State News

ওঁদের কর্তব্যনিষ্ঠা ছাড়া এতটা মসৃণ হত না উৎসব

অনেক ক্ষেত্রেই অত্যন্ত সঙ্গত কারণে সমালোচনার মুখে পড়তে হয় পুলিশকে। কিন্তু কর্তব্যে গাফিলতি বা অকর্মণ্যতার জন্য যদি সমালোচিত বা নিন্দিত হতে হয়, তা হলে ভাল কাজ বা কর্তব্যনিষ্ঠার জন্য প্রশংসাও অবশ্যই প্রাপ্য।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:২৬
Share:

কারও প্রিয় তাঁরা নাকি হতে পারেন না। তাঁদের কাজটা সকলের কাছেই নাকি অপ্রিয় ঠেকে। কথিত বা চর্চিত এমনই। কথন বা চর্চাটা অবাস্তবও নয় মোটেই। পুলিশকে বছরভরই নানা রকমের কটাক্ষ বা গঞ্জনা সহ্য করতে হয়। সম্পূর্ণ অকারণেই যে সে সব সহ্য করতে হয়, তা সম্ভবত নয়। অনেক ক্ষেত্রেই অত্যন্ত সঙ্গত কারণে সমালোচনার মুখে পড়তে হয় পুলিশকে। কিন্তু কর্তব্যে গাফিলতি বা অকর্মণ্যতার জন্য যদি সমালোচিত বা নিন্দিত হতে হয়, তা হলে ভাল কাজ বা কর্তব্যনিষ্ঠার জন্য প্রশংসাও অবশ্যই প্রাপ্য। উৎসবের মহানগর তথা উৎসবের বাংলাকে এ পর্যন্ত যতখানি মসৃণ রেখেছে পুলিশ, তাতে বাহিনীর প্রশংসা করতেই হচ্ছে।

Advertisement

অনেকগুলো কারণে প্রশংসা প্রাপ্য কলকাতা পুলিশ এবং রাজ্য পুলিশের। প্রথমত, গোটা রাজ্যে যখন উৎসবের মাতন, তখন যাবতীয় ব্যক্তিগত ইচ্ছা-অনিচ্ছা দূরে সরিয়ে রেখে আরও বেশি সতর্কতার সঙ্গে কর্তব্য পালন করতে কম নিষ্ঠার প্রয়োজন হয় না। সে নিষ্ঠা পুলিশের রয়েছে, দেখিয়ে দিচ্ছে বাহিনী। দ্বিতীয়ত, যে মহানগরের ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণে রাখতে বছরভর নাজেহাল হতে হয় পুলিশকে, সেই মহানগরের পথঘাট-অলিগলি উৎসবের শুরু থেকে এ পর্যন্ত নির্বিঘ্নই। উৎসবের মধ্যযামে গতি হয়তো স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা কমেছে কলকাতার রাজপথে। কিন্তু মোটের উপর ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ বেশ ভাল। তৃতীয়ত, এখনও পর্যন্ত অপ্রীতিকর কিছু ঘটতে দেয়নি পুলিশ। উৎসবের মরসুমে অতি-উৎসাহ জনিত কার্যকলাপই মূলত অপ্রীতিকর বা অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির জন্ম দেয়। শুধু কলকাতা নয়, গোটা বাংলার জন্যই এ কথা প্রযোজ্য। পুলিশের সতর্ক নজরদারি, তৎপরতা এবং সময়োচিত হস্তক্ষেপ সে সব পরিস্থিতিকে দূরে সরিয়ে উৎসবকে মসৃণই রেখেছে। কলকাতাকে তো বটেই, এ বারের দুর্গোৎসবে গোটা বাংলাকে এখনও পর্যন্ত যে ভাবে সামলে-আগলে রেখেছে পুলিশ, যে অসামান্য কুশলতায় নিয়ন্ত্রণে রেখেছে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, মসৃণ রেখেছে উৎসবের সব সরণি, তাতে পুলিশের প্রশংসা করতেই হচ্ছে।

আজ মহানবমী। শাস্ত্রীয় তথা পৌরাণিক মতে মহিষাসুরের উপর দেবীর বিজয় সম্পন্ন ইতিমধ্যেই। অর্থাৎ অশুভের বিরুদ্ধে শুভ শক্তির চূড়ান্ত বিজয় ঘটে গিয়েছে। পুলিশও কিন্তু নিজের কাঁধে থাকা দায়ভার বহনে এ বারের মতো উতরে গিয়েছে প্রায়। রাত পোহালেই বিজয়া দশমী। উৎসব তার অন্তিম প্রহরে পৌঁছে যাবে। মহালয়ার পর থেকে শুরু হওয়া প্রায় দিন দশেকের জনজোয়ার স্তিমিত হয়ে আসবে। উৎসব এ যাবৎ মসৃণ রাখার জন্য পুলিশকে ধন্যবাদ। আর অন্তিম প্রহরগুলোর জন্য শুভেচ্ছা।

Advertisement

বাকিটাও নির্বিঘ্নে, নিরাপদে এবং সানন্দে কাটুক। মনে রাখতে হবে— শেষটা ভাল হলেই কিন্তু সব ভাল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন