Newsletter

ভারতের এই জয় অসামান্য, স্বীকার করতেই হবে

সাম্প্রতিক কয়েকটা বছরে ভারতের বিদেশ নীতি বার বার প্রশ্নের মুখে পড়েছে। নতুন জমানায় ভারতীয় কূটনীতি হঠাৎ যে বাঁকটা নিয়েছে, তাতে আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের অবস্থান আদৌ মজবুত হল কি না, সে নিয়ে বিস্তর সংশয় তৈরি হয়েছে।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৭ ০৩:০৩
Share:

—ফাইল চিত্র।

সাম্প্রতিক কয়েকটা বছরে ভারতের বিদেশ নীতি বার বার প্রশ্নের মুখে পড়েছে। নতুন জমানায় ভারতীয় কূটনীতি হঠাৎ যে বাঁকটা নিয়েছে, তাতে আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের অবস্থান আদৌ মজবুত হল কি না, সে নিয়ে বিস্তর সংশয় তৈরি হয়েছে। এনএসজি-র সদস্যপদ পাওয়ার চেষ্টা বার বার আটকে গিয়েছে। কুখ্যাত জঙ্গির উপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আদায়ের চেষ্টা প্রত্যেক বার বাধা পেয়েছে। ব্রিকস-এর মঞ্চকে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে ব্যবহার করার চেষ্টা ধাক্কা খেয়েছে। চিনের সঙ্গে সম্পর্কে টানাপড়েন অনেকটা বেড়েছে। ওবিওআর শিখর সম্মেলন থেকে দূরে সরে থাকার সিদ্ধান্ত কতটা সময়োপযোগী হল, সব শেষে তা নিয়েও কাটাছেঁড়া শুরু হয়েছে। এমনই এক পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক আদালতে ভারত যে সাফল্য পেল, তা যে অসামান্য, সে কথা অস্বীকার করার উপায় নেই।

Advertisement

ভারতীয় নাগরিক তথা ভারতীয় নৌসেনার প্রাক্তন কর্মী কুলভূষণ যাদবকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার যে আদেশ পাকিস্তানের সেনা আদালত দিয়েছে, তার উপর স্থগিতাদেশ আদায় করে আনলেন ভারতের প্রতিনিধিরা। শুধু ভারত সরকারের জন্য নয়, সমগ্র জাতির জন্যই স্বস্তি বয়ে আনল আন্তর্জাতিক আদালতের এই রায়। পাকিস্তানের হাতে বন্দি ভারতীয় নাগরিকের প্রাণদণ্ড আপাতত স্থগিত করা গিয়েছে। পাকিস্তান যে যাবতীয় আন্তর্জাতিক রীতি-নীতি লঙ্ঘন করে বিচার প্রক্রিয়া চালিয়েছে, তাও বিশ্ব-মঞ্চে প্রমাণিত হয়েছে।

পাকিস্তান অবশ্য একবগ্গা অবস্থান নিতে চায় এখন। কুলভূষণ যাদবের মামলা পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত এবং এই মামলায় হস্তক্ষেপের অধিকার আন্তর্জাতিক আদালতের নেই— পরাজয়ের পর এমনই প্রতিক্রিয়া ইসলামাবাদের। যে আদালতের এক্তিয়ারই নেই এই মামলায় হস্তক্ষেপের, সেই আদালতে হাজির হলেন কেন পাক প্রতিনিধিরা, কেন অংশ নিলেন সওয়াল-জবাবে? প্রশ্ন শুধু ভারতের বা আন্তর্জাতিক মহলের নয়, এ প্রশ্ন এখন জোরদার পাকিস্তানের অন্দরেও।

Advertisement

কুলভূষণ যাদব এখনও সম্পূর্ণ বিপন্মুক্ত নন অবশ্য। কুলভূষণ দোষী নাকি নির্দোষ, আন্তর্জাতিক আদালতে তার বিচার হওয়া এখনও বাকি, কুলভূষণকে মুক্ত করাও বাকি। কিন্তু আন্তর্জাতিক আদালতের এই রায় অবশ্যই আশার উজ্জ্বল কিরণ হয়ে দেখা দিয়েছে। এই কিরণ মুক্তির আলো ছড়িয়ে দিক পাকিস্তানের কারাগারে, সসম্মানে, অক্ষত ভাবে দেশে ফিরে আসুন কুলভূষণ যাদব— সমগ্র জাতি এখন তেমনই এক সকালের প্রতীক্ষায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন