবেক জাগ্রত হচ্ছিল? কবে থেকে মনে হচ্ছিল, জনসমক্ষে এই স্বীকারোক্তি করা দরকার, অন্যথায় বিনিদ্র রজনী কাটে তাঁর? নাকি নামাবলি পাল্টে নতুন দলে এসে আর একটা পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে আসলে রাজনৈতিক চাপানউতোরেরই নামান্তর এই প্রায়শ্চিত্ত-ইচ্ছা? না হলে, কী সেই পন্থা, পাপই বা কী করেছিলেন তাঁরা, এই প্রশ্নের উত্তরে মুকুল বলেন কেন, তৃণমূল নেতাদের জিজ্ঞাসা করা হোক এই প্রশ্ন। তৎকালীন সেনানায়কের কাছে উত্তর চাইবে না রাজ্য, মুকুলবাবু?
এই অস্বচ্ছতাই এই স্বীকারোক্তিগুলোকে মহৎ হতে দেয় না। অথবা হয়তো বা, মহতী কোনও ইচ্ছার বদলে সূক্ষ্মতর রাজনৈতিক কৌশলই মূল চালিকাশক্তি হিসাবে থাকে। এবং সেই জন্যই অস্বচ্ছ হয়ে পড়ে রাজনৈতিক অঙ্গনের এই সব আচার।
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
আর পড়ুন
পাপ করেছিলাম ক্ষমা চাইছি, বললেন মুকুল
রাজনৈতিক প্রাঙ্গণে দাপাদাপি করে বেড়ানো শ্রী এবং শ্রীমতীরা একটু ভেবে দেখবেন?